ভাষার মাসের একুশে বইমেলা এবার নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরে এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। এখন সেই সিদ্ধান্ত থেকেও পিছু হটল। তবে বাঙালির প্রাণের এই মেলা কবে হবে, তাও জানাতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিজুড়ে অমর একুশে বইমেলা হয়ে আসছে গত চার দশক ধরে। স্বাধীনতার পর এর শুরুটা অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও পরে বাংলা একাডেমি যুক্ত হয়ে তাতে আনুষ্ঠানিকতা দেয়।
একুশের এই বইমেলা ঋণী থাকবে মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহার কাছে। এই প্রকাশক স্বাধীনতার পর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠান চলার সময় সেখানে বই বিক্রি শুরু করেন।
১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি বইয়ের স্টল বসানোর অনুমতি পান তিনি। তার দেখাদেখি আরও প্রকাশনা সংস্থা ১৯৭৭ সালে সেখানে বই বিক্রি শুরু করে।
১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি একে বইমেলায় রূপ দেয়। তার পরের বছর বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি যুক্ত হয় এই মেলার সঙ্গে।
বাংলা একাডেমি ১৯৮৪ সালে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলার আয়োজন শুরু করে। ২০২১ সালে মেলার নাম হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর বইমেলা নিয়ে ভাবনায় পড়ে বাংলা একাডেমি।
পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি ফেব্রুয়ারিতে ভোটের ডামাডোলেরে মধ্যে মেলা না করার সুপারিশ জানালে বাংলা একাডেমি বইমেলার সময় ডিসেম্বরে এগিয়ে আনে।
গত সপ্তাহে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে বইমেলা শুরু হয়ে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
কয়েক দিনের মাথায় রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্তের আলোকে বইমেলা বিষয় সিদ্ধান্ত স্থগিতের কথা জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকব মোহাম্মদ আজম।
একাডেমির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২১ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অমর একুশে বইমেলা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তার ভিত্তিতে বইমেলা ২০২৬-এর যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা স্থগিত করা হলো।
প্রকাশক ও অন্য অংশীজনদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে নতুন তারিখ ঠিক করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
কবে নাগাদ মেলা হতে পারে- জানতে চাইলে মোহাম্মদ আজম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বইমেলা নির্বাচনের আগে করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা পরবর্তী তারিখ চূড়ান্ত করে জানাব।”