বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠ জাতীয় নাগরিক পার্টির এক বিবৃতির জবাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বলেছে, দেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাবিরোধী শক্তির গর্ভে জন্ম নেওয়া এই দলটির প্রধান লক্ষ্যই হলো সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের তীব্র সমালোচনা করে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা দলটি। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আওয়ামী লীগও পাল্টা বিবৃতিতে তাদের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়।
পাকিস্তানে ভারতের অভিযানের প্রেক্ষাপটে লেখা ওই বিবৃতিতে এনসিপি দাবি করে, ভারতে অবস্থানরত পলাতক ফ্যাসিবাদী ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মীরা বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
“এই দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বিদ্যমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চক্রান্তে লিপ্ত। তারা সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের জান-মালের ক্ষতি সাধনে সক্রিয় রয়েছে,” বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
পাল্টা বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে, এনসিপির রাজনৈতিক কর্মসূচির মূল এজেন্ডা হল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করা। এরা সন্ত্রাসবাদের প্রতিভূ এবং উগ্র জঙ্গিবাদী মতাদর্শের উপজাত।
“যে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য তাদের মায়া কান্না সেটা অর্জিত হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রণীত ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতি মেনেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে।”
টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটির অসংখ্য নেতাকর্মী নিপীড়নের ভয়ে দেশছাড়া। দলের সভাপতি শেখ হাসিনাও গণ আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।
শেখ হাসিনার সফল রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকার কারণেই উপমহাদেশে স্থিতিশীলতা বজায় ছিল বলে উল্লেখ করা হয় আওয়ামী লীগের বিবৃতিতে। ।
“অথচ এরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে বিপরীত পথে পরিচালিত করছে। পাকিস্তানের প্রেসক্রিপশনে প্রতিবেশী ভারতে হামলার হুঁশিয়ারি দেয়, সেভেন সিস্টার্স ভেঙে ফেলা এবং পশ্চিমবঙ্গ দখলের হুমকি দেয়। পাশ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়ে এ ধরনের শিষ্টাচার বহির্ভূত অকূটনৈতিক বক্তব্য বাংলাদেশকে চরম হুমকির মুখে ফেলতে পারে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে অভিযান চালিয়েছে সেটা নিয়ে এনসিপি ও সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে তারা বিরোধিতা করতে গিয়ে সন্ত্রাসবাদের পক্ষ নিয়ে নিচ্ছে এবং এই লড়াইয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ফেলার মতো অর্বাচীন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ধরনের মন্তব্য ও পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
এর আগে এনসিপির বিবৃতিতে পাকিস্তানে ভারতের অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
তারা বলেছে, পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়েছে এবং এক ধরনের যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনাটি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় সরাসরি আঘাত।