নিয়োগ পেয়েও বিসিএসের চূড়ান্ত তালিকা থেকে ‘ছাঁটাই হওয়া’ প্রার্থীদের সচিবালয়মুখী হওয়ার একদিন পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানালো, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘ছেঁটে ফেলার’ কারণ জানতে এর আগে বারবার যোগাযোগ করলেও দৃশ্যত ‘মুখে কুলুপ এঁটে রাখা’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অবশেষে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমনটি দাবি করছে।
তাদের ভাষ্য, ২২৭ জন প্রার্থী সাময়িক অনুপযুক্ত হয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায়; যাদের পুনর্বিবেচনার আবেদন করারও সুযোগ রয়েছে।
এমনকি মন্ত্রণালয়ের নব নিয়োগ শাখার একজন কর্মকর্তাও মুখ খুলেছেন সাংবাদিকদের কাছে।
অবশ্য সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের এমন দাবি নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। বাদ পড়া একজন প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য সান ২৪কে বলেন, “যদি এমনটিই হয়, তাহলে প্রথমবার কেমন করে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হলো? তখন কি গোয়েন্দারা প্রতিবেদন দেননি?”
এর আগে বুধবার ‘ছাঁটাই হওয়া’ প্রার্থীরা সচিবালয়ে জড়ো হয়ে নিয়োগের দাবি তুলেছিলেন।
৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ১৬৩ পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল পিএসসি। পরে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে ১৫ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়; সেখান থেকে আরও ১৬৮ জনকে বাদ দিয়ে সংশোধিত বা দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এ হিসেবে যোগ দেওয়ার আগেই চাকরিবঞ্চিত হয়েছেন ২৬৭ জন, যাদের মধ্যে অন্তত দুইশ জন বুধবার সচিবালয়ের সামনে জড়ো হয়েছিলেন।
অভিযোগ ওঠেছে নতুন করে ছাঁটাই হওয়াদের মধ্যে একটি বড় অংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের; শুধু সাধারণ ক্যাডারে বাদ পড়াদের মধ্যে ৫৬ জনই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
বুধবার সচিবালয়ে জড়ো হওয়াদের একজন অমলেশ সরকার, তিনি জানান, তিনি কৃষি ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছিলেন, কিন্তু সংশোধিত দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে তার নাম নেই।
শিক্ষা ক্যাডারে বাদ পড়া রাজু কুমার সরকার বলেন, “আমাদের কেন বাদ দেওয়া হয়েছে জানি না। এই সরকারের সময় ভেরিফিকেশন করে এই সরকারের সময়ই গেজেটেড হয়েছিলাম।”
রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও কেন বাদ পড়েছেন, সেটি জানেন না প্রশাসন ক্যাডারে বাদ পড়া রিমা ইসলাম।
তিনি বলেন, “আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নাই। তবুও আমি বাদ। তারা কি ভেরিফিকেশন করলেন? এটা আমার প্রথম চাকরির পরীক্ষা ছিল। ব্যাংকেও হয়েছিল, কিন্তু ভাইভা দেইনি। আমাদের অপরাধ কী আমরা জানতে চাই।”
বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশের পর মন্ত্রণালয়ের নব নিয়োগ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব উজ্জল হোসেনে সঙ্গে যোগাযোগ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমক।
তিনি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় এই অনলাইন সংবাদপত্রের কাছে দাবি করেন, “এ বিসিএসের উত্তীর্ণতের মধ্যে এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের প্রাক-চরিত্র প্রতিবেদনে বিরূপ মন্তব্যের কারণে ২২৭ জন প্রার্থীকে সাময়িকভাবে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয়েছে।
এছাড়া ৪০ জন প্রার্থী স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন বলেও জানান তিনি।
এ সম্পর্কিত অন্যান্য খবর: