ট্রাম্পের নির্দেশ অমান্য, হার্ভার্ডের আর্থিক সহায়তা স্থগিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নতুন দাবির কাছে মাথা নত করল না যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। মার্কিন প্রশাসনের দাবি শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীনতা এবং সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

হার্ভার্ডের এই সিদ্ধান্তের পরেই তাদের উপর ‘শাস্তির খাঁড়া’ নামিয়ে এনেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হার্ভার্ডকে ২২০ কোটি ডলারের সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

‘নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স’ জানিয়েছে, ওই ২২০ কোটি ডলারের সাহায্য বন্ধের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ৬ কোটি ডলারের একটি চুক্তিও স্থগিত রাখা হয়েছে।

গত ১৮ মাসে গাজা যুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ হয়। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ করে ট্রাম্প প্রশাসন। এই অভিযোগে গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের ৯ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল চুক্তি ও অনুদান পর্যালোচনা করার কথা বলেছিল। এখন হার্ভার্ডের ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করার কথা জানাল ট্রাম্প প্রশাসন।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার এক প্রকাশ্য চিঠিতে লিখেছেন, গত সপ্তাহে শিক্ষা দপ্তর যে দাবিগুলো করে, তা মানা হলে ফেডারেল সরকারকে হার্ভার্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিত। এই দাবিগুলো জ্ঞানের সাধনা, উৎপাদন ও প্রচারের জন্য নিবেদিত একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে হার্ভার্ডের মূল্যবোধের জন্য হুমকিস্বরূপ।

চিঠিতে অ্যালান গার্বার আরও লিখেছেন, ক্ষমতায় যে দলই থাকুক না কেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী পড়াতে পারবে, কাকে ভর্তি করতে পারবে, কাকে নিয়োগ দিতে পারবে, অধ্যয়ন ও অনুসন্ধানের কোন ক্ষেত্রগুলো অনুসরণ করতে পারবে, তা কোনো সরকারেরই নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত নয়।

ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ডকে সর্বশেষ যে শর্তাবলি পাঠিয়েছিল, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং অধ্যাপকদের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে তথ্যসংগ্রহ করতে বলা হয়েছিল।

একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শে বিশ্বাসীদের প্রভাব যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর থেকে কমে, সে বিষয়েও পদক্ষেপ করতে বলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ এবং পাঠ্যক্রমের ক্ষেত্রেও সরকারি ভাবনাকে গ্রহণ করতে বলা হয়েছে বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

এই শর্তগুলোর মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কী পড়াবে, কাকে ভর্তি করবে, কাকে নিয়োগ করবে, তারা কী বিষয়ে পড়বেন বা গবেষণা করবেন— সেগুলোর উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ অ্যালেনের। এই শর্তগুলি ট্রাম্প প্রশাসনের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না বলেও দাবি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের।

আরও পড়ুন