ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা সপ্তম দিনে গড়াল। নতুন হামলায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের একটি হাসপাতাল ধসে গেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে, নিজেদের ভারী পানি গবেষণা চুল্লিতে হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান।
একজন ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েলে কয়েক ডজন ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে, যা দক্ষিণ ইসরায়েলের বেয়ারশেবার সোরোকা হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি বেসামরিক এলাকায় আঘাত হেনেছে।
জরুরি পরিষেবা কর্মীরা জানিয়েছেন, হামলার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তাদের মতে, ইরানের এই নতুন হামলায় কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার ফলে ইসরায়েলের বেশিরভাগ অংশে সাইরেন বেজে ওঠে। তেল আবিব এবং জেরুজালেমেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এদিকে, ইসরায়েল ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা গতকাল তেহরানে ২০টিরও বেশি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
ইরানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, খোন্দাবের ভারী জল গবেষণা চুল্লির কাছে একটি এলাকায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে, যা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অংশ।
একটি পৃথক ঘোষণায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বিমান বাহিনী রাতে ইরানের নাতাঞ্জের একটি স্থানে হামলা চালিয়েছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহৃত হতো বলে তাদের ধারণা।

“এই স্থানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহৃত অনন্য উপাদান এবং সরঞ্জাম রয়েছে এবং সেখানে এমন প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে যা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিকে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম করে,” ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে।
নাতাঞ্জে এটিই প্রথম হামলা নয়, চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান বিবিসিকে বলেছিলেন গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলার পর নাতাঞ্জে ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের সেন্ট্রিফিউজগুলো “পুরোপুরি ধ্বংস না হলেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত” হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইসরায়েল অভিযোগ করে আসছে, ইরান সম্প্রতি তার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদকে “অস্ত্রীকরণের পদক্ষেপ” নিয়েছে, যা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা পারমাণবিক বোমার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে আক্রমণের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। তবে হামলা চালানো হবে কি না সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
গোপন এক গোয়েন্দা সূত্র সিবিএসকে জানিয়েছে, ট্রাম্প এখনই হামলা শুরু করতে চান না। তিনি চাইছেন, ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করে দিক। তিনি ইরানের গোপন পারমাণবিক স্থাপনা ফর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে হামলার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
এরই মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের’ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তাঁর ধৈর্যের সীমা ফুরিয়ে গেছে।