বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর শুক্রবার সারাদিন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কাছাকাছি থাকা একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ত এই বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় বিশ্বজুড়ে ফ্লাইটের সময়সূচি বিঘ্নিত হচ্ছে।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, লন্ডনের পশ্চিমাঞ্চলে বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৭০ জন দমকলকর্মী কাজ করছেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণে হিথ্রোতে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটেছে।
দমকল বাহিনী জানিয়েছে, আগুন লাগার কারণ এখনো জানা যায়নি।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুসারে, ইতোমধ্যে অনেক ফ্লাইট অন্য বিমানবন্দরে ডাইভার্ট করা হচ্ছে। কানটাস এয়ারওয়েজের পার্থ থেকে প্যারিসগামী ফ্লাইট এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের নিউইয়র্ক থেকে আসা একটি ফ্লাইট আয়ারল্যান্ডের শ্যাননের দিকে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কিছু ফ্লাইট মাঝ আকাশ থেকে ফিরে যাচ্ছে তাদের উৎসস্থলে।
সান ফ্রান্সিসকো থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট লন্ডনের পরিবর্তে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবতরণ করবে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং ভার্জিন আটলান্টিক তাদের ফ্লাইটগুলো কাছাকাছি গ্যাটউইক বিমানবন্দরে ডাইভার্ট করেছে।
সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়েছে, “আমাদের যাত্রী ও সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিথ্রো বিমানবন্দর ২১ মার্চ রাত ২৩:৫৯ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।” এই সময়ের মধ্যে যাত্রীদের বিমানবন্দরে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই পোস্টে।

অগ্নিকাণ্ডের কারণে হিথ্রো বিমানবন্দরের পাশাপাশি বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
দমকল বাহিনী জানিয়েছে, “দমকলকর্মীরা আশপাশের স্থাপনা থেকে ২৯ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া সতর্কতা হিসেবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল ঘিরে ২০০ মিটার এলাকা কর্ডন করে সতর্কতামূলকভাবে আরও প্রায় ১৫০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ কখন স্বাভাবিক হতে পারে, তা নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেনি কেউ। হিথ্রো বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন বিমানবন্দরের কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বিঘ্ন ঘটবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
ইউরোপজুড়ে এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা ইউরোকন্ট্রোল তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে হিথ্রো বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট অবতরণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না এবং ফ্লাইটগুলোর জন্য ডাইভার্শন পরিকল্পনা রয়েছে।
হিথ্রো বিমানবন্দরের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, হিথ্রো বিশ্বের ব্যস্ততম দুই-রানওয়ের বিমানবন্দরগুলোর একটি, যেখানে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার তিনশ’ টেকঅফ ও ল্যান্ডিং হয়।
ফ্লাইটরাডার২৪-এর মুখপাত্র ইয়ান পেচেনিক বলেন, “হিথ্রো বিশ্বের প্রধান হাবগুলোর একটি। এটি বন্ধ থাকায় বিশ্বজুড়ে এয়ারলাইন্সের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটবে।”