নিদারুণ ব্যাটিং ব্যর্থতায় স্বপ্ন ভাঙল বাংলাদেশের। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ হারাল বাংলাদেশ।
৫০ রানের মধ্যে শেষ ৯ উইকেট হারানো বাংলাদেশ গড়তে পারেনি লড়াইয়ের পুঁজি। ১১ রানে হারায় শেষ ৬ উইকেট। শেষ ৫ ব্যাটারের মিলিত রান কেবল ১! ছোট পুঁজি নিয়ে লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ, হেরেছে ৮ উইকেটে।
বাংলাদেশের পয়েন্ট নিউ জিল্যান্ডের সমান- ২১। তবে জয় একটি বেশি থাকায় সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল নিউ জিল্যান্ড।
বাংলাদেশের দুর্বলতা ব্যাটিং। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সেই ব্যাটিং ব্যর্থতাতেই হল ভরাডুবি। সিরিজ হারল নিগার সুলতানার দল, সঙ্গে ভাঙল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন। এখন তাদের উতরাতে হবে বাছাই পর্বের চ্যালেঞ্জে।
জিতলেই সরাসরি বিশ্বকাপে চলে যেত বাংলাদেশ। এই ম্যাচে ন্যূনতম লড়াইও করতে পারল না সফরকারীরা। বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে শেষ হওয়া ম্যাচে সেন্ট কিটসে তারা গুটিয়ে যায় ১১৮ রানে। সহজ রান তাড়ায় ক্যারিবিয়ানরা জিতে যায় ২৭.৩ ওভারেই।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ফারজানা হক ও শারমিন আক্তারের জুটিতে এক সময় বাংলাদেশের রান ছিল ১ উকেটে ৬৮। নাটকীয় ধসে দেড়শর অনেক আগেই গুটিয়ে যায় তারা।
দ্বিতীয় ওভারে মুর্শিদা খাতুনকে (১) হারায় বাংলাদেশ। চেরি-অ্যান ফ্রেজারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করে কিপারের হাতে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার।
অভিজ্ঞ ফারজানা ও সাম্প্রতিক সময়ে সেরা ব্যাটার শারমিন এরপর দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফারজানা স্বভাবজাত ব্যাটিংয়ে উইকেট আঁকড়ে রাখেন। শারমিন উইকেট আগলে রাখার পাশাপাশি খেলেন দারুণ কিছু শট।
তবে ১০ ওভারের পর দুজনের ব্যাট থেকেই বাউন্ডারি উধাও হয়ে যায়। ক্যারিবিয়ানদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে রান বের করতে পারছিলেন না থিতু হওয়া দুই ব্যাটারও। পরে অন্যরাও পথ বের করতে পারেননি।
২০তম ওভারে লেগ স্পিনার অ্যাফি ফ্লেচারের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন ফারজানা। ৬৫ বল খেলে কেবল একটি চারে ২২ রান করতে পারেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
অধিনায়ক নিগার নামার পরও রানের গতি বাড়েনি। একটু পর বাউন্ডারির চেষ্টাতেই নিজের পতন ডেকে আনেন শারমিন (৫৮ বলে ৩৭)। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউসের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ক্রিজে ছেড়ে বেরিয়ে ক্যাচ দেন তিনি মিড অফে।
আগের ম্যাচে প্রায় একই ধরনের পরিস্থিতি থেকে দলকে উদ্ধার করেছিলেন নিগার। এ দিন তিনিও ফেরেন দুই অঙ্ক ছুঁয়ে, ২৯ বলে ১১।
এরপর একের পর এক ব্যাটারের আসা-যাওয়ার মিছিল দ্রুতই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হেইলি ম্যাথিউসকে এবার ২২ রানে ফেরান নাহিদা। আরেক ওপেনার কিয়ানা জোসেফ ৩৯ রান করে আউট হন মারুফা আক্তারের বলে। বাংলাদেশের পালা শেষ সেখানেই।
শিমেইন ক্যাম্পবেলকে নিয়ে দ্রুতই ম্যাচ শেষ করে দেন ডেন্ড্রা ডটিন। ৪৭ বলে ২২ রানে অপরাজিত থকেন ক্যাম্পবেল, অভিজ্ঞ ডটিন ১৯ বলে করেন ৩৩।
বাছাই পর্বে ফের ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে দেখা হবে বাংলাদেশের। সেখানে থাকবে উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের তলানির অন্য দুই দল পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড এবং র্যাঙ্কিং থেকে আসা থাইল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড। এই বছর অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে বিশ্বকাপের আগে ভারতেই হবে বাছাইপর্ব।
ছয় দলের বাছাইপর্ব থেকে দুই দল খেলবে বিশ্বকাপে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৪৩.৫ ওভারে ১১৮ (ফারজানা ২২, মুর্শিদা ১, শারমিন ৩৭, নিগার ১১, সোবহানা ২৫, ফাহিমা ৭, স্বর্ণা ০, রাবেয়া ০, নাহিদা ১, মারুফা ০*, তৃষ্ণা ০; ডটিন ৫-০-১৬-০, ফ্রেজার ৪-০-২৪-১, অ্যালেইন ১-০-৯-০, ম্যাথিউস ১০-৩-১৯-১, ফ্লেচার ১০-০-২২-১, জাইদা ৭-২-১৫-২, রামহারাক ৬.৫-০-১২-৪।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৭.৩ ওভারে ১২২/২ (ম্যাথিউস ২২, জোসেফ ৩৯, ক্যাম্পবেল ২৫*, ডটিন ৩৯*; মারুফা ৭-১-৩৯-১, তৃষ্ণা ৩-০-১৩-০, নাহিদা ৬-০-২৫-১, ফাহিমা ৪-০-১৫-০, রাবেয়া ৭-০-২২-০, সোবহানা ০.৩-০-৭-০)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী।