ভারতের ‘ওয়াকফ’ বিল নিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
এই আইন ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর ক্রমাগত বৈষম্য ও নিপীড়নের আরেকটি অধ্যায় রচনা করবে বলে মনে করেন তিনি।
রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করেছিলেন সময়ের আলোচিত প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। যদিও এই অভিযোগ খন্ডন করেছেন আসিফ নজরুল। প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, “আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকবে। আমরা একজন আরেকজনের কাজের সমালোচনা করব। কিন্তু মিথ্যা কথা কেন বলব?”
ভারতের ‘ওয়াকফ’ বিল নিয়ে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে, তখনই ফেসবুকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ নজরুল। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের অন্য উপদেষ্টারা ‘ওয়াকফ’ ইস্যুতে কোনো মন্তব্য গণমাধ্যমে আসেনি।
দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে বৈঠক হয়েছে গত শুক্রবার। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বন্ধ ও নিরাপত্তার বিষয়ে নিয়ে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সংখ্যালঘুর নির্যাতন কোনো ঘটনা ঘটেনি, সবটাই ভারতীয় মিডিয়ার অতিরঞ্জিত খবর।
রোববার স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুল লিখেছেন, “ভারতে মোদি সরকার মুসলমানবিরোধী আরও একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। নতুন আইন পাস করে তারা মুসলমানদের ‘ওয়াক্ফ’ সম্পত্তি পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিমদেরও রাখার এবং এসব সম্পত্তিতে সরকারের সরাসরি খবরদারিত্বের বিধান করেছে। এই আইন ব্যবহার করে পুরোনো মসজিদসহ মুসলমানদের বহু ঐতিহাসিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”
ভারতে হিন্দু মন্দির পরিচালনা কমিটিতে অন্য ধর্মের কাউকে স্থান দেওয়া হয় না দাবি করে স্ট্যাটাসে তিনি আরও বলেন, “ভারতে হিন্দু মন্দির পরিচালনা কমিটিতে অন্য ধর্মাবলম্বীরা স্থান পান না। এই প্রশ্ন সেখানে উঠেছে যে, ওয়াক্ফ বোর্ডে তাহলে অমুসলিমদের রাখা হবে কেন?”
দেশটির ওয়াক্ফ বিল মুসলিম নিপীড়নের নতুন অধ্যায় মন্তব্য করে আসিফ নজরুল আরও বলেন, “এই আইন ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর ক্রমাগত বৈষম্য ও নিপীড়নের আরেকটি অধ্যায় রচনা করবে।”
সবশেষে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতের অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে আনেন এই উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এরাই আবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ভুয়া অভিযোগ তুলে যাচ্ছে অব্যাহতভাবে।”