“আপনার যদি টাকা থাকে, তাহলে দল নেবেন। টাকা না থাকলে দল নেবেন না। সহজ ব্যাপার। এমনই হওয়া উচিত,” বিপিএলের পারিশ্রমিক সমস্যা নিয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন ফরচুন বরিশালের দাভিদ মালান। এই ব্যাপারগুলো অজানা থাকার কথা নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্তা ব্যক্তিদের। তারপরও কীভাবে রাজশাহী ফ্র্যঞ্চাইজি পেল শফিক রহমানের ভ্যালেন্টাইন গ্রুপ? যথেষ্ট সময় না পাওয়ার অজুহাত দিলেও যথেষ্ট যাচাই-বাছাই না করার কথা স্বীকার করে নিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন।
রান রেটে খুলনা টাইগার্সের পেছনে পড়ায় বিপিএলে শেষ চারের আগেই থেমেছে রাজশাহীর যাত্রা। তবে তাদের নিয়ে চর্চা চলতে পারে দীর্ঘদিন। ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্ণধার শফিক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক সমস্যার সমাধান না মিললে আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
চট্টগ্রাম পর্ব দিয়ে প্রকাশ্যে আসে রাজশাহীর ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক সমস্যা। শুরুতে পুরো দল অনুশীলন বয়কট করে। পরে ম্যাচ খেলায় আপত্তি জানিয়ে টিম হোটেলেই থেকে যান বিদেশি ক্রিকেটাররা। পারিশ্রমিকের চেক বাউন্স হয়েছে একাধিকবার।
পারিশ্রমিক পরিশোধে ভ্যালেন্টাইন গ্রুপকে সময় দিয়েছে বিসিবি। কিন্তু জটিলতা কাটেনি এখনও। পারিশ্রমিক ও দেশে ফেরার বিমানের টিকেট না দেওয়ায় হোটেলে আটকা দলটির বিদেশি ক্রিকেটাররা!
তাই শনিবার ফের বিসিবিতে ডাক পড়ে শফিক রহমানের। এবার বিসিবি কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনিই বলেন, রাজশাহীকে আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
“আমি আজকে (শনিবার) সরাসরি রাজশাহীর মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদেরকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, পারিশ্রমিক সমস্যার সমাধান করবেন। আমরা বলে দিয়েছি, তিনি যদি তা (সমাধান) করতে ব্যর্থ হন বা না করেন, তাহলে পরবর্তীতে আমরা আর কথা বলার মধ্যে থাকব না। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
দুর্বার রাজশাহী যে চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে আসর শেষ করেছে তাতে তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি পাওয়া নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। কেন তাদের দল পরিচালনা করতে দিয়েছে বিসিবি? এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নেন বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল।
“আমার মনে হয়, আমরা যথেষ্ট ভালোভাবে বিচার-বিবেচনা করিনি এই ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার ক্ষেত্রে। তাদের আর্থিক সক্ষমতা, অভিজ্ঞতার ব্যাপারে, যতটুকু হিসেব নিকেশ করা দরকার ছিল, এই বিষয়গুলো যথাযথ যাচাই-বাছাই না করে বোধহয় তাদের অন্তর্ভুক্ত করেছি। যার ফলশ্রুতিতে এমন একটা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।”
বিসিবি প্রধান হয়ে আসার পর ফারুক বলেছিলেন, তিনি নিজে যাচাই-বাছাই করে ফ্র্যাঞ্চাইজি ঠিক করবেন। এখন তিনি বলছেন, খুব বেশি বিকল্প ছিল না!
“(ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার ক্ষেত্রে) আমার অপশন খুব বেশি ছিল না। আমার সঙ্গে সদস্য সচিব ছিল। আরও কয়েকজন ছিল। (বিপিএল আয়োজনের জন্য) আমাদের চাপ ছিল না। তবে আমরা ধারাবাহিকতা রক্ষা করার চেষ্টা করেছি।… রাজশাহী যেটা করেছে, এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না, একটা টুর্নামেন্টকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য।”