বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই- বিএনপি একথা বলে এলেও তাদের দূরত্ব ক্রমেই বিরোধের দিকে গড়াচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক সাক্ষাৎকারে দেওয়া বক্তব্যের পাল্টায় একের পর এক প্রতিক্রিয়া আসছে জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের মধ্য থেকে।
সেই প্রতিক্রিয়া থেকে বিএনপির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর অভ্যুত্থানের একক কৃতিত্ব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিএনপি নেতারা।
নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাতটি হয় অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক দল গঠনের তোড়জোড় নিয়ে। ছাত্রনেতাদের সরকারে অংশ নিয়ে দল গঠনের প্রক্রিয়াকে আগে থেকে সন্দেহের চোখে দেখছিলেন বিএনপির নেতারা। এখন মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের পর তা নতুন মাত্রা পেল।
বিএনপি এবার অভ্যুত্থানের পর ওয়ান-ইলেভেনের মতো ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার নতুন করে বাস্তবায়নের শঙ্কার কথা জানিয়েছিল। এখন আবার অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা থেকে এবং উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে উল্টো বলা হচ্ছে, বিএনপি ওয়ান-ইলেভেনের মতো সরকার আনতে চাইছে।
২০০৬ সালের শেষ দিকে বিএনপি মেয়াদ শেষে ক্ষমতা ছাড়ার পর রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে সহিংস এক পরিস্থিতি দিনের পর দিন চলতে থাকলে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে। তাদের সমর্থনে গঠিত হয় ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
সেই সরকার ২ বছর পর নির্বাচন দিলে ক্ষসতায় যায় আওয়ামী লীগ। তারপর সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে টানা ক্ষমমতায় থাকে তারা।
বিএনপি ১৫ বছর আন্দোলন চালিয়েও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে ব্যর্থ হয়েছিল। তার মধ্যেই গত বছরের জুলাইয়ে চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নিলে ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার সরকারের।
সেই অভ্যুত্থানের পর বিএনপি নেতারা ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময়েও গিয়েছিলেন ছাত্রনেতারা। তবে এখন সেই সম্প্রীতি ছাপিয়ে বিরোধ ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
কী বলেছিলেন ফখরুল
বিবিসি বাংলাকে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির বাংলা সংস্করণে বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
বুধবার প্রকাশিত পর্বে ফখরুল বলেছিলেন, অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা যদি সরকারের উপদেষ্টা পদ নিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করে, তবে ভোটের সময় অন্য সরকারের প্রয়োজন হবে। কারণ মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন এই সরকার তখন নিরপেক্ষ থাকতে পারবে না।
অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা এরই মধ্যে তাদের মিত্রদের নিয়ে একটি জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটি একটি রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে। ফেব্রুয়ারি নাগাদ সেই দলের রূপরেখা দেওয়ার কথাও তারা বলেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকেই ইউনূস সরকারে উপদেষ্টা হিসাবে যোগ দেন তিনজন। তারা হলেন- মাহফুজ আলম, নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। নাগরিক কমিটি কিংবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান কমিটিতে এখন তারা অবশ্য নেই।
সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হলে দেখা যায়, সেখানে ছাত্রনেতাদের নতুন দল গঠনকে ‘কিংস পার্টির’ মঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাইলে সরকারের কোনো সুবিধাই এই ছাত্রনেতাদের নেওয়া উচিৎ নয়।
তার ভাষ্যে, “দল তো তারা গঠন করছে, তাদের প্রতিনিধিরা সরকারে আছে। দ্যাটস এনাফ। হেলিকপ্টারে করে গিয়ে আপনার শীতবস্ত্র দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকাতে। আপনার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওপরে, জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওপরে নানা রকম প্রভাব তো তারা বিস্তার করছেই।”
ছাত্রদের দল গঠন নিয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা তো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সেক্ষেত্রে আমরা তাদেরকে স্বাগত জানাব।”
“তবে সরকারের কোনো সাহায্য না নিয়ে তারা যদি দল গঠন করতে চায়, সেটা তাদের জন্যই ভালো হবে,” এই প্রজন্মকে পরামর্শ দেন গত শতকের ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা ফখরুল।
তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, “একটা কথা অলরেডি উঠে আসছে মিডিয়াতে। কিংস পার্টি বলে একটা কথা উঠছে। আমি মনে করি, এখান থেকে তাদের বেরিয়ে আসা উচিৎ।”
নাহিদ, আসিফ, হাসনাতের কড়া প্রতিক্রিয়া
মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব দেখেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানান বর্তমানে তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা নাহিদ ইসলাম। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাথ আব্দুল্লাহও জানান প্রতিক্রিয়া।
নাহিদ এক ফেইসবুক পোস্টে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে লেখেন, “১/১১ এর বন্দোবস্ত থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটেছিল। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে সামনে আরেকটা ১/১১ সরকার, সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা এবং গুম-খুন ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার আলামত রয়েছে।”
অভ্যুত্থানের পরে দেশে জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অথচ বিএনপি জাতীয় সরকারের কথা বলছে সামনের নির্বাচনের পরে। ছাত্ররাই এই সরকারের এবং বিদ্যমান বাস্তবতার একমাত্র ফ্যাক্টর যেটা ১/১১ এর সরকার থেকে বর্তমান সরকারকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে।
“বিএনপি কয়েকদিন আগে মাইনাস টু এর আলোচনা করলেও এখন ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের নামে আরেকটি ১/১১ সরকারের প্রস্তাবনা করছে।”
অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ৫ আগস্ট থেকেই শুরু হয়েছে দাবি করে নাহিদ এর সপক্ষে সেদিন সেনাপ্রধানের সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠকের প্রসঙ্গ টানেন।
তিনি বলেন, “৫ অগাস্ট যখন ছাত্র-জনতা রাজপথে লড়াই করছে, পুলিশের গুলি অব্যাহত রয়েছ, তখন আমাদের আপসকামী অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দ ক্যান্টনমেন্টে জনগণকে বাদ দিয়ে নতুন সরকার করার পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিলেন।
“আমাদেরকে বারবার ক্যান্টনমেন্টে যেতে বলা হলেও আমরা যেতে অস্বীকার করি। শেষ পর্যন্ত বঙ্গভবনে আলোচনা ও বার্গেনিংয়ের মাধ্যমে ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।”
বর্তমান সরকার জাতীয় সরকার না হলেও আন্দোলনের সব পক্ষের অংশীদারিতে এই সরকার গঠিত হয়েছে বলে দাবি করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, “সব পক্ষই নানান সুবিধা ভোগ করছে। সরকার গঠনের আগেই ৬ অগাস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল এবং পুলিশের আগের আইজির নিয়োগ হয়েছিল, যারা মূলত বিএনপির লোক। এরকমভাবে সরকারের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত নানান স্তরে বিএনপিপন্থী লোকজন রয়েছে।”
ফখরুলকে বিএনপির অন্যদের চেয়ে আলাদা করে নাহিদ বলেন, “আমি মনে করি না সমগ্র বিএনপি এই অবস্থান গ্রহণ করে। বরং বিএনপির কর্মী সমর্থকদের বড় অংশই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন চায়। বিএনপির দেশপ্রেমিক ও ত্যাগী নেতৃত্বকে আহ্বান করব, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে না গিয়ে ছাত্র-জনতার সাথে বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতির পথ বেছে নিন।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ বিএনপিকে আক্রমণ করে ফেইসবুকে লিখেছেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশের কাঠামোগত পরিবর্তন করার সময় ও সুযোগ এল, অথচ বিএনপি দেশ পুনর্গঠনের এই সুযোগকে অবমূল্যায়ন করে হাজির হলো ১/১১ সরকারের ফর্মূলার আলাপ নিয়ে।
“ওদিকে অন্তর্বর্তী সরকার যখন দেশ সংস্কারের কাজে নিয়োজিত হল, তখন বিএনপি এসে বলল, এই সংস্কার করার ম্যান্ডেট বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই।”
“বিএনপি একথা ভুলে গেল, গণ-অভ্যুত্থানের ফলে গঠিত হওয়া সরকারের ম্যান্ডেট ষাট-সত্তরভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়া রাজনৈতিক দলের চেয়েও বেশি,” বলেন তিনি।
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনকে বিএনপি ভয় পাচ্ছে- এমন ইঙ্গিত করে হাসনাত লেখেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী ও জুলাই স্পিরিট ধারণকারী ছাত্র-জনতার সম্মিলনে যখন নতুন একটি রাজনৈতিক দলের উত্থান হওয়ার আভাস পেল, ঠিক তখন বিএনপি সেটিকে চিহ্নিত করল তাদের দলীয় স্বার্থের বিপক্ষে হুমকি হিসেবে।”
