ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এ কেমন আউট?

যেন ইচ্ছে করে আউট হলেন দুই ব‍্যাটসম‍্যান।
যেন ইচ্ছে করে আউট হলেন দুই ব‍্যাটসম‍্যান।

যেন ইচ্ছে করে আউট হলেন দুই ব‍্যাটসম‍্যান। একজন দুইবার সুযোগ পেয়েও ক্রিজে ফেরেননি, আরেকজন সোজা হাঁটা দেন ড্রেসিং রুমের দিকে। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে অদ্ভুত এই দুই স্টাম্পিং আউট জন্ম দিয়েছে অনেক প্রশ্ন।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার মুখোমুখি হয় গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়েও ৫ রানে জিতে যায় গুলশান। জায়গা করে নেয় সুপার সিক্সে।

প্রশ্নবিদ্ধ দুই আউটের একটি শাইনপুকুরের ইনিংসের ৩৬তম ওভারের। নিহাদ-উজ-জামানের বল ক্রিজ ছেড়ে অনেকটা বেরিয়ে খেলার চেষ্টায় টার্নে পরাস্ত রহিম আহমেদ। বল ছিল অনেক বাইরে, কিন্তু তিনি বলের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেননি। বড় শট খেলার চেষ্টাও তার ছিল না, বলের নাগালে না গিয়েই ডিফেন্সের মতো ভঙ্গি করেন শুধু।

পরে আর ক্রিজে ফেরার কোনো তাড়নাই দেখাননি তিনি। সোজা ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা ধরেন শাইনপুকুরের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান।

জয় থেকে তখন ৩৬ রান দূরে ছিল শাইনপুকুর। বাকি ছিল ২ উইকেট।

পরের ঘটনা আরও বেশি দৃষ্টিকটূ ও সন্দেহজনক। ১১ নম্বরে নামা শরিফুল ইসলামের ক্যামিও ইনিংসে ধীরে ধীরে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল শাইনপুকুর।

এর মধ‍্যেই ৪৪তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন নাঈম ইসলাম। প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে বল করেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বলের কাছে যাওয়া বা শট খেলার কোনো চেষ্টাই করেননি ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির। ক্রিজের বাইরে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে বল ছেড়ে দেন না খেলেই!

গুলশানের উইকেটরক্ষক আলিফ হাসান ইমন বল গ্লাভসে নিয়ে প্রথম দফায় স্টাম্পে লাগাতে পারেননি। তখনও ক্রিজে ঢোকার যথেষ্ট সময় ছিল ব্যাটসম্যানের। কিন্তু তিনি সেই চেষ্টাই করেননি। পুরোটা কাছ থেকে দেখলেও ক্রিজের ভেতরে ব্যাট রাখেননি তিনি, বরং যেন অপেক্ষা করছিলেন কখন বেলস ফেলেন কিপার!

ধারাভাষ্যকারের কণ্ঠে তখন বিস্ময়, ‘শকিং! এর আগে আমি কখনও এমন কিছু দেখিনি।’ পরে দ্বিতীয় চেষ্টায় স্টাম্প ভেঙে গুলশানের জয় নিশ্চিত করেন আলিফ।

একাধিকবার সুযোগ পেয়েও সাব্বিরের নিজের উইকেট বাঁচাতে না চাওয়ার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান নিজের ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘সিরিয়াসলি শেইম…!’

ম্যাচ শেষে মাঠে দাঁড়িয়েই গুলশানের প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদকে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ক্রিকেটারদের সঙ্গে লম্বা সময় কথা বলতে দেখা গেছে।

প্রশ্নবিদ্ধ দুই আউটে পাওয়া জয়ে দশ ম্যাচে মোট ১৩ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে গেছে গুলশানের। একই সঙ্গে রেলিগেশন লিগে পড়ে গেছে শাইনপুকুর। অবনমন অঞ্চলের লড়াই এড়াতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না তাদের।

সন্দেহজনক দুই স্টাম্পিং নিয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সমন্বয়ক সাব্বির আহমেদ রুবেল।

“এগুলো পুরোপুরি নির্ভর করে ম্যাচ রেফারির ওপর। আম্পায়াররা তাদের ম্যাচ রিপোর্ট দেবে। ম্যাচ রেফারি একটা রিপোর্ট করবে। এরপর যদি কোনো অভিযোগ আনার বিষয় থাকে, তখন অ্যান্টি করাপশন ইউনিট দেখবে।”

আরও পড়ুন