অস্ট্রেলিয়ায় এক বছরে রেকর্ড মানবপাচার, হচ্ছে অঙ্গ পাচারও

সিডনি থেকে গ্রেপ্তার জে শা ইউন ইয়ুং, যিনি নিষিদ্ধ অ্যাপের হোতা।
সিডনি থেকে গ্রেপ্তার জে শা ইউন ইয়ুং, যিনি নিষিদ্ধ অ্যাপের হোতা।

অস্ট্রেলিয়ায় ‘আধুনিক দাসত্ব’ ও মানব পাচারের মতো অপরাধ বেড়ে যাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে দেশটির ফেডারেল পুলিশ, যেখানে গেল বছরেই এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে প্রায় দুই হাজার।

সংস্থাটি জানিয়েছে, আধুনিক দাসত্বের শিকার মানুষের সংখ্যা গেল এক বছরে ১২ শতাংশ বেড়ে গেছে, যা যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ।

শুধু ২০২৪ সালেই অস্ট্রেলিয়া জুড়ে এ ধরনের ১৮৪৮টি অপরাধে ৭৯০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এ সময়ের মধ্যে ফেডারেল পুলিশ আধুনিক দাসত্ব ও পাচারের ৩৮২টি ঘটনা জানতে পেরেছে। জোরপূর্বক বিয়ে, যৌন নিপীড়ন, বলপূর্বক বাসাবাড়িতে কাজ করানো, ঋণের বিনিময়ে কাজে বাধ্য করার মতো ঘটনা রয়েছে অপরাধের তালিকায়।

নিউজ ডটকমের এক প্রতিবেদনে ফেডারেল পুলিশকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, গেল বছরে মানব অঙ্গ পাচারের মতো একটি ঘটনার সন্ধানও তারা পেয়েছেন।

জুলাই মাসে সিডনির এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যাকে মানব পাচারের একটি আন্তর্জাতিক চক্রের হোতা মনে করছে অস্ট্রেলিয়া পুলিশ। ওই ব্যক্তি বৈধ অনুমোদন ছাড়া পাচারকৃতদের অস্ট্রেলিয়ায় নিয়োগ দিত।

১৭ বছর বয়সী এক তরুণীকে যৌনকর্মীর কাজ করানোর জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে সিডনিতে নিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে ওই চক্রটির বিরুদ্ধে। আর সিডনি থেকে গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তি তরুণীকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে আসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ।

কর্তৃপক্ষ বলছে, আধুনিক দাসত্ব ও পাচারের এসব ঘটনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আড়ালে থাকলেও যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে এই অদৃশ্য মহামারি নির্মূল করা সম্ভব।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুসারে, পাচারের শিকার প্রতি তিনজনে একজন শিশু।

ওদিকে, একই বছর প্রায় ৩৪ টন মাদক জব্দের পাশাপাশি প্রায় ১১৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের অবৈধ পণ্য আটক করা হয়েছে।

এ সময় ফেডারেল পুলিশ এমন একটি অ্যাপের সন্ধান পেয়েছি যেটি শুধু অপরাধ জগতের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল। সিডনি থেকে গ্রেপ্তার জে শা ইউন ইয়ুং ওই অ্যাপের হোতা বলে তারা জানিয়েছে।

৩২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে তার নারউইয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর পাঁচটি অপরাধে অভিযুক্ত করে আদালতে পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে অপরাধী চক্রকে সহায়তা এবং অপরাধলব্ধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগও ছিল।

ফেডারেল পুলিশের ‘ক্রাকেন’ নামের এই অভিযানে মোট ৫২ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত এবং ২৩০ কেজি মাদক জব্দ করা হয়।

এছাড়া এএফপি, স্টেট পুলিশ ও অন্যান্য ফেডারেল সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট কাউন্টার টেরোরিজম টিম’ সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে ১৭ জনকে অভিযুক্ত করেছে।

অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডার বিল পলিক্রোনোপলস বলেছেন, তার বাহিনী এ ধরনের অপরাধ দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না। তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন