ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার ‘ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রাম’ বাতিল করলে প্রযুক্তি জায়ান্টটিকে জরিমানা করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশন।
মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ দেন যে তারা ফ্যাক্টচেকের পরিবর্তে কমিউনিটি নোট ব্যবহার করবে।
তবে জাকারবার্গের ওই ঘোষণার পর নড়েচড়ে বসেছে ইউরোপের দেশগুলো; এ ধরনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে তারা।
এরই মধ্যে মেটাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রাম বন্ধের মতো পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
ইইউ কমিশনে প্রযুক্তিবিষয়ক মুখপাত্র থমাস রেগনিয়ার জার্মান রেডিও স্টেশন এমডিআরকে বলেছেন, যদি মেটা ইইউর ডিজিটাল পরিষেবা আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হয়, তবে তারা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করতে পারেন। এসব বড় প্রতিষ্ঠান যেখানেই থাকুক না কেন, ইইউতে তাদের পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলতে হবে।
জার্মানির প্রযুক্তিমন্ত্রী ভলকার ভিসিং বলেছেন, এ ব্যাপারে তিনি ইইউ কমিশনের ওপর আস্থা রাখছেন। কমিশন মেটার কর্মকাণ্ড ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করবে। প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
জার্মানির পরিবেশবাদী সবুজ দলের প্রধান এবং দেশটির পরিকল্পনা ও জলবায়ু সুরক্ষাবিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক হামবুর্গে এক নির্বাচনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, স্বাধীনতা মানে শাসনহীনতা নয়, উভয় বিষয় একসঙ্গে থাকা দরকার। এটি গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ভার্চ্যুয়াল পরিসরেও তা থাকা উচিত। তাই জাকারবার্গ যা করছেন, একে তিনি স্বাগত জানাতে পারছেন না।
জার্মানির সামাজিক গণতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক ম্যাথিয়াস মিয়ার্স মেটার পরিকল্পনাকে ‘আশঙ্কাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, “ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তি বৃদ্ধির সময় ফ্যাক্টচেকারগুলোকে দূরে সরিয়ে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, ভুয়া খবর স্বাধীন মতপ্রকাশের পথ নয়; বরং তা আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ করে।”
জাকারবার্গ এখন ইলন মাস্ক বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন ম্যাথিয়াস মিয়ার্স।
তিনি বলেন, “এ ধরনের ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রাম বাতিল হলে তা আমাদের আইনের সঙ্গে কতটা সাংঘর্ষিক, বিষয়টি আমাদের পরীক্ষা করতে হবে।”
ম্যাথিয়াস মিয়ার্স আশা করেন, ইইউ কমিশন ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রামের প্রযোজ্য নিয়মগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। মেটা বা এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অবশ্যই দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। তাদের এমন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম দরকার, যা সমাজের সম্মান, তথ্য ও গণতন্ত্র রক্ষা করে।