ইউনূসের অধীনে নয়, ভোট হোক তত্ত্বাবধায়কের অধীনে: শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হলেও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

নিজেকে বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী দাবি করে তিনি বলছেন, তিনি পদত্যাগ করেননি, তবুও দেশবাসীর স্বার্থে নির্বাচন হোক এমনটি তিনি চান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ভার্চুয়ালি দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমরা সর্বদা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। মানুষ ভোট দিলে আছি। নয়তো নাই। ফল যা হবে মেনে নেব। তবে ইউনূস সরকারের অধীনে ভোট হতে পারে না। ভোট হোক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।”

ক্ষমতায় থাকাকালে হাই কোর্ট এক রায়ে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে সংবিধানবিরোধী বলে আখ্যা দেওয়ার পর শেখ হাসিনার সরকার তা বাতিল করে দেয়। তবে ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই হাই কোর্ট পৃথক এক পর্যবেক্ষণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর পক্ষে মত দিয়েছে।

অবশ্য সেই রায় কার্যকর করা হলে এরই মধ্যে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বিদায় নেওয়ার কথা।

আওয়ামী লীগ নেত্রী কেন তারই বাতিল করা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় ভোট চাইছেন- এনিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা।

অনেকেই মনে করছেন, শেখ হাসিনা আশা করছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সরকারের প্রধান কে হবেন এবং সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী হবে তাও বিবেচনায় নিতে হবে।

আওয়ামী লীগ মনে করছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পুরোপুরি বিএনপির হয়ে কাজ করছে। কাজেই ইউনূসকে হটানোই তাদের মূল লক্ষ্য।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন প্রবাসী তারেক রহমান ইতোমধ্যে ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। যদিও এই বিষয়ে তার দলেই তীব্র মতবিরোধ আছে বলে কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত ১০ মে এক নির্বাহী আদেশে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনও দলটির নিবন্ধন স্থগিত রেখেছে।

ফলে আইনতভাবে আওয়ামী লীগের ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে।

শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে প্রশ্ন তোলেন, যে দলটি দেশ স্বাধীন করল, দেশ গড়ে তুলল তাদের বাদ দিয়ে কী করে নির্বাচন হয়?

বিলুপ্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এর আগে দলের ভেতরে চাপের মুখে পড়েছিলেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মদ আলী আরাফাত। সর্বশেষ শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে আওয়ামী লীগের অবস্থান স্পষ্ট হলো বলেই ধরে নেওয়া যায়।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণের পাশাপাশি তার সরকারের সময়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির নানা উদাহরণ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ইউনূস দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। নতুন করে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা দেশের কথা ভেবেছে, দেশের মানুষের কথা ভাবে। জনগণই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার চাবিকাঠি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর:

আরও পড়ুন