ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ফের জঙ্গি হামলা হওয়ার খবর এসেছে ভারতীয় গণমাধ্যমে। উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারার কান্দি খাস এলাকায় এক ব্যক্তিকে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে গুরুতর জখম করার কথা বলা হয়েছে সেসব খবরে।
আহত ব্যক্তির নাম রসুল মাগরে (৪৩)। বর্তমানে হান্দওয়ারার জিএমসি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার রাতে রসুল মাগরের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। খুব কাছ থেকে গুলি করা হলে তার তলপেটে ও বাম হাতে গুলি লাগে। খবর পেয়ে পুরো এলাকা ঘিরে রেখে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
অবশ্য ঠিক কী কারণে রসুল মাগরের উপর হামলা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে পেহেলগাম পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার তদন্তভার ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) হাতে নিয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই রোববার সকালে জানিয়েছে।
অন্য দিকে, পেহেলগাম নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতির আবহে প্রায় প্রতি দিনই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে কাশ্মীরের ভারত-পাক সীমান্তে। এই নিয়ে পর পর তিন রাত সেখানে অশান্তির পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ভারতের অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে রাত হলেই অনবরত গুলি চালাচ্ছে পাক সেনারা। পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে ভারতও। শনিবার রাতেও সেই ছবি দেখা গেছে।
রোববার ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ২৬ এবং ২৭ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে সীমান্তের ও পার থেকে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তান গুলিবর্ষণ করেছে। লক্ষ্য ছিল ভারতীয় সেনাঘাঁটি। তবে পাল্টা জবাব গেছে এ পার থেকেও। ভারতীয় শিবিরে হতাহতের কোনও খবর নেই।
ওই বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘২৬-২৭ তারিখের রাতে নিয়ন্ত্রণরেখায় বিনা প্ররোচনায় পাকিস্তানি ঘাঁটিগুলি থেকে ছোট অস্ত্রের মাধ্যমে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। টুটমারি গলি এবং রামপুর সেক্টর এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। আমাদের বাহিনী একইভাবে ছোট অস্ত্রের মাধ্যমে গুলি চালিয়ে জবাব দিয়েছে।’’

শনিবার গভীর রাতে থেকে কাশ্মীরের ছয়টি স্থানে অভিযান চালাচ্ছে সেনা। অনন্তনাগ, পুলওয়ামা, সোপিয়ান, কুলগাওয়ের বিভিন্ন এলাকায় একযোগে চলছে অভিযান। ওই অভিযান চলাকালীনই কুপওয়ারাতে ফারুক আহমেদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয় সেনা। যদিও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
এই নিয়ে গত ৫ দিনে অন্তত ৯ জন জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী।
জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করে নয়া দিল্লি। স্থগিত করে দেওয়া হয় সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি।
এর পর পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসাবে বন্ধ করে দেয় বাণিজ্য। সিমলা চুক্তি স্থগিত করার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদ।