আর্টেমিস চুক্তিতে স্বাক্ষর: বাংলাদেশকে স্বাগত জানাল নাসা

nasa

‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’-এর ৫৪তম স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

মানবতার কল্যাণে মহাকাশের নিরাপদ ও দায়িত্বশীল অনুসন্ধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ৫৪তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাল নাসা।

বুধবার নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক জ্যানেট পেট্রো বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এই চুক্তিতে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করায় আমরা রোমাঞ্চিত।

বিবৃতিতে নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক বলেন “মহাকাশ অনুসন্ধানের ভবিষ্যৎ গঠনে বাংলাদেশ তার ভূমিকা নিশ্চিত করবে। চাঁদে – এবং তার বাইরে – আমাদের যাত্রা শান্তিপূর্ণ, টেকসই এবং স্বচ্ছ হবে। আমরা একসাথে কাজ করবো এবং একে অপরের কাছ থেকে শিখবো।”

তিনি আরও বলেন, “মহাকাশে মানবতার মহান অধ্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিভা এবং দৃষ্টিভঙ্গি কীভাবে অবদান রাখে তা দেখার জন্য আমরা উন্মুখ।”

মঙ্গলবার নাসার সঙ্গে আর্টেমিস চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের উপস্থিতিতে প্রতিরক্ষাসচিব মো. আশরাফ উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বাংলাদেশ এখন ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’-এর ৫৪তম স্বাক্ষরকারী দেশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক মহাকাশ অনুসন্ধানকে উৎসাহিত করার একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণা, মহাকাশ ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং মহাকাশ সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহারে নিজেকে সম্পৃক্ত করল; যা দেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত আর্টেমিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া ও বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ, লাতিন আমেরিকাসহ ৫৩টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ এই চুক্তিতে যুক্ত হয়ে একটি সম্মানজনক আন্তর্জাতিক মহাকাশ জোটের অংশ হলো।

২০২০ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত আর্টেমিস অ্যাকর্ডস চুক্তিগুলো হলো অ-বন্ধনযোগ্য বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার একটি সিরিজ; যার লক্ষ্য হলো মহাকাশ অনুসন্ধানে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও টেকসই সহযোগিতা।

প্রতিরক্ষাসচিব মো. আশরাফ উদ্দিন জানান, নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করলে বাংলাদেশ উন্নত স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রবেশাধিকার পাবে, যা বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট প্রোগ্রাম ও ভবিষ্যৎ মহাকাশ উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশের স্পারসোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও জলবায়ু মনিটরিং স্যাটেলাইট তৈরি করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা পেতে পারে, যা বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়ক হবে বলে প্রতিরক্ষাসচিব উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ গবেষণায় অংশ নিতে পারবেন আর শিক্ষার্থীরা নাসার প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, বৃত্তি ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম থেকে উপকৃত হতে পারবেন।”

আরও পড়ুন