বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী প্রচেষ্টার খবর সোমবার গুরুত্ব পেয়েছে দেশের বেশিরভাগ সংবাদপত্রে। শুল্ক ঠেকাতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি সম্ভাব্য করণীয় নিয়ে বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনও ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এর বাইরে ভালো কাজের প্রলোভনে বাংলাদেশি তরুণদের রাশিয়া নিয়ে যুদ্ধে ঠেলে দেওয়া, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সফররত আইএমএফের প্রতিনিধিদলের মূল্যায়ন, শুল্ক আরোপের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ এবং ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের ‘অংশীদার খোঁজা’র খবরও গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সোমবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

আজকের পত্রিকা
ভালো কাজের লোভ দেখিয়ে অন্তত ১০০ বাংলাদেশি তরুণকে রাশিয়ায় নিয়ে যোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘রুশ যুদ্ধে শত বাংলাদেশি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশে ভালো কাজের লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বানাচ্ছে মানব পাচারকারীরা। জনপ্রতি মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তাঁদের সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ হয়ে নেওয়া হচ্ছে রাশিয়ায়। সেখানে জোর করে চুক্তিনামায় সই করিয়ে যোদ্ধা হিসেবে পাঠানো হচ্ছে যুদ্ধে। এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ তরুণ এভাবে দেশটিতে গেছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার খবরও এসেছে।
বিষয়টি নজরে আসার পর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ আন্তর্জাতিক তিন বিমানবন্দরেই নজরদারি বাড়ানো হয়। কিন্তু এরপরও সোনার হরিণ ধরার স্বপ্নে বিভোর তরুণদের যুদ্ধের ফাঁদে পড়া ঠেকানো যাচ্ছে না। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়াগামী সন্দেহে ১১ তরুণকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তরুণদের দালালদের মাধ্যমে জোগাড় করে রাশিয়ায় পাঠাচ্ছে একাধিক ট্রাভেল এজেন্সি। এক দালালকে গ্রেপ্তারের পর কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সির ওপর নজরদারি করছে প্রশাসন। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোয় বিশেষ সতর্কতা জারির অনুরোধ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে ফাঁদে পড়ে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে যাওয়া ১০০ তরুণের কয়েকজনের অবস্থান শনাক্ত হলেও বাকিদের খোঁজ নেই। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে আসা ও যুদ্ধাহত কয়েকজন দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন পরিবারের কাছে।

সমকাল
অর্থ সংকটের কারণে দেশে সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘ওষুধ ও সেবা মিলছে না, শিশু-মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ সংকটের কারণে দেশে ৪ হাজার ৫৬২টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ১০ মাস ধরে অনেক কেন্দ্রে বিনামূল্যের ওষুধ মিলছে না। বন্ধ আছে সন্তান প্রসবের আগে জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমাতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রেগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এসব কেন্দ্রে বেশির ভাগ নিম্ন আয়ের মানুষ সেবা নেন। বর্তমান সংকট চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করেছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় কৌশলগত পরিকল্পনার (ওপি) মাধ্যমে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রেগুলো এর আওতায় পরিচালিত হয়। এর অর্ধেক ব্যয় সরকার বহন করে, বাকি অর্থ আসে দাতা সংস্থাগুলো থেকে। প্রতিদিন গড়ে ৬৫ থেকে ৭০ লাখ মানুষ সেবার জন্য যেত। এ হিসাবে প্রায় পৌনে সাত কোটি মানুষ ওষুধ ও সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

প্রথম আলো
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে বাংলাদেশের তৎপরতার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রপ্তানি পণ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ও বাণিজ্য ব্যবস্থায় বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে, যার বাইরে নয় বাংলাদেশও। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিদিন উচ্চপর্যায়ের একাধিক বৈঠক হয়েছে। গতকাল রোববারও পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। আগের দিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন।
পরিস্থিতি সামলাতে সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল বিকেলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে সরকার। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস একটি চিঠি দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আরেকটি চিঠি দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর ইউএসটিআরকে।
যুক্তরাষ্ট্রকে যে দুটি চিঠি দেওয়া হবে তাতে কী থাকবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে উপস্থিত সবাই মতামত দিয়েছেন। বাংলাদেশ কী কী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে, চিঠিতে সেগুলোর উল্লেখ থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে প্রতিনিয়তই কথা হচ্ছে। চিঠি হবে ব্যবসাবান্ধব। সেখানে বাংলাদেশের ব্যবসার স্বার্থকে দেখা হবে, যাতে দুই দেশ সমানভাবে লাভবান হতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

কালের কণ্ঠ
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সংকট নিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘ক্রয়াদেশ নিয়ে শঙ্কা, উদ্বেগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতির ফলে বৈশ্বিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনৈতিক সুযোগ নেওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশের তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁরা বলেন, এই সুযোগে কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিসমান পণ্য স্থগিত, বাতিল, ডিসকাউন্ট বা পণ্যের মূল্য পরিশোধে বিলম্ব করতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে ছোট ছোট বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তবে কোনো কোনো উদ্যোক্তা জানান, তাঁরা পণ্য জাহাজীকরণ (এফওবি) পর্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। কিছু কিছু এজেন্ট প্রতিষ্ঠান কাস্টম বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) দেয়। এসব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৯ তারিখের শুল্ক কার্যকর হবে না। কেননা এরই মধ্যে অনেক উদ্যোক্তা আগের কার্যাদেশের পণ্য জাহাজীকরণ করেছেন, যেগুলো মধ্য এপ্রিলে গন্তব্যে পৌঁছবে।
একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের বাণিজ্যের আকার ১০.৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের আমদানি করা পণ্যের অর্থমূল্য দুই বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। আর বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে রপ্তানি পণ্যের অর্থমূল্য আট বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি, যার ৮৭ শতাংশই আবার তৈরি পোশাক পণ্য।

ইত্তেফাক
বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ের হার, খেলাপি ঋণ ও ডলারের একক বিনিময় হার বাস্তবায়ন নিয়ে সফররত আইএমএফের প্রতিনিধিদলের উদ্বেগের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘রাজস্ব আদায়, খেলাপি ঋণ ও ডলারের একক বিনিময় হার নিয়ে উদ্বেগ আইএমএফের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সফররত প্রতিনিধিরা। এছাড়া খেলাপি ঋণ এবং ডলারের একক বিনিময় হার বাস্তবায়ন নিয়েও সংস্থাটির উদ্বেগ রয়েছে। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
গতকাল রবিবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফের প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সচিবালয়ের অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। আইএমএফের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুন মাসে দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য এই মিশন অর্থনীতির বিভিন্ন পর্যালোচনা করবে। মে-জুন মাসে তারা বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যালোচনা প্রতিবেদন নিয়ে বৈঠক করে ঋণের দুই কিস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বৈঠকের বিষয়ে প্রশ্ন করলে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, শুল্ক-কর নিয়ে আইএমএফ জানতে চেয়েছে, কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াব কীভাবে, কর আদায় বাড়াব কীভাবে, এছাড়া করনীতি ও কর আদায় এ দুটি বিভাগ আলাদা করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। সার্বিকভাবে বাজেট ঘাটতি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেই বিষয়েও আইএমএফ জানতে চেয়েছে।

যুগান্তর
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে বাংলাদেশের তৎপরতার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ ৪ কৌশল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পণ্যের শুল্ক ও অশুল্ক বাধা তুলে দিয়ে আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোসহ চারটি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। অন্য দুটি হচ্ছে-আমেরিকার বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তৈরি পোশাকশিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পণ্যের পাশাপাশি সেবা (সার্ভিস) আমদানি।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বল্প মেয়াদের উল্লিখিত কৌশলের কথা তুলে ধরে দুদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইভাবে ইউনাইটেড স্টেটস অব ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভের (ইএসটিআর) অফিসকে চিঠি দেবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি এবং মার্কিন পণ্যে শুল্কহার অনেক বেশি, এ যুক্তি দেখিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেটি মোকাবিলা করতে এ কৌশল প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার।

বণিক বার্তা
ভর্তুকি বাড়িয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট কাটাতে সরকারের প্রচেষ্টার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে অংশীদার খুঁজছেন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের শিল্প উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রগুলোর একটি নারায়ণগঞ্জ। গত দেড় দশকে রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাটির রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হয়েছে ওসমান পরিবারের হাতে। এ পরিবারের প্রভাবশালী দুই সদস্য শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের রয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। গার্মেন্টস, শিপিং, পরিবহন, আবাসনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা রয়েছে তাদের। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ওসমান পরিবারের প্রভাবশালীরা। এখন বিদেশে বসে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অংশীদার খুঁজছেন তারা।
আগে থেকেই শামীম ওসমানসহ এ পরিবারের সদস্যদের বেনামি অংশীদারত্ব ছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যবসায়ী গ্রুপে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিল্প গ্রুপটিতে ওসমান পরিবারের অংশীদারত্ব আরো বেড়েছে। আর নতুন করে ওসমান পরিবারের ব্যবসায়িক অংশীদার হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এক সদস্য। আবাসন ব্যবসায়ী ওই বিএনপি নেতার গুলশানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শামীম ওসমান। এখন ওসমান পরিবারের বাড়ি, গাড়িসহ সম্পত্তির দেখভাল করছেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে কর্মী ছাঁটাই, নির্বাহী ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহারসহ নানা পদক্ষেপের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন ভুক্তভোগীরা। এ অবস্থায় স্লোগান আর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে আমেরিকা।
স্থানীয় সময় শনিবার আয়োজিত বিক্ষোভ-সমাবেশে স্লোগান ছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না’ ‘ডেমোক্র্যাসি নট ডিক্টেটরশিপ’ ‘আমাদের দেশ কোন দিকে যাচ্ছে’ ‘ডিওজিইকে চাকরিচ্যুত করুন’ ‘মাস্ককে মঙ্গলগ্রহে পাঠিয়ে দিন’ ‘যুক্তরাষ্ট্রে কোনো রাজা নেই’ ‘রাজতন্ত্র মানি না- মানব না’ ‘মাস্ককে বিতাড়িত করুন’ ইত্যাদি। এদিন ৫০টি স্টেটে প্রায় ১ হাজার ২০০ বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এক দিনে এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল ট্রাম্পের গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের নিন্দা আর প্রতিবাদ সংবলিত প্ল্যাকার্ড।
রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, টেক্সাস, মিশিগান, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, শিকাগো, বস্টন, ফিলাডেলফিয়া, কানেকটিকাট, নিউজার্সি, আরিজোনা, মিনেসোটা, আলাবামা, ওরেগন, ক্যানসাস, ক্যান্টাকি, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, দেলওয়ারে, ওহাইয়ো, আইওয়া, সিয়াটল, নর্থ ক্যারলিনা, সাউথ ক্যারলিনা, উইসকনসিন, নিউ হ্যামশায়ার, রোড আইল্যান্ড, সানফ্রান্সিসকোসহ বিভিন্ন স্থানে লাখ লাখ আমেরিকান ‘হ্যান্ডস অফ’ শীর্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলোন মাস্ককে কড়া বার্তা দেন।

নয়া দিগন্ত
নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘যুক্তরাষ্ট্রের পর বিক্ষোভ ইউরোপেও’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পর অর্থনৈতিক খাতে শোচনীয় অবস্থার পর বিক্ষোভে নেমেছেন এসব মানুষ।
শনিবার জার্মানির বার্লিন ও ফ্রাঙ্কফুর্ট, ফ্রান্সের প্যারিস ও লন্ডনে একত্র হন বিক্ষোভকারীরা। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যেও ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। এর সাথে মিল রেখে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে হ্যান্ডস অব নামে বিক্ষোভ হয়। বিদেশে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ডেমোক্র্যাট দলের সদস্যরা এ বিক্ষোভের ডাক দেন। জার্মানির বার্লিনে টেসলার বিক্রয়ক্রেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ছিল। প্ল্যাকার্ডে জার্মানিতে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বিক্ষোভে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

দেশ রূপান্তর
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতার খবর দিয়ে খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দু-এক দিনের মধ্যেই’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্দেশ্যে গত বুধবার বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানির ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৯ এপ্রিল থেকে তার রেসিপ্রকাল বা পাল্টা শুল্ক কার্যকর হবে। এটি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি বেশ সমস্যায় পড়বে। এমন পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ সরকার। আগে কোনো প্রস্তুতি না থাকায় হঠাৎ ট্রাম্পের ঘোষণায় একপ্রকার দিশেহারা বাংলাদেশ।
এমন পরিস্থিতিতে শুল্ক আরোপের বিষয়টি পিছিয়ে দেওয়া এবং বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর বিষয়ে সরকারের নানা ধরনের উদ্যোগের কথা জানিয়ে মার্কিন প্রশাসনকে চিঠি দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ বিষয়ে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো দফায় দফায় সভা করে মার্কিন পাল্টা শুল্কের ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হবে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।