৩ অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু, দুই দিনে ৮৫০ জনের ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি

প্রতীকী
প্রতীকী

ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চল থেকে অবৈধভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ চেষ্টার সময় তিন অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।

গত ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যকার এই সময়ে আরও ৮৫০ জন অভিবাসন প্রত্যাশী যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে বলে জানা যায়।

ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পার হওয়ার সময় ওই তিনজনের মৃত্যু হয় বলে রোববার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে।

ফরাসি জরুরি উদ্ধারকারী দল তাদের পানি থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলো।

পাদঁ ক্যালের প্রিফেক্ট জ্যাঁ বিলঁ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নৌকায় ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী থাকায় এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

আরও প্রায় ৫০ জনকে সৈকত ও পানি থেকে পাদঁ ক্যালের সঙ্গ্যাট শহরের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। আর জরুরি উদ্ধারকারী দল ৪৫ জনকে উদ্ধার করে; যাদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে।

দুইদিনে ৮৫০ অভিবাসী

২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর ফ্রান্স থেকে ৮৫০ জনেরও বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী যুক্তরাজ্যে ঢুকেছে। এর মধ্যে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের দিন ১১টি নৌকায় করে ৪৫১ জন এবং পরদিন ১০টি নৌকায় ৪০৭ জন এসে পৌঁছায়। বড়দিন এবং বক্সিং ডের ছুটির দুইদিনে মোট ৮৫৮ জন অভিবাসন প্রত্যাশী ইংলিশ চ্যানেল পার হয়েছে।

এরআগে ১৪ ডিসেম্বর তিনটি নৌকায় করে ১৬০ জন আসা একসঙ্গে আসা সর্বাধিক সংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশী ছিল।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে এ বছর নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে ৩৫ হাজার ৯শ’ লোক এসেছে। যা ২০২৩ সালের চেয়ে ২২ শতাংশ বেশি।

তাদের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এক মুখপাত্র বলেন, “মানুষের জীবন বিপন্ন এবং আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করা এই বিপজ্জনক পারাপার আমরা বন্ধ করতে চাই “

 “এ মানবপাচারকারী গ্যাংগুলোর টাকা পেলেই হয়; মানুষের জীবন-মরণ নিয়ে পরোয়া করে না। তাদের এই ব্যবসায়িক মডেলগুলো ভাঙতে এবং বিচারের মুখোমুখি করতে যা কছিু করতে হয় করব।”

বিপজ্জনক পথ

ইংলিশ চ্যানেল এক পাড়ে যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চল অন্য পাড়ে ফান্সের উত্তরাঞ্চল। দুই দেশকে আলাদা করা এই চ্যানেলটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত শিপিং রুটগুলির একটি। যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও রুটটি বিপজ্জনকও বটে।

শীতকালে ডিঙি এবং ছোট নৌকায় পারাপার করা বিশেষভাবে বিপজ্জনক। কেননা  অতিরিক্ত বোঝাই এই নৌকাগুলি চ্যানেলের প্রবল স্রোত মোকবেলা করতে সক্ষম নয়।

তারউপর পাচারকারিরা ফরাসি পুলিশের টহল থেকে বাঁচতে চ্যানেলের আরও গভীর থেকে যাত্রা শুরুর দিকে ঝুঁকছে।

নৌকায় করে এই চ্যানেল পার হতে গিয়ে এবছর ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এযাবৎ সর্বোচ্চ।

বিস্তৃত পাচার পথ

সম্প্রতি বিবিসির এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে, যুক্তরাজ্যে মানব পাচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্টে হয়ে উঠেছে জার্মানি।

এতে দেখা গেছে পাচারকারিদের এই নৌপথ সুবিশাল। যা তুরস্ক থেকে শুরু হয়ে ইউরোপের পূর্বাঞ্চল থেকে জার্মানি পর্যন্ত বিস্তৃত।

ফ্রান্সের ক্যালে থেকে প্রায় ৪শ কিলোমিটার দূরে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের শহর এসেন থেকেও ইংলিশ চ্যানেল পার হওয়ার জন্য নৌকায় যাত্রা করে অভিবাসন প্রত্যাশীরা।

আরও পড়ুন