বাংলাদেশে ‘জঙ্গিদের’ আশকারা দিচ্ছে সরকার, অভিযোগ মানবাধিকার সংস্থার

২৪ অক্টোবর বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ।
২৪ অক্টোবর বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে উগ্র ইসলামিক জিহাদি সংগঠনগুলোকে আশকারা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভারতভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালিসিস গ্রুপ (আরআরএজি)।

সংস্থাটির পরিচালক সুহাস চাকমা অভিযোগ করেন, সরকারের আশকারার কারণে দেশটিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন।

ভারতীয় অনলাইন পোর্টাল দ্য ওয়ালের এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার একথা জানানো হয়।

আরআরএজি’র অভিযোগ গত ২৩ অক্টোবর, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমর্থনে কয়েকটি ইসলামপন্থী সংগঠন যৌথভাবে ঢাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। সেখানে তারা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) উপর সারাদেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানায়।

এছাড়া ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ছাত্ররা উসকানিমূলক স্লোগানের পাশাপাশি ইসকন সদস্যদের ‘ভারতের এজেন্ট’ আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশ থেকে বিতাড়নের দাবি জানানো হয়।

লক্ষ্মীছড়িতে স্থানীয়দের বিক্ষোভ। ছবি: ফেইসবুকে ডিফেন্স রিসার্চ ফোরাম নামে একটি পেইজ থেকে নেওয়া।

একইদিন হেফাজতে ইসলাম নামে একটি সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন জেলায়ও বিক্ষোভ হয়েছে।

আরআরএজি এর পরিচালক সুহাস চাকমা বলেন, “উদ্বেগজনকভাবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সাবেক নেতা জসিমউদ্দিন রহমানী, যিনি ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডসহ সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, তাকে বায়তুল মোকাররমের বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা গেছে। চরমপন্থী এই নেতার প্রকাশ্য পুনরুত্থান প্রমাণ করে যে ইউনূসের সরকার উগ্র ইসলামপন্থী শক্তিগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল।”

এদিকে ২৪ অক্টোবর খাগড়াছড়ি জেলার বর্মাছড়ি এলাকার আর্য কীর্তি বৌদ্ধ বিহারের জমি জোরপূর্বক দখল করে অস্থায়ী সেনা শিবির স্থাপনের উদ্যোগের নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি।

সুহাস চাকমা বলেন, “বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র শ্রীশান্ত রায়কে তার একটি পোস্টের মাধ্যমে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ দেওয়ার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করেছে এবং ২২ অক্টোবর ঢাকার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট সাইবার সিকিউরিটি অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর অধীনে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।”

আরআরএজি বলছে, এই ঘটনা প্রমাণ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিচারব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন