যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন ৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল, তিন জিম্মিকে ফেরত দিয়েছে হামাস। চুক্তির শর্ত মেনে রোববার এই বন্দি বিনিময় হয়েছে। মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিরা সবাই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের কারাগার থেকে যারা মুক্তি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন খালিদা জাররার। তিনি রাজনীতিবিদ ও অধিকৃত পশ্চিম তীরের পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) নেতা।
খালিদা জাররার একসময় ফিলিস্তিনি পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। ইসরায়েলে তাকে নির্জন কারাকক্ষে রাখা হয়েছিল। মুক্তির পর খালিদার শীর্ণ চেহারা দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই।
আল-জাজিরার সংবাদদাতা নিদা ইব্রাহিম জানান, মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। এসব শিশুর কয়েকজনকে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর পাথর ছোড়ার অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
নিদা ইব্রাহিম বলেন, বন্দিদের তালিকায় এমন শত শত নাম আছে, যাদের মূলত প্রশাসনিকভাবে আটক রাখা হয়েছিল। এটা ইসরায়েলের এমন একটি কৌশল, যা ব্যবহার করে দেশটি সাধারণ মানুষকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাগারে আটকে রাখে।
ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের সংগঠন প্যালেস্টাইন প্রিজনার্স সোসাইটি এবং কারাবন্দি ও সাবেক কারাবন্দিদের জন্য গঠন করা কমিশন জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া ১০ হাজারের বেশি মানুষ এখনো ইসরায়েলের কারাগারগুলোয় বন্দি আছেন।
এবার যুদ্ধের মধ্যে গাজা উপত্যকা থেকে ঠিক কতজনকে ইসরায়েলি বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে, সেই সংখ্যা কেউ জানে না।
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর গাজা থেকে ইসরায়েলে ফিরতে শুরু করেছেন হামাসের কাছে থাকা জিম্মি ব্যক্তিরা। প্রথম দফায় তিনজন জিম্মি পরিবারের কাছে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাসের কাছে থাকা তিন জিম্মি নারী ইসরায়েলে ফিরেছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের একটি গাড়িতে করে ইসরায়েলে ফিরেছেন তিন জিম্মি। সীমান্তে তাদের স্বাগত জানান ইসরায়েলের সেনাসদস্যরা। সেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনজনকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায়। এরপর একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস। হামলার সময় সেখান থেকে আড়াই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে তারা গাজায় নিয়ে যায়। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় পর্যায়ক্রমে তাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।