যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস, যে চুক্তিতে পৌঁছুতে লেগেছে প্রায় পনের মাস।
যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এএফপি লিখেছে, বুধবার যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
চুক্তির আওতায় গাজায় সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি উপত্যকাটিতে হামাসের হাতে অবরুদ্ধ জিম্মিদের মুক্তির পথও খুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২১০ জন নিহত হন। ইসরায়েল থেকে জিম্মি করা হয় ২৪১ জনকে। জিম্মিদের মধ্যে ৯৪ জন এখনো গাজায় বন্দী রয়েছেন।
হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় ইসরায়েরের হামলা এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ হাজার ৭০৭ জন।
সংঘাতের এই ১৫ মাসের মধ্যে শুরুর দিকে একবার মাত্র সাত দিনের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। এরপর থেকে কয়েক দফায় যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে তা আলোর মুখ দেখেনি।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল–থানি তার কার্যালয়ে আলাদাভাবে হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ করেছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে এএফপিকে।
এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে একমত হয় দুই পক্ষ।
২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলো। হোয়াইট হাউসের গদিতে বসার আগেই তিনি এই যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে তৎপর হয়েছিলেন।
বুধবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে যুদ্ধবিরতির চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি লিখেছেন, “মধ্যপ্রাচ্যে জিম্মিদের বিষয়ে আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। শিগগিরই তারা মুক্তি পাবেন। ধন্যবাদ!”
যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে, চুক্তিতে মোট ছয়টি ধাপ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।
প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে। তখন বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। তখন থেকে গাজায় স্থানীয় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে এবং সামরিক বাহিনীকে উপত্যকাটি থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেবে ইসরায়েল।
এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে থাকা নিহত জিম্মিদের মরদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং মিসরের তত্ত্বাবধানে গাজা পুনর্গঠন শুরু হবে।
যুদ্ধবিরতির খবর সামনে আসার পর গাজার বাসিন্দাদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। মধ্য গাজার দেইর আল–বালাহ ও অন্যান্য এলাকায় জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। আনন্দে তারা একেঅপরকে জড়িয়ে ধরেন। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে অনেককে মুঠোফোনে ছবি তুলতে দেখা যায়।