সোমবারের পত্রিকা: ‘আলোচনায় সরকারের মেয়াদ’

newspaper

পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের সোমবার প্রথমবারের মতো বাংলা নববর্ষ উদযাপনের খবরকে সোমবার গুরুত্ব পেয়েছে প্রায় সবগুলো সংবাদপত্রে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র এ সংক্রান্ত খবরকে তাদের প্রধান প্রতিবেদন করেছে। এ ছাড়া দেশে গ্যাস নিয়ে বিদ্যমান সংকটের মধ্যেই নতুন শিল্প-কারখানায় এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে গ্যাসের দাম বাড়ানোর খবরটিও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র। এর বাইরে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে আলোচনা, সরকারের সংস্কার উদ্যোগের অংশ হিসেবে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জামায়াতে ইসলামীর মতামত উপস্থাপন, ইলিশের উৎপাদন কমে আসার কারণ এবং দেশের ১০টি সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিলে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত বিষয়ক খবরও গুরুত্ব পেয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সোমবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

আজকের পত্রিকা

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে বিভিন্ন মহলের প্রচার ও জনমত গঠনের চেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা বদলে দিয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘আলোচনায় সরকারের মেয়াদ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মনোভাবে দলগুলো আশ্বস্তও ছিল। তবে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে বিভিন্ন মহলের প্রচার ও জনমত গঠনের চেষ্টা তাদের ভাবনা বদলে দিয়েছে। নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার সংশয় দেখা দিয়েছে বিএনপিতে। এই সংশয় কাটাতে দলটি ১৬ এপ্রিল বৈঠকে বসবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।

বিএনপির সমমনা কয়েকটি দলও অন্তর্বর্তী সরকার পাঁচ বছর মেয়াদে থাকার পক্ষে প্রচারকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। কোনো কোনো দলের নেতারা এই প্রচারকে আমল না দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কথায় আস্থা রাখতে চাইছেন। ড. ইউনূস গত শনিবারও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকে আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দেন।

প্রথম আলো

নতুন বাংলা নববর্ষ উদযাপনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘বাঙালির প্রাণের উৎসব আজ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রৌদ্রকরোজ্জ্বল বৈশাখী দিন ফিরে এল আবার। সুরে-বাণীতে, সাজসজ্জায়, আহারে-বিহারে, আনন্দ-উল্লাসে আজ সোমবার বাংলার নতুন বছর ১৪৩২ বরণ করে নেবে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশের সব মানুষ। পুরোনো ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে সবার কল্যাণ কামনায় উদ্‌যাপিত হবে নববর্ষের উৎসব। নববর্ষকে আবাহন জানিয়ে বহুকণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো…।’

বাংলা নববর্ষের চেয়ে বড় কোনো সর্বজনীন উৎসব দেশে আর নেই। এ কারণে মানুষে মানুষে মহাপ্রাণের মিলন ঘটানোর বর্ষবরণের এই উৎসব গভীর তাৎপর্যময় হয়ে আছে আমাদের জীবনে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর এবার নতুন পরিবেশে বর্ষবরণ উৎসব বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য তাই ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

মূল প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জাতীয়ভাবে রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদ্‌যাপনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। উৎসব অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিদের নিজ নিজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রমনার বটমূলে বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ছায়ানট।

কালের কণ্ঠ

গ্যাস নিয়ে বিদ্যমান সংকটের মধ্যেই নতুন শিল্প-কারখানায় এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র) গ্যাসের দাম আরো ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘শিল্পে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান গ্যাসসংকটসহ নানা কারণে ক্ষতির মুখে রয়েছে দেশের শিল্প খাত। দীর্ঘদিন ধরেই চাহিদামতো গ্যাস মিলছে না শিল্প-কারখানাগুলোতে। গ্যাসসংকটের কারণে তাদের উৎপাদন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। শিল্প-কারখানার পাশাপাশি সিএনজি স্টেশন, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আবাসিক খাতসহ সব ক্ষেত্রে এখন গ্যাসের সংকট চলছে। এমন পরিস্থির মধ্যেই নতুন শিল্প-কারখানায় এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র) গ্যাসের দাম আরো ৩৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে শিল্প গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের বিল ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভ গ্যাসের দাম ৩১.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি শিল্পে নতুন বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত করাসহ শিল্পের সংকট আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে শিল্পের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা, বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার, ঋণপত্র খোলার অভাবে কাঁচামালের অপর্যাপ্ততা, শ্রমিক অসন্তোষ ও উৎপাদন অপ্রতুলতায় প্রায় দুই শতাধিক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো টিকে আছে সেগুলোও অস্তিত্বের সংকটে ধুঁকছে। এমতাবস্থায় নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে শিল্প খাতকে আরো ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে জানিয়েছেন তাঁরা।

সমকাল

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের সংস্কার উদ্যোগে সাড়া দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জামায়াতে ইসলামীর  মতামত প্রদানের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো, গণভোটের পক্ষে জামায়াত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমাতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের সুপারিশে একমত জামায়াতে ইসলামী। প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের পরিবর্তে এনসিসির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের সুপারিশের পক্ষেও মত দিয়েছে দলটি। তবে তারা প্রস্তাবিত এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতিকে চান না। দলটি চায় কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; তবে সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছরই থাকুক।

ঐকমত্য কমিশনে জামায়াত এসব মতামত দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো এবং নির্বাচন পদ্ধতিসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের অবস্থান বিএনপির বিপরীত।

ইত্তেফাক

বিদ্যমান শিল্পে অপরিবর্তিত রেখে নতুন শিল্পের গ্যাসের দাম বাড়ানোর খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘নতুন শিল্প আনতে হলে গুনতে হবে বাড়তি গ্যাস বিল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান শিল্পে অপরিবর্তিত রেখে নতুন শিল্পের গ্যাসের দাম বাড়ল। শিল্পে ব্যবহৃত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভে ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এছাড়া বর্তমানে যারা অনুমোদিত লোডের বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকেও ৩০ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা দরে বিল দিতে হবে। নতুন মূল্যহার চলতি এপ্রিল মাস থেকেই কার্যকর হবে।

গতকাল রবিবার রাজধানীতে বিইআরসির সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নতুন মূল্যহার ঘোষণা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য মিজানুর রহমান, সদস্য সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, মো. আব্দুর রাজ্জাক ও শাহীদ সারোয়ার।

যুগান্তর

গণঅভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রথমবারের মতো বাংলা নববর্ষ উদযাপনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর।ফ্যাসিবাদমুক্ত পহেলা বৈশাখশিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাহাড় থেকে সমতল। মেঠোপথ থেকে রাজপথ। আজ আনন্দে উদ্বেল সারা জাতি। এই দিনে সে তার অস্তিত্বের জানান দেয় প্রাণে প্রাণে, উৎসবে। বিশ্বকে বলে দেয়-আমি বাংলাদেশি, আমি বাঙালি; আমার আছে গর্বের ইতিহাস। সংকল্প জানায় এক নতুন আগামীর; অতীত বেদনাকে ভুলে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার। এ জাতির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিগত বছরের জরাকে দূরে ঠেলে আজ বাংলাভাষীদের স্বপ্ন দেখার দিন, নতুন আলোয় অবগাহনের দিন, আনন্দে মেতে উঠারও দিন। হাজার বছরের ঐতিহ্যের বহমানতায় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আজ উৎসবের আমেজ। এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে প্রায় ১৬ বছর। এ সময়ে দেশের মানুষ তার আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভাবের প্রকাশ করতে হয়েছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত এক পরিবেশে। ফ্যাসিবাদী সরকারের মর্জিমতো। বাঁধভাঙা উল্লাসে সবাই তখন ভাসতে পারেনি। সেই ফ্যাসিবাদের নাগপাশ কাটিয়ে এ বছর এক মুক্ত আবহে, মুক্ত বাতাসে বাঙালির জীবনে এসেছে পহেলা বৈশাখ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের প্রথম বাংলা নববর্ষ উদযাপনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘নতুন বাংলাদেশে এলো বৈশাখ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিন্ন এক পরিবেশে নতুন বাংলা বছরকে স্বাগত জানাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের প্রথম নববর্ষ। বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে প্রত্যাশা করা হচ্ছে সম্প্রীতির বন্ধনের বছর হিসেবে। সব মত, পথ ও সম্প্রদায়ের ভেদাভেদ ভুলে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আকাক্সক্ষা সর্বত্র। এবার পরিবর্তন আনা হয়েছে উদ্যাপনের ঢঙে। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’- এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী আয়োজন করা হয়েছে নানান আয়োজনের। প্রথমবারের মতো সরকারও সম্পৃক্ত হয়েছে একডজনের বেশি আয়োজনে। তবে প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিনটি পালন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ। এ শোভাযাত্রায় থাকবে নতুন শুভদিনের প্রত্যাশা ও অশুভ শক্তিকে বধ করার প্রত্যয়।

