আজকাল শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সবাই ব্যস্ত থাকে মোবাইলে। নেই মাঠে গিয়ে খেলা মজা বা পাশে বসা মানুষটার সঙ্গে গল্প বা আড্ডার নেশা । জীবন মানেই এখন মজাদার এবং নজরকাড়া ভিজ্যুয়ালের সঙ্গে বিনোদনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মগুলিতে স্ক্রল করতে করতে অন্তহীন স্রোতে ভেসে যাওয়া।
আপাতদৃষ্টিতে এই সাধারণ ঘটনায় তেমন বিপদ দেখা না গেলেও গবেষণা বলছে, দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে সময় কাটানো, বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে স্ক্রিনে চোখ রাখলে উচ্চ রক্তচাপের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
এক সমীক্ষায় মোট ৪৩১৮ জন তরুণ এবং মধ্যবয়সীদের মধ্যে পরীক্ষা করে দেখা গেছে- তাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, রিলসগুলো অনবরত স্ক্রল করার ফলে মানসিক উদ্দীপনা এবং রক্তচাপ তৈরি হয়, যা মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত সতর্ক করে তোলে। এর ফলে উচ্চ হৃদস্পন্দন এবং অ্যাড্রিনালিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটি শরীরে স্ট্রেসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়।
রাতে শোয়ার আগে এক থেকে দুই ঘণ্টা স্ক্রিনের ব্যবহার করার ফলে অনিদ্রার সমস্যা তৈরি হয়।
মেলাটোনিন হরমোন ঘুমে সহায়তা করে। কিন্ত দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রিনের ব্যবহারের ফলে স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে।
কম ঘুম উচ্চ রক্তচাপের একটি সুপরিচিত ঝুঁকি একই সঙ্গে কম ঘুম কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রেও সময় দেয় না, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
একই ভাবে রিল দেখার সময় শারীরিক কার্যকলাপ না হওয়ায় স্থূলতা দেখা দেয় যা উচ্চ রক্তচাপের জন্য একটি বড় ঝুঁকির কারণ। আবার অনেকেই রাতে স্ক্রোলিং করতে করতে অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খান যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়।
হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে মেনে চলুন:
– আপনার স্ক্রিনের সময় সীমিত করুন। খুব অল্প সময়ের জন্য স্ক্রিনে চোখ রাখুন।
– ঘুমানোর এক থেকে দুই ঘণ্টা আগে কম্পিউটার, মোবাইল বা অন্য যেকোনও গ্যাজেট থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
– শারীরিক কার্যকলাপে নিয়মিত ব্যায়াম যোগ করুন।
– রাতে ঘুমানোর সময় ইলেকট্রনিক গ্যাজেট গুলো বেডরুমের বাইরে রাখুন।