বাংলাদেশের গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক।
বুধবার ভোরের ওই ঘটনার পর সেখানে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তুরাগ তীরবর্তী রাজধানী ঢাকার অংশে সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ।
পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িদের ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই।
দৈনিক প্রথম আলো পুলিশ ও স্থানীয়দের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে আগে থেকে অবস্থান করছিলেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। এর মধ্যে বুধবার ভোর ৩টার দিকে মাওলানা সাদের অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে ঢুকলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
যদিও বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের জন্য দুই পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, কামারপাড়া থেকে স্লুইচ গেট পর্যন্ত সড়কে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় রাত সাড়ে তিনটার দিকে জোবায়েরপন্থীরা ‘ইট পাটকেল, জলন্ত মশাল’ নিয়ে হামলা করে বলে সাদপন্থিদের দাবি।
জুবায়েরপন্থিরা দাবি করছেন, ইজতেমার মাঠে অবস্থানকালে রাত সাড়ে তিনটায় ‘ছুরি, ক্ষুর, হাতুড়ি, ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় সাদপন্থিরা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে চার জন নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন, হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই।
মামলার পর জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বরেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।
এদিকে ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালন করেন কাকরাইল মারকাজের মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা। এরপর ইজতেমা মাঠে ২০ ডিসেম্বর থেকে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা।
তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষের বিরোধের কারণে গত কয়েকবছর ধরেই দুই পর্বে হয়ে আসছে টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন।