চলতি বছর চীনে মাদক-সংক্রান্ত অভিযোগে কানাডার চার নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কানাডার কর্তৃপক্ষ।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জলি বুধবার সাংবাদিকদের জানান মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া চারজনই দ্বৈত নাগরিক ছিলেন এবং পরিবারের অনুরোধে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
তিনি এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটি “অপরিবর্তনীয় এবং মৌলিক মানবিক মর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন”। কানাডার ওই চার নাগরিককে ক্ষমা করার জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ জানিয়েছিলেন বলে সাংবাদিকদের জানান জলি।
বিবিসি জানিয়েছে, বেইজিং সংশ্লিষ্ট কানাডিয়ান নাগরিকদের ‘অধিকার ও স্বার্থ পুরোপুরি নিশ্চিত করেছে’ জানিয়ে চীনা দূতাবাস কানাডা সরকারকে চীনের বিচারিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
কানাডায় চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, কানাডিয়ার নাগরিকদের অপরাধের প্রমাণ ‘শক্ত এবং পর্যাপ্ত’ ছিল এবং বিষয়টি নিয়ে কানাডাকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা বন্ধ’ করার আহ্বান জানান তিনি।
চীন দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকার করে না এবং মাদক-সংশ্লিষ্ট অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলি বলেছেন, তিনি কয়েক মাস ধরে এই মামলাগুলো ‘খুব কাছ থেকে’ অনুসরণ করছিলেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে এই মৃত্যুদণ্ড ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন।
কানাডিয়ান সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার মুখপাত্র শার্লট ম্যাকলিওড বলেছেন, কানাডা এই ব্যক্তিদের জন্য বারবার ক্ষমার আহ্বান জানিয়েছে এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে এটি করেছে এবং সব ক্ষেত্রে সর্বত্র মৃত্যুদণ্ডের বিধানের বিরোধিতায় অটল রয়েছে।
চীন মাদক, দুর্নীতি এবং গুপ্তচরবৃত্তির মতো গুরুতর অপরাধে মৃত্যুদণ্ড আরোপ করে। মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা গোপন রাখা হলেও, মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে, চীনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার বিশ্বে সর্বোচ্চ।
এর আগে ২০১৯ সালে কানাডিয়ান নাগরিক রবার্ট লয়েড শেলেনবার্গকে চীনে মাদক পাচারের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল চীনের আদালত। ওই ঘটনায় কানাডার পক্ষ থেকে নিন্দা জানানো হয়েছিল। তবে চলতি বছর চীনে যে চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, তাদের মধ্যে শেলেনবার্গ ছিলেন না।
২০১৮ সালে কানাডা চীনা টেলিকম নির্বাহী মেং ওয়ানঝোকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যর্পণের অনুরোধে আটক করার পর থেকে কানাডা ও চীনের সম্পর্কে শীতলতা নেমে আসে। এরপরই চীন দুই কানাডিয়ানকে গ্রেপ্তার করলেও তাদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।