রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও সংখ্যালঘু নেতাকে স্ত্রীসহ হত্যা

হত্যার খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
হত্যার খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় এক মুক্তিযোদ্ধা এবং তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার খবর মিলেছে।

রোববার সকালে কুর্শা রাহিমাপুর ইউনিয়নের খিয়ারপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ, যা নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইন।

নিহত মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) স্থানীয় চাকলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়ের বয়স ৬০ বছর।

অবসরের পর যোগেশ চন্দ্র রায় তারাগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

ভোরে ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে সাড়া না পেলে প্রতিবেশী দীপক চন্দ্র রায় মই বেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢোকেন। পরে রান্নাঘরে সুবর্ণা রায় এবং শোবার ঘরে যোগেশ চন্দ্র রায়ের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেন তিনি।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে দম্পতি ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। তাদের দুই ছেলে পুলিশে চাকরি করেন। হত্যার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক দীপক চন্দ্র রায়, যার পরিবার ৪০–৫০ বছর ধরে এই বাড়ির দেখভাল করে আসছেন, বলেছেন, সকালে কাজ করতে গিয়ে তার সন্দেহ হয়।

“ডাকাডাকির পরও কোনো শব্দ না পেয়ে আমি অন্যদের ডাকি। পরে মই বেয়ে ভেতরে গিয়ে দেখি কেউ নেই। ডাইনিংরুমের দরজা খুলে তাদের লাশ পড়ে থাকতে দেখি।”

তারাগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক উপন চন্দ্র রায় বলেন, শনিবার গভীর রাতের কোনো এক সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।

তিনি জানান, “যোগেশ চন্দ্র রায় ছিলেন এলাকার সম্মানিত শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা।”

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, যোগেশ চন্দ্র রায় ২০১৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অবসর নেন। বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় জয়পুরহাটে, আর ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায় ঢাকায় পুলিশে কর্মরত। এই দম্পতি গ্রামের বাড়িতে একাই থাকতেন।

সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ভিড় করছেন। পরে পুলিশ, ইউএনও মোনাব্বর হোসেন এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

তারাগঞ্জ থানার এসআই আবু ছাইয়ুম বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, দু’জনকেই মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে তদন্ত চলছে।”

আরও পড়ুন