শেখ হাসিনা-তুলসি গ্যাবার্ড সাক্ষাৎ কতটা সম্ভব?

তুলসি গ্যাবার্ড ও শেখ হাসিনা।
তুলসি গ্যাবার্ড ও শেখ হাসিনা।

মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড দিল্লিতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে দু’রকম ভাষ্য মিলেছে। ভারতের একাধিক গণমাধ্যমকর্মী দাবি করেছেন, তুলসি গ্যাবার্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ হয়েছে। তবে তারা কোনো সূত্র প্রকাশ করেনি। ভারতের মূলধারার গণমাধ্যমেও এই সাক্ষাৎ নিয়ে নেই কোনো প্রতিবেদন।

তবে সোশাল মিডিয়ায় বেশ কিছু পোস্টে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলসির কথা হয়েছে। সেখানে কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার কিছু অংশ তুলেও ধরা হয়।

এদিকে বাংলাদেশের বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তুলসি গ্যাবার্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকের দাবির খবরটি ভুয়া।

সঠিক হোক বা ভুয়া, একটি বিষয় স্পষ্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের সাক্ষাৎ হওয়া বা না হওয়া নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশের মানুষের।

সবাই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন আদৌ শেখ হাসিনা- তুলসি গ্যাবার্ডের সাক্ষাৎ হয়েছে কিনা? আর সাক্ষাৎ যদি হয়েই থাকে তবে কি ভারত বা আমেরিকা সরকার সেই খবর প্রকাশ্যে আনবে? আর কেনই বা সাক্ষাতের খবর মূল ধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ না হয়ে সোশাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে? এসব উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে দ্য সান ২৪

মার্কিন ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের পরিচালক (ডিএনআই) তুলসি গ্যাবার্ড তিন দিনের এক গুরুত্বপূর্ণ সফরে রোববার সকালে দিল্লিতে এসে পৌঁছান। এই সফরে তিনি যেমন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা-প্রধানদের এক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন, তেমনই আলাদা করে একান্ত বৈঠক করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভালের সঙ্গেও।

মার্কিন এই গোয়েন্দা-প্রধান তার ভারত সফরের প্রথম দিন অংশ নিয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানদের একটি হাই-প্রোফাইল সম্মেলন বা সিকিউরিটি কনফারেন্সে, যেটির সভাপতিত্ব করেছেন ভারতের এনএসএ অজিত দোভাল।

এই সম্মেলনে ‘কোয়াড’ জোটের চার শরিকেরই (অস্ট্রেলিয়া, ভারত, আমেরিকা ও জাপান) গোয়েন্দা-প্রধান বা ইনটেলিজেন্স চিফরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী সাতটি দেশের জোট জি-সেভেনের অন্য প্রতিনিধিরাও। যেমন- কানাডার গোয়েন্দা প্রধান ড্যানিয়েল রজার্স, ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সের প্রধান রিচার্ড মুর, নিউজিল্যান্ডের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা প্রমুখ।

সম্মেলনের আলোচ্যসূচি নিয়েও কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছে। তবে মোটামুটি যা জানা যাচ্ছে তা হলো— বিশ্বের এসব দেশ কীভাবে তাদের ‘ইনটেলিজেন্স শেয়ারিং মেকানিজম’ বা গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের পদ্ধতিকে আরও উন্নত ও আধুনিক করে তুলতে পারে, সেটা নিয়েই প্রধানত কথা বলেছেন নানা দেশের গোয়েন্দা-প্রধান বা নিরাপত্তা উপদেষ্টারা।

পরবর্তী তিন দিন (১৭-১৯ মার্চ) ধরে অনুষ্ঠিত হয় স্ট্র্যাটেজিক আলোচনার প্ল্যাটফর্ম ‘রাইসিনা ডায়ালগ’– যুগ্মভাবে যেটির আয়োজন করে ভারতের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তুলসি গ্যাবার্ড অংশ নিয়েছেন এই রাইসিনা ডায়ালগেও।

এই সিকিউরিটি কনফারেন্স ও রাইসিনা ডায়ালগের অবকাশে দিল্লিতে মিস গ্যাবার্ড আলাদা করে বৈঠকে বসেন অজিত দোভালের সঙ্গে।

গত সোমবার সন্ধ্য়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেখা করেন ইউনাইটেড স্টেটস ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স তুলসি গ্যাবার্ডের সঙ্গে। এছাড়া ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে তুলসি আগেই দেখা করেছিলেন।

মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের তিন দিনের ভারত সফরের প্রতিটি মুহূর্ত আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হয়। সেভাবেই প্রতিটি কর্মসূচিতে যোগ দেন। কিন্তু তুলসি গ্যাবার্ডের সোমবারের কর্মসূচিতে দুই ঘণ্টায় কিছু ছিলনা। এই দু’ঘণ্টা তিনি কী করবেন সেই তথ্য কারো জানা নেই। এ কারণে প্রশ্ন ওঠেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার আগে তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কিনা?

শেখ হাসিনা- তুলসি গ্যাবার্ডের সাক্ষাতের খবরের সত্যতা নিয়ে ভারতের চার জন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয় দ্য সান ২৪ এর। এরমধ্যে দু’জন দিল্লির এবং দু’জন কলকাতার সাংবাদিক। এই চার জনই ভারতের স্বনামধন্য গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

তবে দিল্লির দু’জন সাংবাদিক মন্তব্য করলেও নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন। তাদের যুক্তি, বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং খুবই গোপনীয়। তার পরিচয় প্রকাশ পেলে নিজের প্রতিষ্ঠান তো বটেও তথ্যদাতা সূত্রের কাছেও ঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে তাদের।

তাদের একজন ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের (এএনআই) সাংবাদিক, যিনি দিল্লির সাউথ ব্লকের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছেন।

ভারত সরকারের দুটি সচিবালয় সাউথ ব্লক আর নর্থ ব্লক নামে পরিচিত। সাউথ ব্লকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় আছে।

এএনআই এই সাংবাদিক দ্য সান ২৪কে বলেন, “মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান ভারত সফরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। তার বেশিরভাগের তথ্য গণমাধ্যমের সামনে আনা হয়নি। এছাড়া তুলসি গ্যাবার্ডের সফর সূচিতে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগে দুই ঘণ্টার কোনো তথ্য জানা যায় না। সে কারণে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাতের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।”

ওই সাংবাদিক সাউথ ব্লকের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা বিনিময় করে বলেন, “তুলসি গ্যাবার্ডের সব কর্মসূচির তথ্য সাউথ ব্লকেও নেই। যদি শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলসির বৈঠক হয়, সেটি সাউথ ব্লকের জানার কোনো সুযোগ নেই। সেটি হলে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হয়েছে এবং তা অতি গোপনীয়ভাবে।”

তিনি বলেন, “যেভাবে শেখ হাসিনা দিল্লিতে সাত মাস ধরে অবস্থান করলেও তার কোনো খবর যেমন ভারতের গণমাধ্যমে পায়নি, তেমনি সাউথ ব্লকের কাছেও সেই তথ্য নেই। এসব মূলত ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল তদারকি করেন। যতক্ষণ না ভারত সরকার কোনো তথ্য প্রকাশ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ সামনে আনা সম্ভব নয়।”

“তবে কিছু ঘটনার পরম্পরা দেখে বোঝা যায় শেখ হাসিনা- তুলসি গ্যাবার্ডের সাক্ষাৎ হয়েছে এবং সেখানে উপস্থিত ছিলেন অজিত দোভালও। এখন যদি আপনি সূত্র জানতে চান সেটি আমার পক্ষে বলা বা বোঝানো সম্ভব নয়। তবে এটুকু বলতে পারি- শেখ হাসিনা দিল্লিতে আসার অনেক দিন পর ভারত সরকার এতথ্য জানিয়েছিল। কূটনৈতিক এবং বিশেষ কারণে এসব তথ্য গোপন করা হয়। তাছাড়া তুলসি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তার সব কর্মসূচিতে এমনিতিই প্রকাশ করা হয়না। সঙ্গত কারণে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি প্রকাশ করার কোনো কারণ নেই”, যোগ করেন এএনআইয়ের সাংবাদিক।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা বিনিময় করে ওই সাংবাদিক বলেন, “আমি ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেছিলনা শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলসি গ্যাবার্ডের বৈঠক হয়েছে কিনা? তিনি শুধু বলেছেন ‘নো কমেন্ট’। সাক্ষাৎ যদি না হয়ে থাকে তাহলে তিনি সরাসরি বলতে পারতেন হয়নি, কিন্তু তিনি মন্তব্য করতে না চাওয়ার অন্যতম কারণ কিছু একটা হয়েছে যা তিনি বলতে চান না।”

দিল্লির আরেক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয় দ্য সান ২৪ এর। দীর্ঘদিন তিনি দিল্লিতে সাংবাদিকতা করলেও এখন কোথাও চাকরি করছেন না। তবে নিয়মিত কলাম লিখেন। তিনি বাংলাদেশে নিয়ে একাধিক বইও লিখেছেন।