বিশিষ্টজনরা বলছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় যে বৈষম্য ছিল তা নিরসনে কাজ করবে গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারগুলো। অন্তর্বর্তী সরকারের হাত ধরে শুরু হওয়া সংস্কারের কার্যক্রম দেশের গণতন্ত্রকে দেবে নতুন মাত্রা। নতুন বছর ১৪৩২-এ স্পষ্ট হবে অনেক কিছুই। প্রত্যাশা আছে এবছরই স্বাধীন পরিবেশে মুক্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে দেশবাসী। ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশে আসবে সুশাসন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে যে জগদ্দল পাথর বিদায় নিয়েছে তেমন পরিবেশে আর ভুগতে হবে না দেশবাসীকে। তাই নতুন বছরকে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় মনে করা হচ্ছে।

বণিক বার্তা

নদ-নদীর দূষণের কারণে ইলিশের উৎপাদন কমছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা।  ‘দূষণে কমে আসছে ইলিশের উৎপাদন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপযোগী আবহাওয়া ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদন হয় নদীমাতৃক বাংলাদেশে। সামুদ্রিক মাছ হলেও ডিম ছাড়তে স্রোতশীল নদীতে আসে ইলিশ। তবে এটি বেশ সংবেদনশীল মাছ। প্রতিকূল আবহাওয়ায় খুব ঘন ঘনই পরিবর্তন করে গতিপথ। সম্প্রতি বাংলাদেশেও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে ইলিশের আবাস ও জীবনাচরণ। নদ-নদীর দূষণে কমছে উৎপাদনও।

বিশেষজ্ঞরা জানান, নোনা জলের ইলিশ ডিম পাড়তে নদীর উজান ঠেলে মিঠা পানিতে উঠে আসে। ডিম ছেড়ে আবার ভাটিতে গা ভাসিয়ে ধরে সাগরের পথ। এর জন্য প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহের। বর্ষা মৌসুমে অর্থাৎ জুলাই থেকে অক্টোবরে মেঘনা নদীর নিম্নাঞ্চলের পানি স্বচ্ছ হয়ে ওঠে এবং লবণাক্ততা থাকে না। আবার প্রবল স্রোত ও জোয়ার-ভাটার কারণে ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে আসতে শুরু করে। পাশাপাশি ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় প্রচুর অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। বর্ষায় নদীর পানি তুলনামূলক উত্তাল থাকে বেশি। এ সময় পানিতে অক্সিজেনের মাত্রাও বেশি থাকে। এছাড়া মাছের বংশবিস্তারে পানির তাপমাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এর ওপর নির্ভর করে মাছের ডিম ছাড়ার সময়। সামান্য তারতম্য হলেই মা-ইলিশ ডিম নষ্ট করে ফেলে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নদীতে দখল-দূষণ, ডুবোচর ও অবকাঠামো নির্মাণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইলিশের বিচরণসহ সার্বিক জীবনচক্রে ব্যাঘাত ঘটছে। হুমকিতে পড়েছে এর প্রজনন।

নয়া দিগন্ত

দেশের ১০টি সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করে দেওয়া সংক্রান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক সুফল পাওয়া যাবে না বিধায় ১০টি সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড (বিডা) গভর্নিং বডির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বাতিল করা অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক, বাগেরহাটের সুন্দরবন ট্যুরিজম পার্ক, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, গাজীপুরের শ্রীপুরের অর্থনৈতিক অঞ্চল, ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল, মুন্সীগঞ্জের গার্মেন্ট শিল্প পার্ক (বিজিএমইএ), সুনামঞ্জের ছাতক ইকোনমিক জোন, বাগেরহাটের ফমকম ইকোনমিক জোন, ঢাকার সিটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অর্থনৈতিক অঞ্চল।

দেশ রূপান্তর

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার ও নির্মমতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘গ্যাসের ৩৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি শিল্পে বিনিয়োগ কমার শঙ্কা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণশুনানিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে তীব্র আপত্তি ছিল ভোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের। যুক্তি, প্রমাণ দিয়ে তারা দেখিয়েছিলেন এখন গ্যাসের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই। বরং দাম কমানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এসব কিছু আমলে না নিয়ে নতুন শিল্পের জন্য গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। তবে এর সপক্ষে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি কমিশন।

গতকাল রবিবার বিইআরসি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভে (অনুমোদিত লোডের অতিরিক্ত ব্যবহারকারী) গ্যাসের নতুন দর ঘোষণা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, যা ওইদিন থেকেই কার্যকর হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে শিল্পে বিনিয়োগ কমে যাবে। অসম প্রতিযোগিতা তৈরি করবে। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না দেশীয় শিল্প, যা পুরো অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আরও পড়ুন