বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সোমবার দেশের জাতীয় সংবাদপত্রগুলো তাদের শিরোনাম সাজিয়েছে। পত্রিকাগুলোর প্রধান শিরোনামে দুর্নীতির বিভিন্ন খবর যেমন জায়গা করে নিয়েছে, তেমনি রাশিয়ায় মানবপাচার ও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত খবরও গুরুত্ব পেয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সোমবার কোন সংবাদপত্রের কী শিরোনাম এসেছে।

সমকাল
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকায় এক ব্যবসায়ীর আরব আমিরাতে দুবাইয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে শীর্ষ খবর হিসেবে ছেপেছে সমকাল। ‘ঋণের টাকায় ‘দুবাই সাম্রাজ্য’’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো রকম পুঁজি খাটাননি। শুধু কইয়ের তেলে কই ভেজেছেন আশিকুর রহমান লস্কর। বন্দরনগরী চট্টলার এই ‘অখ্যাত’ ব্যবসায়ীর কাছে জালিয়াতি যেন এক শিল্প। চাতুরী করে দেশের ব্যাংক থেকে নেওয়া বিপুল অঙ্কের ঋণের টাকা কৌশলে পাচার করে তা দিয়ে বিদেশে গড়েছেন বাহারি সম্পদ। বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল শহর দুবাইয়ে কিনেছেন বিলাসবহুল ৬২টি অ্যাপার্টমেন্ট ও ভিলা। দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্পত্তির মালিক এখন তিনি। শুধু দুবাইয়ে নয়, কানাডায়ও আছে তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দেশের বাইরে তিনি এসব সম্পত্তি কেনেন।
পুরোনো জাহাজ আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের চাঞ্চল্যকর এই অপরাধ উদ্ঘাটিত হয়েছে সমকালের অনুসন্ধানে। পাচারের ডলার প্রথম নেওয়া হয় অর্থ পাচারের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, পানামা, লাইবেরিয়া এবং সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসে নিবন্ধিত বিভিন্ন কোম্পানিতে। এসব দেশ করের স্বর্গ হিসেবে পরিচিতি। এর পর এসব দেশ থেকে স্থানান্তর হয় দুবাই ও কানাডায়। কয়েক বছর ধরে তিনি যে অর্থ পাচার করেছেন, তা হয়েছে বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকের কয়েক কর্মকর্তার যোগসাজশে। ঋণখেলাপির মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে বছর দুয়েক আগে ওই ব্যবসায়ী কানাডায় পালিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের (সিফোরএডিএস) এক প্রতিবেদনে দুবাইয়ে লস্করের সম্পদের বিবরণ রয়েছে।

প্রথম আলো
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপের তৎপরতার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়েই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ইউরোপ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প-জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগ্বিতণ্ডার পর ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে তৎপর হয়েছে ইউরোপ। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করতে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন ইউরোপের নেতারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়েই এটা করতে চান তাঁরা। এ লক্ষ্যে চার দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে।
ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল রোববার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে এক সম্মেলনে বসেছিলেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা। সম্মেলন শুরুর আগে গতকাল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, হোয়াইট হাউসের ওই বৈঠকের পর ট্রাম্প, জেলেনস্কি ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে তিনি একাধিকবার ফোনালাপ করেন। স্টারমার বলেন, ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে একটি পরিকল্পনা তৈরির লক্ষ্যে ইউরোপের নেতাদের একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। নিজেরা আলোচনা করে পরিকল্পনা প্রণয়নের পর তা উপস্থাপন করা হবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।
‘অপরাধ বৃদ্ধির শঙ্কায় অভিযান জোরদার’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোজা ও ঈদের কেনাকাটা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ঘিরে সক্রিয় হচ্ছে পেশাদার ও মৌসুমি অপরাধীরা। জাল টাকার কারবার, ছিনতাই, ডাকাতি, গাড়ি চুরি, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির কিছু তৎপরতা ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। এ অবস্থায় রমজান মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযান আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে অভিযানের নাম ‘ডেভিল হান্ট’ আর থাকছে না বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।
রমজান মাসে বিশেষ কিছু অপরাধ বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে। এমন আশঙ্কা সামনে রেখে সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা প্রস্তুতি জোরদার করতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোও রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা নতুনভাবে সাজিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কোর কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য চলমান বিশেষ অভিযান রমজান মাসে আরও জোরদার করা হবে। মহাসড়কে ডাকাতি ও চাঁদাবাজি ঠেকাতে এবং ব্যাংকে বড় অঙ্কের টাকা জমা ও উত্তোলনের সময় ডাকাতি বন্ধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কালের কণ্ঠ
বাংলাদেশিদের রাশিয়ায় পাচার এবং সেখান থেকে তাদের কীভাবে ইউক্রেন যুদ্ধে নামিয়ে দেওয়া হয় সে সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে শীর্ষ সংবাদ করেছে কালের কণ্ঠ। ‘যুদ্ধদাস তৈরির নতুন ফাঁদ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় বিভিন্ন ধরনের কাজের ভিসায় পাঠানোর চুক্তি করে সহজ-সরল ব্যক্তিদের ইউক্রেন যুদ্ধে ঠেলে দিচ্ছে একটি চক্র। সম্প্রতি এ বিষয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয় কালের কণ্ঠে। এতে দেখা যায়, ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমেও ঘটছে এই পাচারের ঘটনা। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অগণিত তরুণ-যুবক উন্নত জীবনের খোঁজে রাশিয়ায় গিয়ে যুদ্ধদাসের পরিণতি বরণ করেছেন। এমনকি ইউরোপে পাঠানোর কথা বলেও অনেককে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার চক্রের কাছে। এরই মধ্যে একজন যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত এবং অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাশিয়ায় মানবপাচারের ঘটনা ঘটছে অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে প্রকাশ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে। সেখানে দেওয়া হচ্ছে চাকচিক্যময় জীবনের হাতছানি। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে নিযুক্ত রয়েছে বিশাল দালালচক্র।

ইত্তেফাক
দেশের চারটি স্থলবন্ধর বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ আসার খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘বন্ধ হচ্ছে চার অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তিনটি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর সম্পূর্ণ বন্ধ এবং একটি স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আটটি স্থলবন্দর কার্যকর/অকার্যকরের বিষয়ে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত যাচাই কমিটি এ সুপারিশ করেছে। ফলে বন্ধ হতে যাচ্ছে অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন চারটি স্থলবন্দর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বিগত সরকারের আমলে নির্মিত দেশের অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন বিভিন্ন স্থলবন্দরসমূহের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।

যুগান্তর
সরকারি সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে ইউনাইটেড গ্রুপের ফুলে ফেপে ওঠা সংক্রান্ত একটি খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। “‘আলাদিনের চেরাগ’ ইউনাইটেড গ্রুপে” শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনানিবাসের শহিদ মইনুল হক সড়কের বাড়ি ভেঙে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদের পর ইউনাইটেডে গ্রুপে জ্বলে উঠে ‘আলাদিনের চেরাগ’। যা এখনো নেভেনি–এমন মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের। তাদের অভিযোগ– ওই বাড়ি ভাঙার নেপথ্যে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মইনুদ্দীন হাসান রশীদের এক নিকটাত্মীয়। যিনি ওই সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তার ছোঁয়াতেই সরাসরি হাসিনা সরকারের আশীর্বাদ পাওয়া শুরু হয়। গত সাড়ে ১৫ বছরে গ্রুপটি রীতিমতো ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বনে যায়। বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতে নজিরবিহীন সুযোগ-সুবিধা আদায় করে কমপক্ষে কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। বাড়িটি ভাঙার পুরস্কার হিসাবেই নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে এসব অপকর্ম। যেখানে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন হাসিনা ও তার বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এই বিপুকে ঘুষ হিসাবে নামমাত্র মূল্যে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর ১০০ ফিট সড়কের পাশে অবস্থিত ৮০ কাঠা জমি। যার বর্তমান মূল্য দেড়শ কোটি টাকার বেশি।

বণিক বার্তা
দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলোর নাজুক অবস্থা অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলছে সেই খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘ইসলামী ব্যাংকগুলোর পতনে ক্ষতির মুখে দেশীয় পুঁজির বিকাশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেবল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিই নয়, বরং এ মুহূর্তে চরম বিপদে আছে শরিয়াহভিত্তিক প্রায় সব ব্যাংক। সুশাসনের তীব্র ঘাটতি, বেনামি ঋণ ও সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতিতে এ খাতের অন্তত সাতটি ব্যাংক বিপর্যয়ে পড়েছে। আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়ে এ ব্যাংকগুলো চলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে। প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে এ ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ (বিনিয়োগ) বিতরণ। রুদ্ধ হয়ে পড়েছে নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তোলার যাবতীয় প্রক্রিয়া।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর পতন দেশজ পুঁজি বিকাশে বড় ধরনের সংকট তৈরি করেছে। এটি গত কয়েক বছরে সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির ফল। অতীতে এসব ব্যাংকের অর্থায়নে যেসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, সেগুলো এখন আর চলতি মূলধন পাচ্ছে না। দৈনন্দিন পরিচালন ব্যয়ের অর্থ না পাওয়ায় অনেক শিল্প-কারখানাই এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আর নতুন করে বিনিয়োগ করার মতো অর্থও শরিয়াহভিত্তিক বেশির ভাগ ব্যাংকের হাতে নেই। এতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথও বন্ধ হয়ে গেছে।

নয়া দিগন্ত
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন এ মাসেই জমা হতে পারে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘এ মাসে হাসিনার তদন্ত প্রতিবেদন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের সময় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সব ঘটনার প্রধান আসামি শেখ হাসিনা। তবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আলাদাভাবে একটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হবে।
রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হয়তো এই মাসেই পেয়ে যাব। আমাদের চূড়ান্ত কাজ চলছে। আশা করছি, এই মাসের মধ্যে পেয়ে যাব। তদন্ত সংস্থা দিন রাত কাজ করছে। চূড়ান্ত কথা তদন্ত সংস্থাই বলবে। আমরা আশা করছি, এই মাসের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে তদন্ত রিপোর্ট সেটা আমরা পেয়ে যাব।
তাজুল ইসলাম বলেন, সবগুলো ঘটনা শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে। এভাবে সবগুলো রিপোর্ট আমাদের কাছে এসেছে। তার বিরুদ্ধে আমরা সম্পূর্ণ আলাদাভাবে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে যাচ্ছি। সেজন্য শেখ হাসিনার মামলা আলাদাভাবে হবে। শহীদ আবু সাঈদের ঘটনায় শেখ হাসিনার হুকুমের কথা সব কিছু উল্লেখ থাকবে। তবে এখানে শেখ হাসিনা ছাড়া বাকি যারা আসামি তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্টটা দাখিল হবে।

দেশ রূপান্তর
নবগঠিত রাজনৈতিক দলের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তরও। ‘মধ্যপন্থা প্রতিষ্ঠাই দলের বড় চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার পতন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আত্মপ্রকাশে নিজেদের মধ্যপন্থার দল বলে দাবি করেছে। শুক্রবার দল ঘোষণার সময় বলা হয়েছে, সবার মতকে প্রাধান্য দিয়ে মধ্যপন্থার ভিত্তিতে দলের কার্যক্রম চলবে। ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ও ‘গণপরিষদ নির্বাচন, সংবিধান পরিবর্তনসহ অনেক বিষয়ই এসেছে দলের আত্মপ্রকাশের সময়। আত্মপ্রকাশের সময় দলটির প্রায় সব শীর্ষ নেতাই তাদের বক্তব্যের ইতি টেনেছেন ইনকিলাব জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে। তবে দলের গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র, সাংগঠনিক কাঠামো বা কর্মকৌশল কোনোটাই এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।’
এদিকে নতুন দলের আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় যেমন সব মহলে আগ্রহ ছিল, দল ঘোষণার পর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আলোচনা সমালোচনাও। শিক্ষার্থীদের নতুন দলকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ প্রায় সবকটি রাজনৈতিক দল স্বাগত জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা এরইমধ্যে দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয় বলেও সমালোচনা করেছে।

আজকের পত্রিকা
নতুন বছরের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও অনেক শিক্ষার্থীর এখনও সব বই না পাওয়া সংক্রান্ত একটি খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘ছাপা বাকি ৩ কোটি পাঠ্যবই’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষের দুই মাস শেষ হলেও এখনো সব বই হাতে পায়নি স্কুল শিক্ষার্থীরা। অষ্টম ও নবম শ্রেণির এবং ইবতেদায়ি পর্যায়ের কিছু বই এখনো ছাপার অপেক্ষায়। সব মিলিয়ে ৩ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি আছে, যার অধিকাংশই মাধ্যমিক পর্যায়ের। আর বিতরণ বাকি সাড়ে ৩ কোটির বেশি পাঠ্যবই। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সবার হাতে নতুন বই দেওয়া হবে—এমনটাই জানানো হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। গত ৯ জানুয়ারি ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আজকের ক্যাবিনেট মিটিংয়ে পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ক্যাবিনেটে বলা হয়েছে যে আগামী মাসের মধ্যে সবার হাতে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হবে।’
এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলেছেন, শিক্ষাবর্ষের শেষ প্রান্তে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, পাঠ্যপুস্তকের ছবি ও বিষয়বস্তু পরিমার্জন ও সংশোধন এবং সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে রদবদলের কারণে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজে দেরি হয়েছে। অবশ্য, চলতি মার্চ মাসের ১০ তারিখের মধ্যে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান।

ডেইলি স্টার
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাগ্রহ সংক্রান্ত খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। ‘Home ministry opposes idea of police commission’ বা ‘পুলিশ কমিশনের ধারণার বিরোধিতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে রাজি নয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ কারণে এই বাহিনীকে একটি পৃথক কমিশনের মাধ্যমে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বানেও মন্ত্রণালয়ের সাড়া মিলছে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী একটি স্বাধীন সংস্থা গঠনের প্রয়োজন নেই, কারণ একটি স্বাধীন সংস্থা যা করতো, মন্ত্রণালয়ও ইতোমধ্যে তা করছে।
গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায়—যাদের অধিকাংশই পুলিশের গুলিতে মারা গেছে—পুলিশকে জবাবদিহি করার জন্য আইনি এই পরিবর্তনের দাবি উঠছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলছে, বর্তমান আইন, যা ঔপনিবেশিক আমলে প্রণীত, যথেষ্ট ভালো এবং সংশোধনের কোনো প্রয়োজন নেই।