একটি ভাষা থেকেই সকল ভাষার উৎপত্তি? কী সেই ভাষা, বয়স কত?

ভাষার রকমফের।
ভাষার রকমফের।

পৃথিবীতে মানুষই হয়তো একমাত্র প্রাণী যারা নিজেদের ভাষার মর্যাদা আদায়ে প্রাণ দিয়েছে। ভাষাগত কারণেই মানুষ নিজেদের অন্যসব প্রাণী থেকে ভিন্ন ভাবে। ভাষার মাধ্যমে এই যে ভাবের বিনিময়; কথার আদান প্রদান; সেটাকে দেখা হয় বিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হিসেবে।

শুধু এই ভাষাই বদলে দিয়েছে জীবনের ধারণা, জগতের ধারণা। আর একারণে মানুষও তাদের ভাষার উৎস জানতে প্রাণান্ত প্রচেষ্টা জারি রেখেছে। হচ্ছে গবেষণা।

বর্তমানে পৃথিবীতে মানুষ সাড়ে ছ’হাজারের মতো ভাষায় কথা বলে। কিন্তু এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন ভাষা কোনটি?

সবচেয়ে পুরনো ভাষার নাম জানতে চাইলে আমরা অনেকেই ভাবি ব্যাবিলনীয়, সংস্কৃত কিম্বা মিশরীয় ভাষার কথা । কিন্তু গবেষকেরা- বলছেন এসব ভাষা তার ধারে-কাছেও নেই।

সাধারণত মানুষ যে ভাষা ব্যবহার করে তার বয়স ছ’হাজার বছর পুরনো। কিন্তু ভাষার প্রকৃত উৎস যদি খুঁজে দেখতে হয় তাহলে অন্তত ৫০ হাজার বছর পেছনে ফিরে যেতে হবে।

বহু ভাষাবিজ্ঞানী মনে করেন, ভাষার ইতিহাস আসলে ছ’হাজার বছরের চেয়েও অনেক আগের।

নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাগি টলারম্যান এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানব বিবর্তন বিভাগের শিক্ষক ও নৃবিজ্ঞানী রবার্ট ফোলি গবেষণায় দেখেছেন- ভাষার উৎপত্তি পাঁচ লাখ বছর আগেও হতে পারে।

পৃথিবীতে যতো ভাষা আছে সেগুলোর চরিত্র আলাদা আলাদা হলেও এটাও সম্ভব যে বর্তমানে সব ভাষাই একজন পূর্বপুরুষের কাছ থেকে এসেছে।

ভাষার এই তালিকার বাইরেও হয়তো অন্যান্য ভাষাও থাকতে পারে, কিন্তু আজকের দিনে যেসব ভাষায় কথা বলতে শোনা যায় সেগুলোর সবই সম্ভবত একই ভাষা থেকেই বিবর্তিত হয়েছে।

মানবজাতির শুরুর দিকের ভাষা নিয়ে যখন কথা হচ্ছে, তখন আমরা কি বলতো পারবো তখন মানুষের মুখ থেকে প্রথম কোন শব্দটি উচ্চারিত হয়েছিল?

মানব ইতিহাসের শুরুর দিকে যে শব্দগুলো চালু ছিল বলে ধারণা করা হয় সেগুলোর অর্থ হতে পারে ‘ঈগল’, ‘চিতা’ অথবা ‘দেখো।’ অনেকে মনে করেন, আমাদের পরিবেশের আশেপাশে সহজ ও সুনির্দিষ্ট কোন জিনিসই হয়তো মানুষের মুখ থেকে প্রথম এসেছিল।

আরেকটি তত্ত্ব হচ্ছে প্রথম দিককার শব্দগুলোর মধ্যে এমন শব্দগুলোই ছিল যেগুলো আমরা এখন সবসময় ব্যবহার করি। যেমন: ইশ, হেই, ওয়াও, থ্যাংকস, গুডবাই- এ ধরনের শব্দ।

এসব শব্দ প্রায় সব ভাষাতেই আছে। কিন্তু এগুলোর মধ্যে মিল হচ্ছে যে এসবের কোনো ব্যাকরণ নেই।

মানবজাতির শুরুতে কথা বলা শুরু হয়েছিল একে অপরকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি খাদ্য গ্রহণ করতে গিয়েও।

বিজ্ঞানীদের ধারণা- খাদ্য গ্রহণের তাড়না এবং বেঁচে থাকার চেষ্টার কারণে মানুষের মধ্যে একে অপরকে জানানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছিল।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, একসাথে মিলে কাজ করার ক্ষমতা থেকেও ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে জোটবদ্ধ হওয়া এবং চারপাশে কী হচ্ছে সেটা জানার চেষ্টা থেকে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads