পানিপ্রবাহ দেখতে ফারাক্কা ব্যারাজে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল

Bangladesh delegation at Farakka Barrage

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যেই পাঁচ দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে সফরে গেছে ‘ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের’ বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। সোমবার ফারাক্কা ব্যারাজ দেখতে গেছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সেখানে কী পরিমাণ পানি প্রবাহিত হচ্ছে, তা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করবেন দুই দেশের বিশেষজ্ঞরারা।

ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে যৌথ কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটির ৮৬তম বৈঠকে যোগ দিতে সোমবার ভারত সফরে যান বাংলাদেশের ১১ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ড এর প্রতিবেদনে বলা হয়, জয়েন্ট রিভার কমিশনের (জেআরসি) সদস্য মুহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ৩ মার্চ কলকাতায় পৌঁছায়।

সফরের মূল উদ্দেশ্য- গঙ্গা-পদ্মা পানিবণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, আগামী ৭ মার্চ কলকাতায় একটি বিলাসবহুল হোটেলে দু’দেশের প্রতিনিধি দল আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবে। সেখানে গঙ্গার পানিবণ্টন ছাড়াও তিস্তা এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত নদীগুলির বিষয়ে কথাবার্তা হতে পারে।

১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। এর ফলে দুই দেশ গঙ্গার পানি ভাগ করে নেওয়ার একটি নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করে। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে এটি শেষ হবে।

আগামী বছর চুক্তির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নতুন করে কিছু পর্যালোচনা ও সংশোধন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশ গঙ্গার প্রবাহ ও বণ্টন নিয়ে নিয়মিত বৈঠকে বসে।

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ অভিযোগ তুলেছে যে, শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা ব্যারাজ থেকে তারা পর্যাপ্ত পারি পায় না। অন্য দিকে, ভারতীয় পক্ষের দাবি, পানিপ্রবাহের স্বাভাবিক ওঠানামার কারণে কিছু সময় পানির পরিমাণ কমবেশি হয়। এই সফর ও বৈঠক সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।

গত বছর অগস্ট মাসে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়। তাই এই বৈঠকের মাধ্যমে উভয় দেশ নিজেদের মতামত বিনিময় করবে এবং ভবিষ্যতে কী ভাবে পানিবণ্টন আরও কার্যকর ভাবে পরিচালনা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করবে বলে খবর প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ফারাক্কা পরিদর্শন এবং ৭ মার্চের আলোচনা আগামী বছরের জন্য পানিবণ্টন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের এই সফর তাই শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকেই নয়, ভবিষ্যতের পারিসম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বিএসএফ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি)-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে ৫৫তম দ্বিবার্ষিক বৈঠক হয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই ধরনের বৈঠক প্রথম ছিল।

গত ৫ আগস্ট আন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ চেয়ে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এখনও উত্তর দেয়নি নয়াদিল্লি।

আরও পড়ুন