গাজার অধিকৃত পশ্চির তীরে সফরের সময় যুক্তরাজ্যের দুই পার্লামেন্ট সদস্যকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি ইসরায়েল।
ইসরায়েলে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে ‘অবাক’ হয়েছেন লেবার পার্টির ওই দুই সংসদ সদস্য।
অনুমতি না পেয়ে সংসদ সদস্য আবতিসাম মোহম্মদ এবং ইউয়ান ইয়াং বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে পারা সংসদ সদস্যদের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ছিল।
ব্রিটিশ দুই এমপিকে প্রবেশের অনুমতি না দেয়া প্রসঙ্গে ইসরায়েলের জাতীয় জনসংখ্যা ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ইসরায়েল সম্পর্কে ‘ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচারের’ উদ্দেশ্যে আসায় তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘অগ্রহণযোগ্য, প্রতিক্রিয়াশীল এবং গভীর উদ্বেগের’ বলে সমালোচনা করেছেন।
এদিকে অনুমতি না দেয়া বিষয়ে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনক ইসরায়েল ‘নিজের সীমান্ত’ নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে মন্তব্য করে বলেন, অন্য দেশ লেবার পার্টির সংসদ সদস্যদের যে ঢুকতে দিচ্ছে না এটা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।”
যুক্তরাজ্যের ইয়ার্লি এবং উডলির সংসদ সদস্য ইয়াং এবং সেফিল্ড সেন্ট্রালের আবতিসাম শনিবার লন্ডনের লিউটন এয়ারপোর্ট থেকে দুইজন সহযোগীসহ ইসারায়েলের উদ্দেশে রওনা দেন।
ইসারায়েলের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চারজনকেই প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোশে আরবেল। এই ব্রিটিশ এমপিদ্বয় ‘নিরাপত্তা বাহিনী সম্পর্কে নথি সংগ্রহে’ গিয়েছিল বলেও ইসরায়েলের অভিযোগ।
এদিকে লন্ডনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাস শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, “ইসরায়েল এবং তার নাগরিকদের বিরোধিতাকারী কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রবেশ ইসরায়েল অনুমোদন দেবে না।”
এতে আরও বলা হয়েছে, মোহাম্মদ এবং ইয়াং‘ ইসরায়েলকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে’ এবং ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন।
দুই এমপিসহ চারজনের দলটি পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দলের একটি অংশ ছিল বলে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানালেও ইসরায়েল অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বলছে দলটি ইসরায়েলি কোনো কর্মকর্তার অনুমোদন নেয়নি।
দুই ব্রিটিশ এমপিকে হোটেলে থাকা প্রস্তাব দেয়া হলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করে ফেরত আসেন বলে ইসরায়েলি দূতাবাসের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের ফেরার ব্যয়ও ইসরায়েল বহন করেছে বলেও এতে বলা হয়।
ইয়াং এবং মোহম্মদ রোববার প্রথম প্রহরে ইসরায়েল ছেড়ে আসেন বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।
ইউকে দাতব্যসংস্থা থেকে সফরটি আয়োজন করা হয়েছিল; যারা এক দশকের বেশি সময় ধরে পার্লামেন্টারি প্রতিনিধিদের নিয়ে যায়।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দুইজনই পার্লামেন্টে ইসরায়েল-ও ফিলিস্তিনি সংঘাত এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছি।”
“হাউজ অব কমন্সে সদস্যদের লক্ষবস্তু না হওয়ার শঙ্কামুক্ত হয়ে নির্ভয়ে কথা বলতে পারা উচিত।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি বলেছেন, দুই এমপির সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যোগাযোগ রাখছে এবং যেকোনো সহযোগিতা করা হবে।
সেইসঙ্গে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমি তাকে স্পষ্ট করে বলতে চাই যে ব্রিটিশ এমপিদের সঙ্গে এমন আচরণের কোনো জায়গা নেই।”