ভারতের মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বেলিয়া চকপাড়ায় ভাঙাচোরা একটি ঘরের মালিক সত্তর বছরের আসিনুর বেওয়া। স্বামীর মৃত্যু হয়েছে অনেক আগে। চার ছেলেমেয়েরও বিয়ে হয়েছে। তারপর থেকে একাই থাকতেন ওই ঘরে।
ভিক্ষা করে চলতো জীবন। কোনও বাড়িতে ভিক্ষা না পেলে কখনও কখনও উপহাসের সুরে বলতেন, রাজার ঘরে যে সম্পদ আছে, আমার ঘরেও তা আছে। সেসব শুনে হাসতেন এলাকার লোকজন। কিন্তু ওই বৃদ্ধার মৃত্যুর পর ছেঁড়া বালিশ আর ঘরের বিভিন্ন জায়গা থেকে যা মিলল তা দেখে আর গুণে অবাক প্রতিবেশীরা।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন বলছে, বৃদ্ধা বলতেন, মৃত্যুর পর তার জমানো টাকা যেন কোনও মসজিদ, ঈদগাহ বা গোরস্থানে দান করে দেওয়া হয়। তখন ওই বৃদ্ধার কথা কেউ পাত্তা দেয়নি।
রোববার দুপুরে বৃদ্ধাকে দাফন করার পর গ্রামবাসীরা ওই ঘরে গিয়ে টাকা খোঁজ করতেই সবার চোখ ছানাবড়া। বাক্স, কাপড়ের পুঁটুলি, যেখানে হাত যাচ্ছে, সেখান থেকেই বেরিয়ে আসছে টাকা। সব মিলিয়ে টাকার অঙ্কটা দুই লাখ ২৩ হাজার টাকা।
মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে এসেছিলেন মেজো ছেলে আবুল হোসেন এবং বড় ছেলের স্ত্রী সাইফুন বেওয়ান। বৃদ্ধা যে এত টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তারা।
স্থানীয়দের মুখে এসব শুনে স্তম্ভিত মেজো ছেলে। তবে তিনি জানিয়েছেন, মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী ওই টাকা মসজিদে দান করা হবে।
আবুল বলেন, “আমি পরিবার নিয়ে অন্য গ্রামে থাকি। মাকে সাহায্য করতে পারতাম না। গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে মায়ের ঘর থেকে জমানো দুই লক্ষাধিক টাকা পাওয়া গেছে। মায়ের ইচ্ছা ছিল- জমানো টাকা যেন ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে দান করা হয়। তার ইচ্ছা অনুযায়ী ওই টাকা মসজিদে দান করা হবে।”