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেইসবুকে লিখেছেন, তাদের কেউ দলে যুক্ত হলে সরকারে আর থাকবে না। “উপদেষ্টাদের কেউ রাজনীতি করলে সরকার থেকে বের হয়েই করবে,” বলেন তিনি।
হেলিকপ্টার নিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য কিছুটা সমালোচিত আসিফ ফখরুলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কারও নাম উল্লেখ না করে লেখেন, “একই সাথে রাজনৈতিক দলেরও সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করা অনুচিৎ। বিভিন্ন সরকারি বা সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগে তদবির বা চাপ প্রয়োগ করা অনুচিৎ।”
দূরত্ব বাড়ছে ক্রমেই
অভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর রাষ্ট্রপতিকে সবার আগে যে কাজটি করতে হয়েছিল, তা হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া।
তখন বিএনপির সঙ্গে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের সম্প্রীতির সম্পর্কই দেখা যাচ্ছিল। তাদের মধ্যে প্রথম গোল বেঁধেছিল, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি নিয়ে। এরপর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করলে তার বিরোধিতা করে বিএনপি। এরপর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নেও ভিন্নমত আসে বিএনপির কাছ থেকে।
তখন বিএনপি নির্বাচনের দাবি জানালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তানিয়ে নানা শ্লেষাত্মক মন্তব্য করেন। অভ্যুত্থানে নিহতদের রক্তের দাম শুকানোর আগেই বিএনপি ক্ষমতায় যেতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে, এমন কথাও বলেন তারা।
তারপরও তাদের মধ্যে বড় কোনো বিরোধ দেখা যায়নি। ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন নাহিদ, মাহফুজরা।
তার আগে ২৬ অক্টোবর বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে গিয়ে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বৈঠকও করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত এবং নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী।
সেই বৈঠকে তিনটি বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তখন বলেছিলেন হাসনাত। সেগুলো হল- জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণা, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ এবং জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা।
রাষ্ট্রপতি অপসারণের বিষয়ে বিএনপি তো আগেই বিপরীত অবস্থান নিয়েছে। এখন পাঁচ মাস পর জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রেরও কোনো প্রয়োজন না দেখার কথা জানাচ্ছে বিএনপি।
এরমধ্যে নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়াকে ‘কিংস পার্টির’ সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দিয়েছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার জবাব দিতেও দেরি করেনি অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বিএনপিকে ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে প্রথম কিংস পার্টি গঠন করেছেন জিয়াউর রহমান। বিএনপি অবশ্যই বাংলাদেশের প্রথম কিংস পার্টি। আমরা কোনো কিংস পার্টি গঠন করছি না।”
অভ্যুত্থানের পর বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামানোর যে কাজটি তারা ১৫ বছরে পারেননি, তা ছাত্ররা করে দেখিয়েছে।
তখন বিএনপির উদ্দেশ্যে ছাত্রনেতারাও বলছিলেন যে বিএনপি যেখানে বিফল, তারা সেখানে সফল। তখন বিএনপি নেতারা এনিয়ে কথা না বাড়ালেও এখন পাল্টা বলছেন।
সম্প্রতি বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু এক সভায় বলেন, ৩৬ দিনের আন্দোলনে সরকার পতন হয়েছে, এটা ভাবলে ভুল হবে। বিএনপির দীর্ঘ আন্দোলনের ফল হিসেবে এসেছে এই অভ্যুত্থান।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফখরুলও বলেন, “চাকরির জন্যে কোটা সিস্টেম নিয়ে আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে আন্দোলনের সূত্রপাত। একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে হাসিনার পতন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাবার দাবি নিয়ে কিন্তু আন্দোলন শুরু হয়নি। এটা সবশেষে তিন-চার দিন আগে থেকে তারা হাসিনার পতনের আন্দোলন শুরু করেছে।
“এই বিষয়ে কেন জানি না, মিডিয়া থেকেও একটা কথা উঠছে যে, জুলাই-আগস্টেই একমাত্র আন্দোলন হয়েছে। এটা তৈরি হয়েছে, স্পার্ক একটা। একটা স্ফুলিঙ্গের দরকার ছিল। সেই স্ফুলিঙ্গটা ছাত্ররা জ্বালিয়েছে।”
তারও দাবি, বিএনপির ধারাবাহিক আন্দোলনের পর ছাত্ররা নামায় তা সফল হয়েছে, যেমন ঘটনা অতীতেও বাংলাদেশে ঘটেছে।