লন্ডনে আ. লীগের ব্যাপক বিক্ষোভ, পেছনের দরজা দিয়ে হোটেলে ঢুকলেন ইউনূস

লন্ডনে মুহাম্মদ ইউনূসের হোটেলের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহিত।
লন্ডনে মুহাম্মদ ইউনূসের হোটেলের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহিত।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভের মুখে পেছনের দরজা দিয়ে হোটেলে ঢোকেন তিনি।

মঙ্গলবারের বিক্ষোভ মূলত ইউনূস পার্ক লেইনের যে হোটেলটিতে উঠেছেন তার আশেপাশেই সীমাবদ্ধ ছিল।

অবশ্য ইউনূসের সমর্থনেও একটি জমায়েত দেখা গেছে সেখানে, যাতে জামায়াতে ইসলামী ও কিছু ইসলামী দলের হাতেগোনা কয়েকজনকে দেখা যায়।

চার দিনের সফরে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে নামেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার আবিদা সুলতান তাকে স্বাগত জানান। সেখান থেকে তিনি পার্ক লেইনের হোটেল দ্য ডরচেস্টারে যান।

দ্য সান ২৪ এর যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইউনূস হিথ্রোতে নামার আগেই যুক্তরাজ্য ছাড়াও ইউরোপের অন্যান্য দেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হোটেলের সামনের রাস্তায় জমায়েত হন। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তারা সেখানেই ছিলেন, দেখিয়েছেন বিক্ষোভ। তাদের হাতে ছিল ইউনূসের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড।

বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী আব্দুর রহমান, সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক সাংসদ হাবিবুর রহমান, আবু জাহির, শফিকুর রহমান চৌধুরী, রঞ্জিত সরকারকে দেখা গেছে।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা বিধান কুমার সাহা, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান ফারুক, যুবলীগের জামাল খানসহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে সোচ্চার ভূমিকায় থাকা সুশান্ত দাস গুপ্ত দ্য সান ২৪কে বলেন, “বাংলাদেশে বেআইনিভাবে ক্ষমতা দখল করা ইউনূসকে শুধু যুক্তরাজ্যে নয়, যেখানেই তিনি যাবেন সেখানেই তাকে প্রতিহত করা হবে। একজন দেশেপ্রেমিক বাংলাদেশি হিসেবে, একাত্তরের সপক্ষের মানুষ হিসেবে তার অনাচার আমরা সহ্য করতে পারি না।”

“যুক্তরাজ্যে ইউনূসের প্রতিটা মাইক্রো সেকেন্ড বিক্ষোভের মধ্য দিয়েই যাবে,” যোগ করেন তিনি।

লন্ডনে মুহাম্মদ ইউনূসের হোটেলের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহিত।

সফরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের তরফে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারের নীতি নির্ধারণী শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলেও জানানো হয়েছে।

১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমসেস প্যালেসে ‘কিংস চার্লস থার্ড হারমোনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণের উদ্দেশ্যে মূলত তার এই চার দিনের সফর।

এদিকে, যুক্তরাজ্যে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ ঠেকাতে বিক্ষোভকারীদের ভয়-ভীতি দেখানোর প্রচারণা চালানোর খবর পাওয়া গেছে।  

‘ব্রেকিং নিউজ’ শিরোনামে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে রিফর্ম বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন, যার অস্তিত্ব অবশ্য এর আগে চোখে পড়েনি।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনূসের বিরুদ্ধে যারা কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের ছবি, ভিডিও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ভিডিও দেখে সবাইকে চিহ্নিত করে তাদের নাম, ঠিকানা দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। দেশে যাওয়ার সাথে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

বাংলাদেশের ‘বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা’ লন্ডনে অবস্থান করছে বলেও ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন