কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় জোট সরকার থেকে প্রধান শরিক দল পার্টি ফর ফ্রিডম (পিভিভি) সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ভেঙে গেছে নেদারল্যান্ডস সরকার। এ পরিস্থিতিতে নিজ পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও নির্বাচন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী ডিক শুফ।
৩ জুন জোট সরকার ভেঙে যাওয়ার পরই নির্বাচনের ঘোষণা দেন ডিক শুফ। তবে নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে তার দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
২৬ মে অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে ১০ দফা দাবি জানিয়েছিলেন দেশটির অতি-ডানপন্থী, অভিবাসনবিরোধী ও ইসলামবিরোধী রাজনীতিবিদ এবং পিভিভির প্রধান নেতা খেয়ার্ট ভিল্ডার্স৷ অন্যথা সরকার ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। ৩ জুন সমর্থন প্রত্যাহারের পথেই হাঁটে তার দল।
সরকার ভেঙে দিয়ে দিয়ে ডিক শুফ বলেছেন, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ডাচ রাজার কাছে ভিল্ডার্সের পার্টি ফর ফ্রিডম মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র পেশ করবেন। তবে জোটের অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়েই তিনি নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
“আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে আমাদের স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সুরক্ষায় আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়ার মনোভাব প্রয়োজন।”
যে কারণে সমর্থন প্রত্যাহার
অনিয়মিত অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের শরিক দলগুলোর সঙ্গে মতভিন্নতার কারণেই মূলত বেরিয়ে গেছেন ভিল্ডার্স ও তার দল পার্টি ফর ফ্রিডম (পিভিভি)।
মাইক্রো ব্লগিং সাইট ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে অতি ডানপন্থী এই নেতা লিখেছেন, “আমাদের আশ্রয় পরিকল্পনার জন্য কোনো উদ্যোগ নেই। জোট চুক্তির কোনো সমন্বয় নেই। পিভিভি জোট ছেড়ে যাচ্ছে।”
৩ জুন ইসলামবিরোধী এই নেতা সাংবাদিকদের বলেন, “আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া, সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়া এবং আশ্রয় স্থগিত করার একটি পরিকল্পনা আমি পেশ করেছিলাম। আমি জোট সরকারের শরিকদের এই প্রস্তাব মেনে নিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা তা মেনে নেননি। ফলে সরকারের প্রতি আমাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।”
ভিল্ডার্স বলেন, “আমি নেদারল্যান্ডসের পতনের জন্য নয়, বরং কঠোরতম আশ্রয় নীতির পক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছি।”
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত দেশটির সাধারণ নির্বাচনে সবাইকে অবাক করে দিয়ে সর্বোচ্চ আসন পায় ভিল্ডার্সের নেতৃত্বাধীন অভিবাসনবিরোধী দল পার্টি ফর ফ্রিডম। ১৫০টি আসনের মধ্যে ৩৭টি জিতে নেয় তার দল। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় দীর্ঘ অপেক্ষার পর চার দলীয় সরকার গঠিত হয়।
জোট সরকারে থাকা অন্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে ডানপন্থী পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি, সংস্কারবাদী নিউ সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট এবং জনপ্রিয় ধারার ফার্মার্স সিটিজেনস মুভমেন্ট।