বিতর্ক যেন বিপিএলের পিছু ছাড়ছেই না। ঢাকা ও সিলেট পর্বের বিতর্কের নানা ধাপ পেরিয়ে চট্টগ্রামে তা পেয়েছে নতুন মাত্রা। পারিশ্রমিক না পাওয়ার অভিযোগ তুলে নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ আগে অনুশীলন বাতিল করেছে দুরন্ত রাজশাহী।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই পারিশ্রমিক না পাওয়ার খবর আসছিল গণমাধ্যমে। চট্টগ্রাম পর্ব শুরুর আগে রাজশাহী অনুশীলন বাতিল করায় সেটা চলে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রে। টুর্নামেন্ট প্রায় মাঝপথে চলে এলেও এখনও টাকা পাননি রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। খুলনা টাইগার্স ও চিটাগং কিংস দল থেকেও শোনা গেছে একই অভিযোগ। তবে এই দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে মিলেছে সমাধানের আশ্বাস।
চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বুধবার সকাল ১০টায় অনুশীলন শুরুর কথা ছিল রাজশাহীর। কিন্তু পৌনে দশটার দিকে তাদের মিডিয়া বিভাগ জানায়, অনুশীলন বাতিল করে বিশ্রামের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।
তবে পরে জানা যায় ভিন্ন খবর! এখনও পর্যন্ত পারিশ্রমিকের এক টাকাও না পাওয়ায় অনুশীলন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্রিকেটাররা। এমনকি সমাধান না পেলে শুক্রবার সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ম্যাচও না খেলার হুমকি দিয়েছেন তারা।
এই খবরে দুপুর থেকেই টিম হোটেলের সামনে ভিড় জমান সংবাদকর্মীরা। কিন্তু সারা দিনেও দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বার্তা দেয়নি। দবে দলটির কয়েকজন ক্রিকেটারের কাছ থেকে জানা যায়, ছয় ম্যাচ খেলে ফেললেও বেশিরভাগ স্থানীয় ক্রিকেটার পারিশ্রমিকের কোনো টাকা পাননি। এমনকি গত ১০ দিনের দৈনিক ভাতাও (ডিএ) দেওয়া হয়নি! বিদেশি ক্রিকেটার ও কোচিং প্যানেলের সদস্যদের ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক অবশ্য দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাজিটি।
বিপিএলের পারিশ্রমিক নীতিমালা অনুযায়ী, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে পারিশ্রমিকের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। টুর্নামেন্ট চলাকালে দিতে হবে আরও ২৫ শতাংশ অর্থ। আর খেলা শেষ হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দিতে হবে বাকি ২৫ শতাংশ। কিন্তু এবার বেশিরভাগ দল এই নিয়মের তোয়াক্কা করছে না।
রাজশাহীর পারিশ্রমিক নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে খুলনা ও চিটাগং দলের একাধিক ক্রিকেটারের কাছ থেকেও পাওয়া যায় একই অভিযোগ। বৃহস্পতিবার নিজেদের শহরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগের দিন অনুশীলনও করেনি চিটাগং।তবে সেটি বকেয়া পারিশ্রমিকের কারণে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিটাগংয়ের প্রতিপক্ষ খুলনা। আগের দিন পুরো দমে অনুশীলন করেছেন খুলনার ক্রিকেটাররা। পরে অভিযোগ পাওয়া যায়, এখনও পারিশ্রমিক পাননি দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্ণধার ইকবাল আল মাহমুদ বলেছেন, পরবর্তী ম্যাচের আগেই ৫০ শতাংশ অর্থ পেয়ে যাবেন সব ক্রিকেটার।
পারিশ্রমিকের প্রসঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নিয়ম না মানার বিষয়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এসব নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য জানার জন্য দিনভর অপেক্ষা করেছে সংবাদকর্মীরা। এর মধ্যেই পাঁচ দলের টিম হোটেল র্যাডিসন ব্লুতে আসেন বিসিবি সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ। তবে এর সঙ্গে পারিশ্রমিক বিষয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রস্তুতি দেখতে বুধবার চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা ছিল তার। পারিশ্রমিক সমস্যার খবর আসায় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে বসতে পারেন বলে আভাস মিলেছে।