মামলা খেল গ্রামীণফোন, ‘অনুমতি না নিয়ে’ গান বিক্রির অভিযোগ

বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিম। ফাইল ছবি
বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিম। ফাইল ছবি


অনলাইনে গ্রামীণফোনের পণ্য ও সেবা বয়কটের প্রচারণার মধ্যেই এবার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্বত্ব সংরক্ষিত গান অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের ছেলে। ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা হয়েছে ইতোমধ্যে।

এক আইনি নোটিশের কার্যকর প্রতিকার না পাওয়ায় এই মামলা দায়ের করা হয়।

শাহ আবদুল করিমের ছেলে ও কপিরাইট উত্তরাধিকারী শাহ নূর জালালের পক্ষ থেকে গত ২৭ আগস্ট পাঠানো আইনি নোটিশে বলা হয় যে, গ্রামীণফোন কোনো অনুমতি বা লাইসেন্স ছাড়াই শাহ আবদুল করিমের কপিরাইটযুক্ত গানগুলো পুনরুৎপাদন, প্রচার, ডিজিটাল মাধ্যমে আপলোড এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেছে।

বিশেষভাবে ‘রঙিলা বাড়ৈ’ এবং ‘কোন মিস্ত্রি নাও বানাইছে’- এই দুটি গান ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন টিভি বিজ্ঞাপন ও ডিজিটাল প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়েছে।

নোটিশে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট অপসারণ, কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের জন্য দুঃখপ্রকাশ এবং প্রতিটি গানের জন্য ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছিল।

গ্রামীণফোন লোগো।

তবে এতে গ্রামীণফোনের প্রতিক্রিয়া সন্তোষজনক না হওয়ায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া বিকল্প উপায় ছিল না বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান শাহ নূর জালালের আইনজীবী রাজিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার ২০ নভেম্বর ঢাকা জেলা জজ আদালতে করা এই মামলায় গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহীসহ মোট ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। দেওয়ানী মামলা নং ৪৫/২০২৫।

আইনজীবী রাজিন আহমেদ বলেন, ‘‘শাহ আবদুল করিমের গান কেবল সংগীত নয়, এগুলো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অংশ। ‘রঙিলা বাড়ৈ’, ‘কোন মিস্তরি নাও বানাইছে’ দুইটি গান ব্যাবহার করেছে গ্রামীণেফোন। অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার কেবল অবৈধ নয়, বরং চরম অসম্মানজনক। আমরা তার উত্তরাধিকার রক্ষায় আইনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাই গ্রহণ করব।”

শাহ আবদুল করিমের ছেলে নূর জালাল বলেন, “আমরা গ্রাম্য মানুষ, বড় কোম্পানির নিয়ম বুঝি না। কিন্তু বাবার গানের কপিরাইট আমাদের। অনেকে গান করেন, সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান যখন বিজ্ঞাপন বা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করে, তখন তাদের অনুমতি নেওয়া উচিত এবং আমাদের ন্যায্য সম্মান, অধিকার ও অংশ দেওয়া উচিত। গ্রামীণফোন তা করেনি, তাই আমাদের মামলা করতে বাধ্য হতে হয়েছে।”

আরও পড়ুন