টাইটানিকে বসে লেখা চিঠি বিক্রি হলো ৪ লাখ ডলারে

টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পাঁচদিন আগে লেখা এই চিঠি রোববার তোলা হয় নিলামে। ছবি : বিবিসি
টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পাঁচদিন আগে লেখা এই চিঠি রোববার তোলা হয় নিলামে। ছবি : বিবিসি

আটলান্টিক মহাসাগরে ১১৩ বছর আগে ডুবে যাওয়া জাহাজ টাইটানিকে বসে লেখা একটি চিঠি নিলামে বিক্রি হয়েছে রেকর্ড দামে। রোববার চিঠিটি নিলামে তোলা হলে তার ৪ লাখ ডলারে (৩ লাখ পাউন্ড) কিনে নেন এক ব্যক্তি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উত্তর আটলান্টিকে টাইটানিক ডুবে যাওয়ার মাত্র পাঁচ দিন আগে চিঠিটি লেখা হয়েছিল।

টাইটানিকডুবিতে বেঁচে যাওয়া যাত্রী কর্নেল আর্চিবাল্ড গ্রেসির লেখা চিঠিটি রোববার উইল্টশায়ারের হেনরি অলড্রিজ অ্যান্ড সন নিলাম হাউসে বিক্রির জন্য রাখা হয়। চিঠিটি ৬০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হলেও নিলামে তোলার পর তা এর পাঁচগুণ দামে বিক্রি হয়। তবে চিঠিটি যিনি কিনেছেন তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

কর্নেল আর্চিবাল্ড গ্রেসির লেখা চিঠিটিকে ‘ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণ’ একটি চিঠি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। পরিচিত একজনকে পাঠানো এই চিঠিতে কর্নেল গ্রেসি লিখেছিলেন, “এটি একটি সুন্দর জাহাজ, তবে যাত্রা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি এর সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করব না।”

চিঠিটি ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল লেখা হয়েছিল, যেদিন কর্নেল গ্রেসি সাউদাম্পটনে নৌঙ্গর করা টাইটানিকে উঠেছিলেন। কর্নেল গ্রেসি ছিলেন নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা টাইটানিকের প্রায় ২ হাজার ২০০ যাত্রী ও ক্রুদের একজন, যাদের মধ্যে দেড় হাজার জনের বেশি টাইটানিকডুবিতে প্রাণ হারায়।

কর্নেল গ্রেসি টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির কেবিন সি৫১ এর যাত্রী। সেই কেবিনে বসেই ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল তিনি চিঠিটি লিখেছিলেন। পরদিন জাহাজটি ১১ এপ্রিল জাহাজটি আয়ারল্যান্ডের কুইন্সটাউনে ভিড়লে চিঠিটি পোস্ট করা হয়। চিঠিতে ১২ এপ্রিলে লন্ডনের পোস্টমার্কও ছিল।

সাগরতলে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ।

নিলামকারী জানিয়েছেন, চিঠিটি টাইটানিকের ডেকে বসে লেখা যেকোনো চিঠির মধ্যে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে।

টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ঘটনার যতগুলো বিবরণ পাওয়া যায়, তার অন্যতম কর্নেল গ্রেসির দেওয়া বিবরণ। সেই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর তিনি ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট দ্য টাইটানিক’ নামে একটি বই লেখেন, যেখানে তিনি সেই অভিশপ্ত সমুদ্রগামী জাহাজে তার অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করেন।

গ্রেসি বর্ণনা করেন কীভাবে বরফ শীতল জলে একটি উল্টানো লাইফবোটে উঠে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, যারা প্রথমে লাইফবোটে পৌঁছেছিল তাদের অর্ধেকেরও বেশি লোক হয় ক্লান্তিতে, না হয় ঠান্ডায় মারা গিয়েছিল।

যদিও কর্নেল গ্রেসি টাইটাইনকডুবির ঘটনায় বেঁচে গিয়েছিলেন, তবে সেদিন হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি যে শারীরিক আঘাত পেয়েছিলেন, তার কারণে তার স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ১৯১২ সালের ২ ডিসেম্বর তিনি কোমায় চলে যান এবং দুই দিন পর ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় মারা যান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads