দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে উত্তেজনায় পূর্ণ ফাইনালে কিউইদের ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রোহিত শর্মারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এক বছর না যেতেই দ্বিতীয় আইসিসি ইভেন্টের ট্রফি জিতলো ভারতীয়রা। হয়তো ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপও ঘুচলো।
২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যৌথভাবে এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। তার ১১ বছর পর ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ২০১৩ সালে শিরোপা জেতে তারা। এবার এক যুগ পর তারা হাতে নিলো তৃতীয় ট্রফি।
লক্ষ্যটা ছিল ২৫২ রানের। শুরুটাও ছিল দারুণ। অধিনায়ক রোহিত শর্মা প্রথম থেকে হাত খুলে খেললেন। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে কাইল জেমিসনকে ছক্কা মারেন ভারতের ওপেনার। একই আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে খেলে গেছেন তিনি আরও লম্বা সময়। ১১তম ওভারে ৪১ বলে করে ফেলেন হাফ সেঞ্চুরি। শুবমান গিলের সঙ্গে ১০৫ রানের জুটি ছিল তার। এরপরই হঠাৎ ছন্দপতন।
বিনা উইকেটে ১০৫ রান করা ভারত ১২২ রানে হারায় তিন উইকেট। গিল, বিরাট কোহলির পর রোহিতও মাঠ ছাড়েন। ১৯তম ওভারে মিচেল স্যান্টনারের শিকার হন গিল, করেন ৩১ রান। কোহলি ২ বল খেলে এক রান করে মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে আউট হন। রোহিতকে ৭৬ রানে ফেরান রাচিন রবীন্দ্র। এই বিপর্যয়ের রেশ বেশিক্ষণ থাকেনি।
তারপর ক্রিজে নেমে শ্রেয়াস আইয়ার ওই ধাক্কা সামলে নেন। অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে ৬১ রানের দারুণ জুটি গড়েন তিনি। লং অনে ৪৬ রানে জেমিসনের হাতে জীবন পেয়ে নিউজিল্যান্ডকে আক্ষেপে ভাসান শ্রেয়াস। তবে ৩৯তম ওভারে তাকে থামতে হয়েছে। ৪৮ রানে মিচেল স্যান্টনারের বলে রাচিন রবীন্দ্রর ক্যাচ হন শ্রেয়াস। কিছুক্ষণ পর অক্ষরও ২৯ রানে ব্রেসওয়েলের শিকার হলে উত্তেজনা তৈরি হয়।
তবে হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে লোকেশ রাহুল আক্রমণাত্মক জুটিতে দলকে জয়ের পথে রাখেন। লক্ষ্য থেকে ১১ রান দূরে থাকতে হার্দিক ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে আউট হন। জেমিসনকে ফিরতি ক্যাচ তুলে দেন তিনি। কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়ে ভারতের ড্রেসিংরুরম। তবে পথ হারায়নি মেন ইন ব্লুরা। রবীন্দ্র জাদেজা ও রাহুল মিলে এক ওভার হাতে রেখে দলকে জেতান। ৪৯তম ওভারের শেষ বলে চার মেরে ভারতকে শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসান জাদেজা। ৬ উইকেটে ২৫৪ রান করে ভারত। ৩৪ রানে রাহুল ও ৯ রানে জাদেজা অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে ওপেনিংয়ে ৫৭ রান করা নিউজিল্যান্ড মিচেল ও মাইকেল ব্রেসওয়েলের ফিফটিতে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান করে।
নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৫১/৭ (ইয়াং ১৫, রাভিন্দ্রা ৩৭, উইলিয়ামসন ১১, মিচেল ৬৩, ল্যাথাম ১৪, ফিলিপস ৩৪, ব্রেসওয়েল ৫৩*, স্যান্টনার ৮, স্মিথ ০*; শামি ৯-০-৭৪-১, পান্ডিয়া ৩-০-৩০-০, ভারুন ১০-০-৪৫-২, কুলদিপ ১০-০-৪০-২, আকসার ৮-০-২৯-০, জাদেজা ১০-০-৩০-১)।
ভারত: ৪৯ ওভারে ২৫৪/৬ (রোহিত ৭৬, গিল ৩০, কোহলি ১, শ্রেয়াস ৪৮, আকসার ২৯, রাহুল ৩৪*, পান্ডিয়া ১৮, জাদেজা ৯*; জেমিসন ৫-০-২৪-১, ও’রোক ৭-০-৫৬-০, স্মিথ ২-০-২২-০, স্যান্টনার ১০-০-৪৬-২, রাভিন্দ্রা ১০-১-৪৭-১ ব্রেসওয়েল ১০-১-২৮-২, ফিলিপস )।
ফল: ভারত ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শার্মা।
ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট: রাচিন রাভিন্দ্রা।