ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের মানচিত্র বদলে যাওয়ার আশঙ্কা জনমনে। বিশ্লেষকরাও এ বিষয়ে করেছেন সতর্ক। কেউ জানিয়েছেন নিন্দা, কেউ বা ক্ষোভ। তবে নিজভূমে এমন হামলা কাঁপিয়ে দিয়েছে ইরানিদের।
যন্ত্রণায় কাতর ইরানি অভিনেত্রী মান্দানা করিমির কথাই যদি বলি। রোববারের হামলার পর সোশাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী নিজের সবটুকু ক্ষোভ নিংড়ে দিয়েছেন।
লিখেছেন, “আমি লোকজনের মেসেজের জবাব দিচ্ছি; নিজেকে এমনভাবে প্রকাশ করছি যেন মনে হয় সব ঠিক আছে। সত্যি বলতে কিচ্ছু ঠিক নেই। প্রতি মুহূর্ত কাটছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায়। কীভাবে ঠিক থাকব, যখন দেখছি শিশুদের রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে, ওরা মরছে। শুধু ফিলিস্তিন কিংবা ইরান নয়, গোটা বিশ্বে বারবার মার্কিনি হামলা সত্ত্বেও কেন যেন সবাই নীরব। এই মুহূর্তে আমি দেশের বাইরে। রয়েছি ইউরোপে। শান্ত রাস্তা দিয়ে হাঁটছি কিন্তু নিজেকে উদ্ভ্রান্তের মতো লাগছে।”

পরিবারের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরও লেখেন, “আমার একটা অংশ যেন বাড়িতেই রয়েছে। যেখানে আমার মা, ভাই, ভাইপো, ভাইজিরা রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে যেন মনে হচ্ছে পরের ক্ষেপণাস্ত্রটা হয়তো ভুল করে আমাদের বাড়িতেই এসে পড়বে।”
অভিনেত্রীর কাতর আর্জি, “আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমরা কেউ মৃত্যুকে ভয় পাই না। কিন্তু এই অসহায়ত্ব, চোখের সামনে নিজের দেশকে পুড়তে দেখা, আক্রমণকারীদের প্রশংসা সহ্য করা সত্যিই অসহ্য।”

“ইরান শুধু কোনও দেশ নয়। শুধু শিরোনামে নয়। ইরান আমার মায়ের হাত। ধুলোর মাঝে যেন জুঁইফুলের গন্ধ। যেন ঘুমপাড়ানি গান। সেই ইরানেরই মৃত্যু হচ্ছে। আমি সত্যি ভালো নেই। তাই চুপ করে বসে থাকবেন না। দয়া করে সাহায্য করুন। প্রতিবাদ করুন। আপনি এসব দেখে চুপ করে বসে থাকলে মনে হবে সত্যি কোথাও কিছু একটা ভুল হচ্ছে।”
রোববার ভোররাতে ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বোমারু বিমান বি-২। মাটির নিচে অবস্থিত এই স্থাপনাগুলি ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়েছে আমেরিকার বিধ্বংসী বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা।