ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে সারাদেশে সর্বস্তরের মানুষের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের খবর দিয়ে সোমবার প্রধান প্রতিবেদন করেছে বেশিরভাগ সংবাদপত্র। এর পাশাপাশি সংকটে থাকা দেশের আবাসন খাত, মূল্যস্ফীতির কারণ ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের খবরও গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সোমবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

প্রথম আলো
নারীর বিরুদ্ধ সহিংসতা ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে সারাদেশে মানুষের বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণসহ নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদ এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সরকারি-বেসরকারি অন্তত ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কর্মসূচিতে হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন সমাবেশ থেকে ধর্ষণের প্রতিটি ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, ধর্ষণ, নিপীড়নসহ নারীর ওপর সহিংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে; কিন্তু সরকার কার্যত নির্বিকার। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যান। এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। নারীদের জন্য নিরাপদ সমাজ গঠন করতে হবে।

সমকাল
নারীর প্রতি বিদ্বেষ, ধর্ষণ, নির্যাতন বন্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভে দেশজুড়ে মানুষের প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘ধর্ষণ নিপীড়ন নারীবিদ্বেষ রুখো’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীর প্রতি বিদ্বেষ, ধর্ষণ, নির্যাতন বন্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। নানা স্থানে শিশু ধর্ষণসহ নারী নিপীড়ন বেড়ে যাওয়ার পটভূমিতে দল-মত নির্বিশেষে প্রতিবাদী কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। গতকাল রোববার সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্তে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও মিছিল করতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও সড়ক-মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন মানুষ। তাদের স্লোগানে অভিন্ন দাবি– ধর্ষক-নিপীড়ককে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করে আসছে। তবে দু’দিন ধরে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ প্রশ্নে মানুষ যেভাবে মাঠে নেমেছেন, এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ গত সাত মাসে দেখা যায়নি। এমনকি নিকট অতীতেও এই ইস্যুতে সর্বস্তরের মানুষের মধ্য থেকে উঠে আসা এত বড় বিক্ষোভ কমই দেখা গেছে।

কালের কণ্ঠ
দেশের আবাসন খাতের নানা সংকটের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘মন্দায় মুমূর্ষু আবাসন খাত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে দেশের আবাসন খাত। তবে এ খাতটি এখন ক্রান্তিকাল পার করছে। প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি বিক্রিতে মন্দার কারণে এ খাতজুড়ে চরম স্থবিরতা। নতুন বিনিয়োগ না হওয়া ও পুরনো প্রজেক্ট প্রায় অচল হয়ে থাকায় উদ্যোক্তারাও পরিচালন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, খাতটি এখন কঠিন সংকটে। উদ্যোক্তারা জানান, অন্তত ৬০ শতাংশ ব্যবসা মন্দার কবলে। এর ধাক্কা এসে লেগেছে আবাসন খাতের সঙ্গে জড়িত রড-সিমেন্টসহ অন্তত আড়াই শ উপখাতেও। বিপুল কর্মসংস্থানের এ খাতের শ্রমিকের জীবন যাপনও হুমকিতে পড়েছে। আবাসন খাতকে চাঙ্গা করতে অবিলম্বে ড্যাপ সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
আবাস খাতের সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা ও শিল্পের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এ খাতটিতে এখন নীরব মন্দা চলছে। সরকারের নীতিনির্ধারকদের মনোযোগের বাইরে চলে যাওয়া বড় বিনিয়োগের এ খাতটি ২০২৩ অর্থবছরেও বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রায় ৮ শতাংশের মতো অবদান রেখেছিল। এ খাতে বিনিয়োগ দেড় লাখ কোটি টাকারও বেশি। সরাসরি কমবেশি ৩৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ খাতে।

ইত্তেফাক
ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘ধর্ষণ-নিপীড়নের বিচারের দাবিতে উত্তাল শিক্ষাঙ্গন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে উত্তাল সারা দেশ। গতকাল রবিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশ করে ধর্ষক ও নিপীড়কদের কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাঠিমিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফরমের ব্যানারে বেলা পৌনে ৩টার দিকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বাঁশের ছোট ছোট লাঠি হাতে ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ মোড় ঘুরে মিছিলটি আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্য ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মিছিলে ‘জান, মালের নিরাপত্তা দে/নইলে গদি ছেড়ে দে’, ‘খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন/রুখে দাঁড়াও জনগণ’, ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের/বিচার করো করতে হবে’, ‘ধর্ষকরা ধর্ষণ করে/প্রশাসন কী করে?’, ‘বেগম রোকেয়া শিখিয়ে গেছে/লড়াই করে বাঁচতে হবে,’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।

যুগান্তর
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘প্রতিবাদে উত্তাল দেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সারা দেশ। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে শনিবার মধ্যরাত থেকেই শুরু হয় শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন। সড়কে নেমে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রোববার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশেই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নারী অধিকার কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি ও বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এসব সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। নারীদের নিরাপত্তায় ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বণিক বার্তা
মূল্যস্ফীতিতে আমদানি করা পণ্য নয়, স্থানীয় বাজারে উৎপাদিত পণ্যের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি– এমন খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘আমদানি নয়, দেশীয় পণ্য ৮৪ শতাংশ ভূমিকা রাখছে মূল্যস্ফীতিতে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মূল্যস্ফীতির পেছনে বিগত সরকার বরাবরই আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, যুদ্ধবিগ্রহ ও আমদানির লাগাম টানাকে সামনে এনেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এর কারণ নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য সামনে আসতে থাকে। যেখানে উঠে আসে, মূল্যস্ফীতিতে স্থানীয় বাজারের পণ্যের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেশের অর্থনীতির এক পর্যালোচনায়ও সে বিষয়টি উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনাও বলছে, মূল্যস্ফীতির পেছনে স্থানীয় পণ্যগুলোর ভূমিকা ৮৪ শতাংশ। অন্যদিকে কেবল ১৬ শতাংশ আমদানি পণ্যের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা হ্রাস পাওয়ার পেছনে সবজির দাম কমার প্রভাবকে সামনে আনছেন অর্থনীতিবিদরা। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়িয়ে টাকার সরবরাহ হ্রাসের কৌশল কতটা কাজের সে প্রশ্নও উঠছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, ফেব্রুয়ারিতে দেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। সবজির দাম কমায় গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ২৪ শতাংশে নেমেছে। গত বছরের মার্চের পর তা আর এক অংকের ঘরে নামতে দেখা যায়নি।

নয়া দিগন্ত
মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘নারীর প্রতি সহিংসতায় উত্তাল দেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্র্রতিক সময়ে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনসমূহ। বিক্ষোভকারীরা দ্রুত ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এদিকে, ধর্ষণের মামলা ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত ও ৯০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ধর্ষণকে জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। ধর্ষণের মামলাগুলো তদারকির জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের আলাদা একটা সেল থাকবে, যেন অযথা সময়ক্ষেপণ না করা হয়।
অপর দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স।

আজকের পত্রিকা
নারীর প্রতি নিপীড়নের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘প্রতিবাদ ক্ষোভ দেশজুড়ে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীর প্রতি নিপীড়নের প্রতিবাদে গতকাল রোববার ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে দেশজুড়ে। অপরাধীদের বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সোচ্চার হয়েছেন অনেকে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।
ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য থেকে বিকেলে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে লাঠি মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল লাঠি, বাঁশের খণ্ড। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ হয়ে আবার রাজু ভাস্কর্যে যায়। মিছিলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়।
পত্রিকাটিতে ‘দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ আগামী সপ্তাহ থেকে’ শিরোনামে পার্শ্ব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলোকে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে মতামত জমা দিতে বলা হয়েছে। যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত নয়, সেগুলোর সমাধানে ১৫ মার্চের পর থেকে দল বা রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে কমিশন। তাঁরা বলছেন, পূর্বপরিকল্পিত কোনো কাঠামো নয়, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রথমে দল ও জোটগতভাবে আলোচনা করবে। তবে আমরা পূর্বপরিকল্পিত কোনো কাঠামো নিয়ে এগোচ্ছি না। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করব এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। এই আলোচনা খুব দ্রুত শুরু করতে চাই।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন
ধর্ষণে জড়িত জড়িত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষুব্ধ মানুষের নানা কর্মসূচি পালনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘উত্তাল সারা দেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণে জড়িত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে দেশ। ক্ষোভ-প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সচেতন নাগরিক সমাজ। এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। কন্যাশিশু ও নারী নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের ২০৬টি সদস্য সংগঠনের পক্ষে সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার ও সহসভাপতি শাহীন আক্তার ডলি এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন। শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে সংস্থাটি। নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। গতকাল সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।

দেশ রূপান্তর
নারী নিপীড়কদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে দেশজুড়ে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিবাদের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘ক্ষোভে উত্তাল দেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাগুরায় শিশু ধর্ষণকাণ্ডে উত্তাল দেশ। নারী নিপীড়কদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ৮ বছর বয়সী শিশুটি ধর্ষণের শিকার হওয়ার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগের দুদিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবারও বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধসহ প্রতিবাদী নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বহু জায়গায়। এমন পরিস্থিতিতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
তবে দেশ জুড়ে ধর্ষণবিরোধী নানা কর্মসূচিতে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেও গতকাল দেশের কয়েকটি জায়গা থেকে নারী-শিশু ধর্ষণের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।