পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়েছে ভারত। এই নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। এটি এখন সোশাল মিডিয়ার সবচেয়ে আলোচিত নাম। এই নামটি শুধু একটি সামরিক অভিযানের নাম নয়, বরং ভারতের সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক আবেগকে ঘিরে এক গভীর বার্তা দিয়েছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের স্বস্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। সবাই ক্লাস ৪১-এর অধীনে একচেটিয়া অধিকার চেয়েছেন, যা বিনোদন, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক এবং মিডিয়া পরিষেবাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ শিগগিরই একটি চলচ্চিত্রের শিরোনাম, ওয়েব সিরিজ বা ডকুমেন্টারি ব্র্যান্ডে পরিণত হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ৭ মে ভারতীয় সময় সকাল ১০:৪২ থেকে সন্ধ্যা ৬:২৭-এর মধ্যে জমা দেওয়া চারটি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এরমধ্যে রিলায়েন্স, মুম্বইয়ের বাসিন্দা মুকেশ চেতরাম আগরওয়াল, অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা গ্রুপ ক্যাপ্টেন কমল সিং ওবের এবং দিল্লি-ভিত্তিক আইনজীবী অলোক কোঠারি মাধ্যমে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি আবেদনপত্রে ‘ব্যবহারের প্রস্তাব’ শব্দটি চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অপারেশনকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্যেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের সামরিক বাহিনীর এক অভিযান যা পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিকে ধ্বংস করেছে। এটি বর্তমানে ভারতের পাশাপাশি বিশ্বের মনোযোগ কেড়েছে। এর শক্তিশালী আবেগময়ী এবং দেশাত্মবোধকে চলচ্চিত্র, মিডিয়া এবং জনসাধারণের আলোচনায় ব্যবহারের জন্য একটি জনপ্রিয় শব্দ হিসাবে উঠে এসেছে। এখন এটি একটি স্বত্ব হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
চারজন আবেদনকারীই নাইস শ্রেণীবিভাগের ৪১ নম্বর শ্রেণীর অধীনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে:
- শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পরিষেবা
- চলচ্চিত্র ও মিডিয়া প্রযোজনা
- লাইভ পারফর্মেন্স এবং ইভেন্ট
- ডিজিটাল কন্টেন্ট ডেলিভারি এবং প্রকাশনা
- সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রম
এই বিভাগটি- ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, প্রোডাকশন হাউস, ব্রডকাস্টার এবং ইভেন্ট কোম্পানিগুলো ব্যবহার করে। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শিগগিরই একটি চলচ্চিত্রের শিরোনাম, ওয়েব সিরিজ বা ডকুমেন্টারি ব্র্যান্ডে পরিণত হতে পারে।
প্রতিটি ফাইলিং ‘ব্যবহারের প্রস্তাবিত’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে যার অর্থ আবেদনকারীরা এখনও বাণিজ্যিকভাবে ব্র্যান্ডটি চালু করেননি তবে অদূর ভবিষ্যতে করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
ভারতে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো সামরিক অভিযানের নামগুলো সরকারের সম্পত্তি হিসাবে সুরক্ষিত নয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সাধারণত এই নামগুগুলো নিবন্ধন বা বাণিজ্যিকীকরণ করে না এবং এগুলো কোনও বিশেষ বিধিবদ্ধ আইপি কাঠামোর অধীনে সুরক্ষিত থাকে না। ফলে, সরকার স্পষ্টভাবে হস্তক্ষেপ না করলে, এই জাতীয় নামগুলো ব্যক্তিগত ব্যক্তি বা স্বত্বর দাবির জন্য খোলা থাকে।
তবে ট্রেড মার্কস আইন ১৯৯৯ অনুসারে এই রেজিস্ট্রিকে বিভ্রান্তিকর, আপত্তিকর বা জননীতির পরিপন্থী স্বত্ব প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ধারা ৯(২) এবং ধারা ১১ এর অধীনে যদি কোনও স্বত্ত্ব জাতীয় প্রতিরক্ষার সঙ্গে মিথ্যা সম্পর্ক নির্দেশ করে বা জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে তবে তা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। তা সত্ত্বেও সরকার বা অন্যান্য আগ্রহী পক্ষের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ না করা পর্যন্ত বর্তমানে এই ধরনের শর্তাবলীর বিরুদ্ধে কোনও স্বয়ংক্রিয় বাধা নেই।
ভারতীয় স্বত্ব আইন প্রথম ফাইলকারীর অধিকার নিশ্চিত করে না। যদিও ফাইলিংয়ের তারিখ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলোও বিবেচনা করা হয় যার মধ্যে রয়েছে:
- চিহ্নটি ব্যবহারের প্রকৃত উদ্দেশ্য
- বিদ্যমান বা প্রতিযোগী চিহ্নগুলোর সাথে বিভ্রান্তির সম্ভাবনা
- চিহ্নের শক্তি এবং স্বতন্ত্রতা
- বিরোধিতার সময় উপস্থাপিত প্রমাণ
ভারতে স্বত্ব করার জন্য আদর্শ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে:
- ফি এবং শ্রেণীবিভাগের মাধ্যমে আবেদনপত্র দাখিল করা
- স্বত্ব রেজিস্ট্রি পরীক্ষা
- স্বত্ব জার্নালে ৪ মাসের জন্য প্রকাশনা
- তৃতীয় পক্ষের বিরোধিতা
- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা বিরোধিতা।
২২শে এপ্রিল, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে এক ভয়াবহ হামলায় নিহত হন ২৬ জন পুরুষ—তাদের অনেকেই ছিলেন সদ্য বিবাহিত। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে, ৬ মে মধ্যরাতে ভারত চালায় এক সামরিক অভিযান—যার নাম, “অপারেশন সিন্দুর”।