বাংলাদেশের একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান গুরুতর অসুস্থ। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের সিসিইউতে তিনি চিকিৎসাধীন।
চিত্রনায়িকা অঞ্জনা তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।
অঞ্জনা রহমানের ছেলে নিশাত মনি জানান, চলতি মাসের শুরুর দিকে তার মা জ্বরে পড়েন। জ্বর না কমলে গেল ২২ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকটি পরীক্ষার পর রক্তের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
এরপর থেকে অঞ্জনা রহমান রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সবাই তার মায়ের জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানিয়ে নিশাত মনি বলেন, “তিনি এই দেশ ও দেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে মনপ্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস সবার দোয়ায় তিনি আবারও চলচ্চিত্র অঙ্গনে হাসিমুখে ফিরবেন।“
অঞ্জনা রহমান চলচ্চিত্র জগতে আসার আগে একজন নামি নৃত্যশিল্পী ছিলেন।
তার অভিনয় জীবন শুরু হয় বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্র দিয়ে। তবে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’। এই চলচ্চিত্রে অঞ্জনা অভিনয় করেছিলেন সোহেল রানার বিপরীতে। ১৯৭৬ সালে ঈদুল ফিতরে চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’ মুক্তি পায়।
এরপর ১৯৭৮ সালে তিনি আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘অশিক্ষিত’ চলচ্চিত্রে নায়ক রাজ রাজ্জাকের বিপরীতে লাইলি চরিত্রে অভিনয় করেন। রাজ্জাকের বিপরীতে তিনি ৩০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
রাজ্জাকের বিপরীতে তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলো হল, অশিক্ষিত (১৯৭৮) জিঞ্জীর (১৯৭৯), আশার প্রদিপ (১৯৭৯), আশার আলো (১৯৭৯) আনারকলি (১৯৮০) সুখে েথাকো (১৯৮১) সানাই (১৯৮২) বৌরানী (১৯৮২), বৌ কথা কও (১৯৮৪) অভিযান (১৯৮৫) বিধাতা (১৯৮৮) রাম রহিম জন (১৯৮৯)।
এছাড়া আলমগীর, জসিম, বুলবুল আহমেদ, জাফর ইকবাল, ওয়াসিম, উজ্জ্বল, ফারুক, ইলিয়াস জাভেদ , মিঠুন চক্রবর্তী (ভারত), ইলিয়াস কাঞ্চন, সোহেল চৌধুরী , রুবেল, সুব্রত বড়ুয়া, মান্না, ফয়সাল (পাকিস্তান), নাদীম (পাকিস্তান), জাভেদ শেখ (পাকিস্তান), ইসমাইল শাহ (পাকিস্তান), শীবশ্রেষ্ঠ (নেপাল), ভুবন কেসি (নেপাল) সবার সাথে অভিনয় করেছেন।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, নেপাল, থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকা সহ বহু দেশে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হন।
২০০৮ সালে মুক্তি পায় অঞ্জনার সর্বশেষ সিনেমা ‘ভুল’।