ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ফিরেই বইয়ে দেন শুল্ক ঝড়। গত এপ্রিলের সেই ঝড়ে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক ধরেন তিনি। আগে থেকে ধরা ছিল ১৫ শতাংশ শুল্ক। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ৫২ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছিল।
এনিয়ে যখন উদ্বেগ চলছিল, তখন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস চিঠি লিখেছিলেন ইউনূসকে। তিনি সময় চাইলে ট্রাম্পও ৯০ দিন সময় দেন। ট্রাম্পের কাছ থেকে সময় আদায় ইউনূস সমর্থকরা বেশ বড় করে দেখালেও আসলে বেশিরভাগ দেশকেই এমন সময় দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
সেই ৯০ দিনের সময় পার না হতেই বজ্রাঘাত এল ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য। বাণিজ্যমন্ত্রী শেখ বশিরউদ্দীন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ওয়াশিংটনে দেন-দরবার চালানোর মধ্যেই গত ৭ জুলাই বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বসিয়ে ইউনূসকে তার ঠিঠির জবাব ধরিয়ে দেন ট্রাম্প।
এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী শেখ বশির ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসেন ইউএসটিআরের সঙ্গে; দেশে থেকে খলিলুরও ভার্চুয়ালি যোগ দেন সেই বৈঠকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশই এমন আলোচনা চালাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে। ভারত তাদের পণ্যে আরোপিত শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে বলে খবর দিলেও তিন দিনের আলোচনা শেষে দেশে ফিরে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির ‘আরেক দফা আলোচনা করতে হবে’ বলে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
এদিকে গত আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কিছু শর্ত ধরিয়ে দেয় বলে খবর প্রকাশ করেছিল সংবাদ পোর্টাল ‘বাংলা আউটলুক’। ‘বাংলাদেশকে পাঠানো ইউএসটিআরের চিঠিতে মার্কিন বাণিজ্য আগ্রাসনের ছায়া’ শীর্ষক সেই সংবাদ প্রতিবেদন কেউ কেউ ফেইসবুকে শেয়ারও দিয়েছিলেন।
কিন্তু এখন সেই প্রতিবেদনটি আর দেখা যাচ্ছে না ‘বাংলা আউটলুক’র ওয়েবসাইটে। অভিযোগ উঠেছে, অন্তর্বর্তী সরকার চাপ দিয়েই প্রতিবেদনটি সরাতে বাধ্য করেছে পত্রিকাটিকে।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের প্রতিবেদনটি শেয়ার দিয়েছিলেন ফেইসবুকে। তা সরিয়ে নেওয়ার পর মঙ্গলবার এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “প্রকাশিত প্রতিবেদন চাপ প্রয়োগ করে তুলে নেওয়া কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। তা আরো বিচলিত করে যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দাবি করে মুখে ফেনা তুলে ফেলা লোকজন ওই চাপ প্রয়োগ করে এবং একই সাথে চাপের মুখে নতি স্বীকার করে।
“গতকাল বাংলাআউটলুকে প্রকাশিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ এর উপর প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সরিয়ে নিতে সরকারের বিভিন্ন মহল পত্রিকাটির সম্পাদকের উপর চাপ প্রয়োগ করে, যার ফলে রিপোর্টটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় তারা। আমাকে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই চিঠি প্রকাশ হওয়ায় বেশ রাগান্বিত, এবং এতে নাকি দেশের ক্ষতি হবে।”
ওয়াশিংটনের ওই চিঠিতে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক কমাতে বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছিল বলে ওই সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল। তাতে সরকারের প্রতিক্রিয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সমর্থন পাওয়া এই অন্তর্বর্তী সরকার কি লুকাতে চায়?
‘বাংলা আউটলুক’র প্রত্যাহার করা প্রতিবেদনটি জুলকারনাইন সায়ের তার ফেইসবুক পোস্টে সম্পূর্ণ তুলে ধরেছেন। তাতে বলা হয়, গত ২১ মে ওয়াশিংটন থেকে ২১ পাতার চিঠিটি আসে। যার অর্থ দাঁড়ায়, সেই চিঠিতে দেওয়া দেখার পরই ওয়াশিংটনে আলোচনায় গেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল।

চিঠিতে ৬ ধরনের শতাধিক শর্ত সংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে। এগুলো হলো- কর সংক্রান্ত শর্ত, অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত শর্ত, ডিজিটাল বাণিজ্য ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত শর্ত, রুলস অব অরিজিন সংক্রান্ত শর্ত, অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত শর্ত এবং বাণিজ্যিক শর্ত।
বাংলা আউটলুক লিখেছে, অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত শর্ত এবং বাণিজ্যিক শর্তগুলো পর্যালোচনা করলে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ ও চাপের বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যায়। এসব শর্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি যেমন নিশ্চিত করা হয়েছে। তেমনি চীনা আমদানি কমাতেও স্পষ্ট নির্দেশনা আছে।
বাণিজ্যিক শর্ত
১. মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম আমদানি বাড়াতে হবে বাংলাদেশকে এবং চীনা সামরিক পণ্য আমদানি কমাতে হবে।
২. রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমানের মাধ্যমে মার্কিন বেসামরিক উড়োজাহাজ ও যন্ত্রাংশ আমদানি বাড়াতে হবে।
৩. মার্কিন জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধি নিশ্চিত করত হবে বাংলাদেশকে এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে।
৪. সামাজিক নিরাপত্তা খাতের জন্য মার্কিন গম আমদানি বাড়াতে হবে।
৫. সামরিক বাহিনী ও সরকারি সংস্থার জন্য মার্কিন সয়াবিন তেল আমদানি বাড়াতে হবে। সয়াবিন সংরক্ষণের জন্য মার্কিন কোম্পানির অংশীদারিত্বে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।
৬. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষর করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে জানাতে হবে।
অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত শর্ত
১. জাহাজ নির্মাণ শিল্প ও শিপিং খাতের বিকাশে যুক্তরাষ্ট্রের সমমানের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. বন্দর, জেটি ও জাহাজে চীনের তৈরি লজিস্টিকস সিস্টেম লগিঙ্ক ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।
৩. ব্যুরো অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড সিকিউরিটির অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের মার্কিন পণ্য দেশটিতে রপ্তানি, পুনঃরপ্তানি করা যাবে না।
৪. আমদানি সংক্রান্ত সকল কাস্টমস তথ্য দেশটিকে দিতে হবে। যাতে মার্কিন সংস্থাগুলো লেনদেন চিহ্নিত করতে পারে।
৫. বাংলাদেশকে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অংশীদার করতে হবে।
৬ বিভিন্ন দেশের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত এমন ধরনের সফটওয়্যার তৈরিতে স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।
ডিজিটাল বাণিজ্য ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত শর্ত
১. তথ্য আদান প্রদানে বৈশ্বিক ক্রস-বর্ডার গোপনীয় নীতিমালা সিবিপিআর এবং পিআরপি স্বীকৃতি দিতে হবে বাংলাদেশকে।
২. ব্যক্তিগত ডেটা গোপনীয়তা নীতিমালা প্রণয়নে মার্কিন সরকার ও দেশটির বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা বাড়াতে হবে।
৩. সাইবার সিকিউরিটি অধ্যাদেশ ২০২৫ এ মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত সেফগার্ড নিতে হবে। সাইবার অপরাধের কঠোরতর সাজা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ২০২১ সালের ওটিটি নীতিমালা সংশোধন অথবা বাতিল করতে হবে। যাতে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড সেবায় শনাক্তকরণ শর্ত না থাকে।
৫. ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাহার্টসের স্পেকট্রাম এলপিআই ও ভিএলপিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
কর সংক্রান্ত শর্ত
মার্কিন পণ্য রপ্তানিতে ৩ ধরনের শুল্ক কমাতে বলেছে দেশটি। এগুলো হলো কাস্টমস ডিউটি, সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি ও রেগুলেটরি ডিউটি।
অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত শর্ত
ওষুধ, কৃষি, পরিবেশসহ ১৩ খাতে নন ট্যারিফ ব্যারিয়ার বা অশুল্ক বাধা চিহ্নিত করে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে প্রায় অর্ধশত শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মেডিকেল ডিভাইসেস: চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি পণ্য আমদানিতে বেশকিছু বাধা চিহ্নিত করেছে দেশটি। এসব বাধা দূর করতে ৪টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এসব শর্তে মূলত মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ’র সনদ বিনা প্রশ্নে মেনে নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশকে মেডিকেল ডিভাইস রেগুলেটরি আন্তর্জাতিক ফোরাম-আইএমডিআরএফ এর সদস্য হতে বলা হয়েছে।
ফার্মাসিউটিক্যালস: এফডিএ’র সনদ বিনাপ্রশ্নে মেনে নেওয়ার শর্ত দিয়েছে ইউএসটিআর। যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে উৎপাদিত কিংবা এফডিএ অনুমোদিত কোনো উৎপাদন কেন্দ্রে তদারকি করতে পারবে না বাংলাদেশ।