ওই সাংবাদিক বলেন, “শেখ হাসিনা-তুলসি গ্যাবার্ডের সাক্ষাতের খবরটি পুরোপুরি সত্য নয়।”

তার যুক্তি, সাক্ষাৎ হলে মূলধারার গণমাধ্যমে খবর বের হতো।

তবে তিনি এও মনে করেন, অনেকগুলো ঘটনার পরিক্রম দেখে মনে হতে পারে শেখ হাসিনা- তুলসীর সাক্ষাৎ হওয়া সম্ভাব। তবে তার হাতে এবিষয়ে সুনিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।

দিল্লিতে শেখ হাসিনা কোথায় আছেন, কেমন আছেন সেসব খবরও সাত মাসে প্রকাশ্যে আসেনি, তাহলে সে তথ্য কি গুজব? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে ভারত সরকার গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছেন বলে গণমাধ্যমে সে খবর আসেনি।”

কলকাতার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য বলেন, “তুলসি গ্যাবার্ড যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে হিলারি ক্লিনটনের প্রতিপক্ষ। তুলসি আগে ডেমোক্রেটের পলিটিক্স করতেন। রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে বেরিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে আসেন। তার সঙ্গে হিলারি ক্লিনটনের যে বিরোধ, সেই বিরোধের বড় বিষয় হলো- ইসলামী উগ্রপন্থা নিয়ে। তুলসি বারবার বলে এসেছেন, হিলারি যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তাতে ইসলামী সন্ত্রাসবাদ বেড়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ হিলারির বিরুদ্ধে তুলসির এটি পুরোনো অভিযোগ।

তিনি বলেন, “হিলারি ক্লিনটন ইউনূস আর তথাকথিত সমন্বয়দের বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন। সবটাই জানেন তুলসি গ্যাবার্ড। এজন্য তিনি বাংলাদেশের ইসলামী উগ্রবাদ নিয়ে স্পষ্টভাবে বলেছেন। সে কারণে দিল্লিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলসি গ্যাবার্ড দেখা করেছেন। শেখ হাসিনা তাকে বিস্তারিত জানিয়েছেন কীভাবে ৫ আগস্টের পর কোন কোন মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা কতোটা বেশি হয়েছে।”

“শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইউনূস আর সমন্বয়দের দাপাদাপি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের মদদে, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায়। তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন ‘ইনস্টলমেন্ট’ আর সমন্বয়দের কাজে ব্যবহার হতে দেবে না,” বলেন সুমন ভট্টাচার্য।

এদিকে কলকাতার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোজ দাস বলেছেন, “দিল্লির বিশ্বস্ত সূত্রে আমি খবর পেয়েছি অজিত দোভালকে সঙ্গে নিয়ে তুলসি গ্যাবার্ড শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। দু’জনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে কথা হয়েছে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল কীভাবে দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা।”

শেখ হাসিনা- তুলসি গ্যাবার্ডের সাক্ষাতের আঁচ ঢাকায় পড়েছে বলে দাবি করে মনোজ দাস বলেন, “প্রকাশ্যে যতোই অস্বীকার করুক না কেন ইউনূস সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের হাতে আর সময় নেই। মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশের সেনা প্রধান ওয়াকার উজ জামানের বৈঠক তারই ইঙ্গিত বহন করে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সৌজন্য সাক্ষাৎ হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক যে তলানিতে তা বোঝা যায় তুলসি গ্যাবার্ডের বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থার উত্থান, সন্ত্রাসবাদের হুমকি, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে মন্তব্যে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে মার্কিন ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের প্রধানের এমন বক্তব্য দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে, নাকি এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির একটি অংশ- এসব প্রশ্ন সামনে আসছে।

আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেম-এর শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “চীনকে ঠেকিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থের জন্য যা করার প্রয়োজন হবে, সেটাই করবে। আর এর অংশ হিসেবে ভারতকে পাশে রেখে ওই ধরনের বক্তব্য এসেছে, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে। সেটা বিবেচনায় নেওয়ার অবস্থানে নেই যুক্তরাষ্ট্র।”

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র শুধু চরমপন্থা বা জঙ্গিবাদকেই নয়, ইসলামপন্থী মতবাদকেই ক্ষতিকর হিসেবে দেখছে বলে মনে করেন ইফতেখার আহমেদ। তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান থেকে এসব বক্তব্য আসেছে; যা তাদের অবস্থানকে স্পষ্ট করছে।

সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্যকে অন্য কোনোভাবে ব্যাখ্যা না করে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। সেই বার্তা এসেছে বলেই তার ধারণা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads