শুক্রবারের পত্রিকা : ‘৬ মাসে পুলিশের ওপর ২২৫ হামলা, ‘মব’ নিয়ে উদ্বেগ’

Untitled-2

বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে শুক্রবার দেশের সংবাদপত্রগুলো তাদের প্রচ্ছদ সাজিয়েছে। এতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং ‘মব জাস্টিস’ নিয়ে সংবাদ গুরুত্ব পেয়েছে। এর বাইরে দ্বৈত নাগরিকত্বে বাংলাদেশি আগ্রহ, রোহিঙ্গাদের খাদ্য সংকটে পড়ার শঙ্কা ও মূল্যস্ফীতি কমার খবরও গুরুত্ব পেয়েছে সংবাদপত্রগুলোতে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক শুক্রবার কোন সংবাদপত্রের কী শিরোনাম এসেছে।

প্রথম আলো

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘৬ মাসে পুলিশের ওপর ২২৫ হামলা, ‘মব’ নিয়ে উদ্বেগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ছয় মাসে পুলিশের ওপর এ ধরনের ২২৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটানো হয়েছে উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণে বা ‘মব’ তৈরি করে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ২২৫টি ঘটনার মধ্যে ৭০টি বড় ধরনের আলোচনা তৈরি করে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ২৪টি, অক্টোবরে ৩৪, নভেম্বরে ৪৯, ডিসেম্বরে ৪৩, জানুয়ারিতে ৩৮ এবং ফেব্রুয়ারিতে ৩৭টি হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের এই পরিসংখ্যানের বাইরেও সড়কে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বিরূপ আচরণের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মব তৈরি করে হামলাগুলো করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পেশাদার অপরাধী ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও মব তৈরিতে ভূমিকা রাখছেন। এই মব তৈরি করে শুধু পুলিশের ওপরেই হামলা হচ্ছে তা নয়, বরং কোথাও কোথাও সাধারণ মানুষের ওপরও হামলা বা গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে।

কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্বৈত নাগরিকত্ব নেওয়া সংক্রান্ত খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘দ্বৈত নাগরিকত্বে ঝোঁক বাড়ছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিকদের ১০১টি দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আইনেই এ সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মন্ত্রী-এমপিরা এ সুযোগ না পেলেও তাঁদের অনেকেই আইন ভেঙে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বড় কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।

আবার যাঁদের দ্বৈত নাগরিকত্ব নেওয়ার বৈধতা রয়েছে, তাঁদের অনেকেই এ সুযোগ নিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। দ্বৈত নাগরিকত্বের বৈধ-অবৈধতার মধ্যেও বাংলাদেশি নাগরিকদের ঝোঁক বাড়ছে দ্বৈত নাগরিকত্বে। এরই মধ্যে দ্বৈত নাগরিকত্বের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আর সরকারের কাছ থেকে সনদ নেওয়া দ্বৈত নাগরিকের সংখ্যাও ৩৪ হাজারের বেশি।

সনদ নেওয়া দ্বৈত নাগরিকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়েছেন ১৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সমকাল

সহায়তা কাটছাঁট হওয়ায় বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা খাদ্য সংকটে পড়তে পারে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘টান পড়বে রোহিঙ্গাদের খাবারে, বিপর্যয়ের শঙ্কা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গার খাবার জোগাতে সামনে আসছে কঠিন সময়। খাদ্য সংকটের তীব্র ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে তারা। জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এরই মধ্যে খাদ্য সহায়তার পরিমাণ অর্ধেক কাটছাঁট করার ঘোষণা দিয়েছে। মাথাপিছু রেশন ৬ ডলারে নামিয়েছে তারা, যা আগে ছিল ১২ দশমিক ৫ ডলার। খাদ্য সহায়তা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার চিঠি বুধবার পেয়েছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়।

এ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ভয়ানক সংকটে পড়ার শঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। স্বাস্থ্য ও পুষ্টিহীনতার পাশাপাশি ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলায়ও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও পাচারের ঘটনায় রোহিঙ্গাদের জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা আরও বাড়বে। পুরো পরিস্থিতিকে বেশ উদ্বেগজনক বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে আগে থেকেই নানামুখী সংকটে বাংলাদেশ। অনেক দেনদরবারের পরও তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না। যৌথ সাড়াদান কর্মসূচির (জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান-জেআরপি) আওতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। ডব্লিউএফপির আওতায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। তবে প্রতিবছরই প্রতিশ্রুত সহায়তার চেয়ে বরাদ্দ কম আসছে। এমন বাস্তবতায় নতুনভাবে রোহিঙ্গা প্রবেশ ও বাজেট কাটছাঁট বাংলাদেশের জন্য নতুন চাপ তৈরি হতে যাচ্ছে।

ইত্তেফাক

রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনের কার্যক্রমের অগ্রগতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘৩২ দলের কাছে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি ও জামায়াতসহ মোট ৩২টি রাজনৈতিক দলের কাছে ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের হার্ডকপি পাঠিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’। প্রতিটি প্রতিবেদনের সঙ্গে কমিশন একটি করে চিঠিও পাঠিয়েছে দলগুলোকে। চিঠিটি মালটিপল চয়েস কোয়েশ্চেন (এমসিকিউ) ধাঁচের।

প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে ‘একমত’, ‘আংশিক একমত’ এবং ‘ভিন্নমত’-এই তিনটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে। এছাড়া সংস্কার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সময় সম্পর্কে পাঁচটি বিকল্প দিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে দলগুলোকে লিখিত মতামত জানাতে অনুরোধ করেছে কমিশন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকার সূত্রে জানা গেছে, ১৩ মার্চের মধ্যে দলগুলোর কাছ থেকে মতামত পাওয়ার পর সংলাপের আয়োজন করা হবে। রোজার ঈদের আগেই দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংলাপে বসবে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন এই কমিশন। সেক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত এবং নবগঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ (এনসিপি) উল্লেখযোগ্য দলগুলোর সঙ্গে কমিশন এককভাবে সংলাপে বসবে। আর যেসব দল নিজেরা অন্য কয়েকটি দল নিয়ে জোটবদ্ধ, তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবেই সংলাপ হবে।

যুগান্তর

ভারতকে ফ্যাসিস্টদের অভয়ারণ্য হিসেবে আখ্যায়িত করে এক সংবাদকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘ফ্যাসিস্টদের অভয়ারণ্য ভারত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন শহরে নির্বিঘ্ন আশ্রয়ে থেকে বাংলাদেশ ঘিরে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা। সেখানে বসেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে কলকাঠি নাড়ছেন। কলকাতার মাটি অভয়ারণ্য বানিয়ে তারা বাংলাদেশকে অগ্নিগর্ভ করে তোলার চেষ্টা করছেন।

এ লক্ষ্যে ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরের চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, ভাড়াটে কিলার, মাদক ব্যবসায়ী, সোনা কারবারি, সীমান্তবর্তী এলাকার চিহ্নিত স্মাগলার, সশস্ত্র সর্বহারা গ্রুপের সদস্যসহ বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে এই নেতারা যোগাযোগ রাখছেন। তাদের ইশারায় অশান্ত হয়ে উঠছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। সংক্রিয় হচ্ছে নিষিদ্ধ সর্বহারা গ্রুপ। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ পার্বত্য অঞ্চল অশান্ত করার পেছনেও আছে তাদেরই হাত। এসব করতে বিনিয়োগ করছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। যা গত ১৬ বছরে অবৈধভাবে আয় করেছেন।

বণিক বার্তা

যুক্তরাষ্ট্রে উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা।  ‘আইসিডিডিআর,বির শীর্ষ অর্থের জোগানদাতা ছিল ইউএসএআইডি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ডায়রিয়া ও কলেরা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সংক্রামক বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধরা হয় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশকে (আইসিডিডিআর,বি)। বিভিন্ন দাতা সংস্থার অনুদান, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ও নিজস্ব কিছু আয় থেকে পাওয়া তহবিলের ভিত্তিতে পরিচালিত হয় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম। এতদিন সংস্থাটিতে অনুদান হিসেবে সবচেয়ে বেশি অর্থ এসেছে মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) থেকে। আইসিডিডিআর,বি-তে দাতাদের অর্থায়নকৃত তহবিলের প্রায় এক-পঞ্চমাংশেরই জোগান দিয়েছে ইউএসএআইডি।

তবে আইসিডিডিআর,বি-তে এখন মার্কিন সংস্থাটির অর্থায়ন স্থগিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ইউএসএআইডির সহায়তা কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেন। এ আদেশের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে বলা হয়, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশ। প্রভাবিত হবে এইচআইভি, পোলিও, এমপক্স, যক্ষ্মা ও বার্ড ফ্লুর মতো রোগ মোকাবেলায় গৃহীত নানা কর্মসূচিও।

নয়া দিগন্ত

লাঞ্ছিত হলে পুলিশকে সর্বোচ্চ শক্তিপ্রয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে– এমন খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘পুলিশ লাঞ্ছিত হলে সর্বোচ্চ শক্তিপ্রয়োগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বেতার বার্তায় ডিআইজি (অপারেশন) মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি সরাসরি বেতারযন্ত্র মারফত নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘এখন থেকে কোনো পুলিশ সদস্য যদি জনসাধারণ কর্তৃক মারধরের শিকার হয় বা লাঞ্ছিত হয় সে ক্ষেত্রে পুলিশ সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করবে এবং প্রতিটি জেলার এসপিরা সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

এমন একটি অডিও বার্তা এসেছে নয়া দিগন্তের হাতে। তবে অডিও রেকর্ডটির বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কোনো কর্মকর্তা স্বীকার করেননি। পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বেতার বার্তায় ডিআইজি (অপারেশন) মো. রেজাউল করিমের কণ্ঠ। তবে এ বিষয়ে জানতে ডিআইজি রেজাউল করিমের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি লাইন কেটে দেন। এরপর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি একটি ট্রেনিংয়ে আছি। আমার কাছে এ ব্যাপারে আরো একজন ফোন করেছিলেন। আমি বিষয়টি অবগত নই।

দেশ রূপান্তর

দেশে মূল্যস্ফীতি কমে আসার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তরও। ‘খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে সুবাতাস’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনীতিতে দুটি বিষয়কে পাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর একটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি, অন্যটি বেকারত্ব। গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতির কশাঘাতে জর্জরিত। কোনো উদ্যোগেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা যাচ্ছিল না। অবশেষে এটি কমতে শুরু করেছে। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে। গত ডিসেম্বরেও যা ছিল প্রায় ১১ শতাংশ। অর্থাৎ, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে পণ্যটি কিনতে ১০০ টাকা লাগত, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেটির দাম হয়েছে ১০৯ টাকা ৩২ পয়সা।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে রয়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ। এটির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ মানুষকে সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছে। বিশেষ করে খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেশি থাকলে মানুষ বেশি সংকটে পড়ে। এখন যদি ধীরে ধীরে এটি কমে আসে তাহলে জনজীবনে স্বস্তি মিলবে। খাদ্য পণ্যে যে মূল্যস্ফীতি কমেছে, তার প্রতিফলন বাজারেও দেখা গেছে। সাধারণত অন্যান্য বছর রোজার কিছুদিন আগে ও রোজা শুরুর পরপর বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এবার তেমন ঘটনা চোখে পড়েনি। ইফতারের প্রধান অনুষঙ্গ খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় কমেছে। এ ছাড়া বেগুন, আলু, পেঁয়াজ, শসাসহ বিভিন্ন কাঁচা পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম। মূল্যস্ফীতি হ্রাসের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সাত শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজকের পত্রিকা

অবৈধ বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্র ফেরত পাঠাবে– এমন খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘ফেরত পাঠাতে ৫০০ জনকে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর সরকার সেখানে অবৈধভাবে অবস্থান করা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে। দেশটিতে ‘অবৈধ’ বাংলাদেশিও আছে বলে অভিযোগ ট্রাম্প প্রশাসনের। এই অভিযোগে বাংলাদেশের নাগরিকদেরও ফেরত পাঠানো শুরু করেছে তারা।

কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে অবস্থানের অনুমতি ও কাগজপত্র না থাকার কারণে বাংলাদেশের ৪০০-৫০০ নাগরিককে ফেরত পাঠানোর জন্য এরই মধ্যে দেশটির সরকার চিহ্নিত করেছে। সেখানে প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিতে ব্যর্থ হলে তাঁদের সবাইকে দেশে ফিরতে হতে পারে।

ফেরত আসা ব্যক্তিদের বিষয়ে কী করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বুধ ও গতকাল বৃহস্পতিবার দুই দফা বৈঠক করেছে। বুধবারের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকালের বৈঠকে অংশ নেন পুলিশের বিশেষ শাখা, ইমিগ্রেশন ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

সংবাদ

বিবিসিকে দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সংবাদ। ‘ভোট করবে কিনা, সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে: মুহাম্মদ ইউনূস’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত তো তিনি নিতে পারেন না। নির্বাচন কমিশন ঠিক করে, কারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

ঢাকায় সরকারি বাসভবন যমুনায় বসে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মুহাম্মদ ইউনুস এসব কথা বলেন।

শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এর পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার যাত্রা শুরু করে। এ বছর ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে আলোচনা চলছে, সে নির্বাচনে শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ অংশ নেবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিচারের প্রক্রিয়া চলছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার আওয়াজও উঠছে।

আরও পড়ুন