কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর ‘নির্যাতনে’ তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে গঠন করা হয়েছে উচ্চপদস্থ কমিটি।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যৌথবাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে আটক মো. তৌহিদুল রহমানকে (৪০) আটক করা হয়। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনাটি তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
“ইতোমধ্যে ওই সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়াও, মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুর কথা বলা হলেও চিকিৎসক শুক্রবার জানিয়েছিলেন তৌহিদুলকে মৃত অবস্থায়ই তাদের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে।
এছাড়া নামেও রয়েছে বিভ্রান্তি। নির্যাতনে নিহত ব্যক্তির নাম তৌহিদুল ইসলাম, তবে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে ‘মো. তৌহিদুল রহমান’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক।
চার সন্তানের বাবা তৌহিদুল চট্টগ্রাম বন্দরে একটি শিপিং এজেন্টে চাকরি করতেন। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে এসেছিলেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তৌহিদুল ইসলামের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু সাংবাদিকদের বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তৌহিদুলকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা বাড়ি থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।”
“শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে পুলিশ তাদের ফোন দিয়ে হাসপাতালে যেতে বলে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই।”
তৌহিদুলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেও জানান তিনি, যা চিকিৎসকও নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, কুমিল্লায় তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, হেফাজতে যেকোনো ধরনের নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবি করেছেন বিএনপি ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া যুবদল নেতার মৃত্যুতে জড়িত সেনা সদস্যদের বিচার চেয়েছে বিএনপি।