মোটর গাড়ি ও যন্ত্রাংশ: যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ির প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। প্রবেশাধিকার দিতে হবে মার্কিন মোটর ভেহিকেল নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান এফএমভিএসএস এর আওতায় উৎপাদিত যে কোনো অটোমেটিভ পণ্য। অর্থাৎ মার্কিন গাড়ি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে বাড়তি কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও শর্ত আরোপ করা যাবে না।
কৃষি: কৃষির বিভিন্ন উপখাতে বেশকিছু শর্ত বাস্তবায়ন করতে বলেছে দেশটি। এসব উপখাতে মার্কিন বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সনদ মেনে নেয়ার পাশাপাশি তাদের শর্তের সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উন্নয়নের কথাও বলা হয়েছে। যেমন ডেইরি খাতে নিরাপত্তায় কমপক্ষে মার্কিন স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলার শর্ত দেওয়া হয়েছে। মার্কিন সংস্থাগুলোর দেওয়া হালাল সনদও মেনে নিতে শর্ত দেওয়া হয়েছে।
আমদানি সনদ সংক্রান্ত: আমদানি সনদ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয় তা দ্রুত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে জানাতে হবে। মার্কিন খাবার ও কৃষিপণ্য আমদানিতে অনুমতি পত্র চাইতে পারবে না বাংলাদেশ।
মেধাস্বত্ব সংক্রান্ত শর্ত: দীর্ঘদিন ধরে দেশটি মেধাস্বত্ব আইন বাস্তবায়নে চাপ দিয়ে আসছে। দেশটির অভিযোগ আইপিআর না মেনে বাংলাদেশ নানা ধরনের নকল পণ্য উৎপাদন করছে। মেধাস্বত্ব সংক্রান্ত ১৩টি আন্তর্জাতিক চুক্তি ও কনভেশনে যুক্ত হতে বাংলাদেশকে শর্ত দিয়েছে দেশটি।
সেবাখাত ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত শর্ত: সেবাখাতের কোম্পানিগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক রিইন্সুরেন্সের বিধান বাতিল করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সার্ভিস ডামেস্টিক রেগুলেশনে যুক্ত হতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে বাংলাদেশকে।
অনতিবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর সব পাওনা পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে। পাশাপাশি মুনাফা প্রত্যাবাসনে কোনো বাধা রাখা যাবে না। তেল, গ্যাস, ইনস্যুরেন্স ও টেলিকম খাতে মার্কিন কোম্পানির অংশগ্রহণ বাড়াতে মালিকানা সংক্রান্ত বাধা দূর করতে হবে। মার্কিন ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো নো অবজেকশন সার্টিফিকেট-এনওসি দিতে হবে।
শ্রম সংক্রান্ত শর্ত: ইউএসটিআরের দেওয়া চিঠিতে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, কারখানায় শ্রমিক সংগঠন করতে সম্মতিদাতা শ্রমিকের সংখ্যা ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। ইপিজেডের শ্রমিকদের সংগঠন করার পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায্য দাবি আদায়ে জড়িত গার্মেন্টস শ্রমিক ও নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
পরিবেশ সংক্রান্ত শর্ত: যুক্তরাষ্ট বলেছে, আইন যেন পরিবেশের সুরক্ষা করে এটা বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে হবে। কার্যকরভাবে আইনের প্রয়োগ করতে বলেছে দেশটি। নানা ধরনের অবৈধ ব্যবসা বন্ধে সহযোগিতা বাড়াতেও শর্ত দিয়েছে ইউএসটিআর। বণ্যপ্রাণি পাচার রোধ, সমুদ্রে অনিয়ন্ত্রিত মাছ ও প্রাণি শিকার রোধেও নানা শর্ত দেওয়া হয়েছে।
এড়িয়ে যাচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
ওয়াশিংটন থেকে ফিরে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনায় কী কী নিয়ে কথা হয়েছে, সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।
শেখ বশির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের এবিষয়ে ‘নন-ডিসকলোজার এগ্রিমেন্ট (গোপনীয়তার চুক্তি)’ রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র কি চেয়েছে, বা কি আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা সম্ভবপর নয়।
তিন দিনের আলোচনাকে ‘উৎসাহব্যঞ্জক এবং যথেষ্ট এনগেজিং’ তিনি বললেও এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপ এখনও ট্রাম্প প্রশাসনকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “প্রায় ৩৫–৪০ জন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সুন্দর সুন্দর কিছু পরামর্শ পেয়েছি, যেগুলো কাজে লাগানো হবে।”
চীনের সঙ্গে ব্যবসা কমাতে যুক্তরাষ্ট্র চাপ দিচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও তিনি এড়িয়ে যান ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্টের আওতায় আছি’ বলে।
আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝিতে আলোচনার জন্য আবার র যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে জানান শেখ বশির। তিনি আশাবাদী, ‘ভালো’ ফলই আসবে।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান গত রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা বাণিজ্য আলোচনার চেয়েও ব্যাপক। শুধু শুল্ক নয়, সেখানে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তাকেও গুরুত্ব দিচ্ছে।
“অন্য দেশের সঙ্গে আপনি কীভাবে সম্পর্ক রাখছেন, সেটাও তারা দেখছে। এই নিয়ে একটি ফ্রেমওয়ার্ক করা হচ্ছে। সেটাও আলোচনার মধ্যে রয়েছে। শুধু শুল্ক নয়, অশুল্ক বাধা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।”
তার কথায় স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ চাপেই রয়েছে।