২৭ বছর পর ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গেরুয়া পতাকা ওড়াল বিজেপি, যাকে ভারতীয় গণমাধ্যম লিখেছে, ভারতের ‘দিল’ জিতলেন নরেন্দ্র মোদী।
মোট ৭০ আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছে ৪৭ আসনে। আর আম আদমি পার্টি (আপ) ২৩ আসনে জয় পেয়েছে।
নিজের আসনেই হেরে গেছেন আম আদমি পার্টির নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কংগ্রেস পায়নি একটিও আসন।
শনিবার সকালে দিল্লির বিধানসভার নির্বাচনী ফলাফল গণনা শুরু হয়। শুরু থেকেই বিজেপিকে এগিয়ে থাকতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে বিজেপি ও আপের মধ্যে লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও শেষ পর্যন্ত দিল্লি দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে যায় বিজেপি।
১৯৯৮ সালে শেষবার দিল্লি জিতেছিল বিজেপি। শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। এরপর কংগ্রেস দিল্লির ক্ষমতা দখল করে।
২০১৩ সালে প্রথম বার ক্ষমতায় আসে আদমি পার্টি (আপ)। ২৭ বছর পরে ২০২৫ সালে আবার ক্ষমতায় এল বিজেপি।
দিল্লিতে ভরাডুবির পর আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিজেপিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “জনতার এই রায় আমরা মাথা পেতে নিচ্ছি। বিজেপিকে জয়ের জন্য অভিনন্দন। যে আশা নিয়ে মানুষ ওদের ভোট দিয়েছেন, আশা করি ওরা তা পূরণ করব।’’
ভোটে হেরে গেলেও দিল্লির আপ কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কেজরিওয়াল।
দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিপুল জয়কে উন্নয়নের ও সুশাসনের জয় বলে ব্যাখ্যা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শনিবার দুপুরে এক্সবার্তায় দিল্লি বিধানসভায় প্রায় আড়াই দশক পর বিজেপিকে ক্ষমতায় বসানোর কারিগর মোদী লিখেছেন, “সবার উপরে জনশক্তি। এই ভোটে বিকাশ জিতেছে, আর দক্ষ সুশাসনের জয় হয়েছে।”
দিল্লিবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, “সমস্ত ভোটার ভাই-বোনকে আমি প্রণাম জানাই। দিল্লির উন্নয়নের জন্য আমরা কোনও চেষ্টার ত্রুটি রাখিনি। আমরা যে গ্যারান্টি দিয়েছিলাম, সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছি।”
এবারের ভোট ছিল ত্রিমুখী। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক কংগ্রেস ও আপ লোকসভা ভোটে জোটবদ্ধ হয়ে লড়লেও বিধানসভার ভোটে তারা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী।
কংগ্রেস ও আপের সমর্থন ক্ষেত্রও এক। দলিত, অনগ্রসর ও মুসলমান। লড়াই ত্রিমুখী হওয়ায় বিজেপি শুরু থেকেই যথেষ্ট উৎফুল্ল ছিল। কারণ, ছোট ব্যবসায়ী, পাঞ্জাবি উদ্বাস্তু, সরকারি কর্মী ও মধ্যবিত্তের মধ্যে বিজেপির সমর্থনে কোনো ছেঁদ পড়ার সুযোগ ছিল না।
আবার মধ্যবিত্তের মন জিততে বাজেটে এবার বিজেপি সরকার আয়করে বিপুল ছাড় দিয়েছে। ভোটের ঠিক আগে বাজেট পেশ রাজনৈতিকভাবে বিজেপির পক্ষে যে সুবিধাজনক হয়েছে, তা ভোটের ফলাফলেই প্রমাণ।