আটসাঁট বোলিংয়ে ভারতকে নাগালের মধ্যে আটকে রেখেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় জয়ের স্বাদ পাওয়া হলো না বাংলাদেশের। সাইফ হাসান ছাড়া সবাই যেন খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন ভারতের বোলারদের সামনে।
শুরু থেকেই নিঃসঙ্গ লড়াই করছিলেন সাইফ। ওপেনার তামিম দ্বিতীয় ওভারেই ফেরেন কোন রান না করে। দ্বিতীয় উইকেটে পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি। এই একটি জুটি ছাড়া আর বলার মতো কিছুই ছিল না বাংলাদেশের ইনিংস। ইনফর্ম ব্যাটার লিটন দাসের অভাব বেশ ভালোই টের পেয়েছে বাংলাদেশ।
শুরু থেকে জাসপ্রিত বুমরাহকে সামলানোই কঠিন ছিল বাংলাদেশ ব্যাটারদের জন্য। সাইফ-ইমনরা একের পর এক বল মিস করেছেন। তাতে রান রেট বেড়েছে। ওভারপ্রতি রানের গতি বেড়ে যাওয়ায় চাপও বেড়েছে সাইফ ও ইমনের ওপর। স্পিনারদের বিপক্ষে বড় শট খেলতে গিয়ে ১৯ বলে ২১ রানে ফেরেন ইমন।
ওই উইকেটের পর আর ব্যাটাররা লড়াই দিতে পারেননি। সাইফ একপ্রান্ত আগলে রেখে ৫ ছক্কা ও ৩ চারে ৫১ বলে ৬৯ করেছেন। তবে এই ইনিংসে মোট চারবার জীবন পেয়েছেন এই ব্যাটার। তবুও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে না পারা তার ব্যর্থতা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারত ম্যাচ জেতায় এবারের এশিয়া কাপ ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তারা। ফাইনাল খেলার কাগুজে সম্ভাবনাও শেষ হয় শ্রীলঙ্কার। বৃহস্পতিবার সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। অলিখিত সেমিফাইনালে যে জিতবে সেই ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ হতে যাচ্ছে।

এর আগে একটি রান আউট ভারতের ইনিংসের মোড় ঘুরিয়ে দেয় পুরোপুরি। কৃতিত্ব অবশ্য রিশাদ হোসেনের। যার নিঁখুত থ্রো ফিরিয়ে দেয় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা অভিষেক শর্মাকে।
আর সেই থেকে ছুটতে থাকা ভারতের রানের গতি কমে যায়। দুইশো ছাড়ানো স্কোর তো নয়ই তার কাছেও যেতে পারেনি ভারত। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান করেছে তারা।
ম্যাচ বাংলাদেশের দিকে ঘুরে যায় নবম ওভারের প্রথম বলে। শিভম দুবেকে ফিরিয়ে রিশাদ দলকে ম্যাচে ফেরান। অভিষেক তখনও ছুটছেন। সূর্যকুমার ক্রিজে এসে হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না। কিন্তু একবার জীবন পাওয়া অভিষেক পৌঁছে যান ৩৭ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৫ রানে।
দুইশো স্ট্রাইকরেটে রান তোলা অভিষেকের ব্যাটে দুইশো ছাড়ানো যখন ছিল সময়ের ব্যাপার, ঠিক তখনই রান আউটে ভারতের উচ্চাশা থেমে যায়।
মোস্তাফিজুর রহমানের বলে সূর্যকুমারের পয়েন্টে ঠেলে রানের জন্য ছোটেন। কিন্তু রিশাদ বাম পাশে ঝাঁপিয়ে বল ধরে ডান হাতে থ্রো করেন নন স্ট্রাইক প্রান্তে। রিশাদের ক্ষীপ্রগতির ফিল্ডিংয়ে রান নেওয়ার সাহস করেননি সূর্যকুমার। কিন্তু অভিষেক চলে আসেন মাঝ ক্রিজে। ওই অবস্থা থেকে আর নিজের প্রান্তে সময় মতো ফিরতে পারেননি। সঠিক থ্রোতে বল ধরে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন মোস্তাফিজ।
একই ওভারে সূর্যকুমারকেও হারায় ভারত। আগের ওভারে ১৭ রান দেওয়া মোস্তাফিজ মাত্র ১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন ১২তম ওভারটিতে। ১৩তমও ভারে ১০ রান এলেও ১৪ থেকে ১৭, এই চার ওভারে দু’অঙ্কের ঘরে রান তুলতে পারেনি ভারত।
শুরুতে অভিষেকের ৭৫ ছাড়া শুভমানের ২৯ ও হারদিক পান্ডিয়ার ২৯ বলে ৩৮ রান ছিল ভারতের ইনিংসের হাইলাইটস। রিশাদ নিয়েছেন জোড়া উইকেট।
এক উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজ হয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ১৫০ উইকেট নেওয়া বোলার। পেছনে ফেলেছেন সাকিবকে। আর তানজিম সাকিব ও সাইফউদ্দিন নিয়েছেন একটি করে উইকেট।