ইউরোপের বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৯০ হাজার শ্রমিক নেবে গ্রিস, যার মধ্যে শুধু বাংলাদেশ থেকেই নেওয়া হবে চার হাজার শ্রমিক।
এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি বিলে দেশটির মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে বলে কেনিউজের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ-গ্রিস সমঝোতা চুক্তির অধীনে ওই চার হাজার শ্রমিকে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে এথেন্স।
ধারণা করা হয়, গ্রিসের শ্রমবাজারে তিন লাখের বেশি শ্রমিকের প্রয়োজন, যার মধ্যে রয়েছে ডিশওয়াশার থেকে শুরু করে বাবুর্চি, কাঠমিস্ত্রী, মেশিন অপারেটর, ইলেকট্রিশিয়ান, ‘ওয়েব ডেভেলপার’ ও ‘সফটওয়্যার ডেভেলপার’ পর্যন্ত।
এছাড়া পর্যটন শিল্পে অদক্ষ এবং উচ্চ দক্ষ উভয় ধরণের কর্মীরও প্রয়োজন রয়েছে দেশটিতে, যার মধ্যে রেস্তোরাঁ শ্রমিক, বাবুর্চি, পরিচ্ছন্ন কর্মী, স্পা থেরাপিস্ট এবং অভ্যর্থনা কর্মকর্তা বা রিসেপশনিস্ট।
নির্মাণ খাতে ওয়েল্ডার, কাঠমিস্ত্রী, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, স্টিমফিটার, গাড়িচালক, সাইট সুপারভাইজার ইঞ্জিনিয়ার এবং বিশেষায়িত ভারী যন্ত্রপাতি অপারেটরদের মতো বিশেষায়িত কারিগরের চাহিদাও রয়েছে।
এরইমধ্যে বিদেশি কর্মীদের আনার প্রক্রিয়া দ্রুত এবং সহজতর করার লক্ষ্যে কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনার কথা বলেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো।
তারা বলছে, নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে চাহিদা পূরণের জন্য কৃষি, পর্যটন এবং নির্মাণের মতো ক্ষেত্রে গ্রিসে ব্যাপকমাত্রায় কর্মী ঘাটতি রয়েছে।
মোট ৮৯ হাজার ২৯০ জনের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কোটা রাখা হয়েছে মৌসুমি শ্রমিকদের জন্য, যে সংখ্যা ৪৫ হাজার ৬৭০টি।
মন্ত্রিসভায় সায় পাওয়া বিলে আরও বলা হয়েছে, এর বাইরে উচ্চ দক্ষ কর্মসংস্থানের জন্য দুই হাজার, নির্ভরশীল কর্মসংস্থান বা স্পন্সর ভিসার জন্য ৪১,৬৭০ জন কর্মী আনতে পারবে নিয়োগকর্তারা।
নির্ভরশীল কর্মসংস্থানের আওতায় অদক্ষ কৃষি, পশুপালন, বন এবং মৎস্য শ্রমিকদের শূন্যস্থান পূরণের জন্য তাদের আনা যাবে।
অফিস কর্মী পদের সংখ্যা পাঁচ হাজার; যারা এমন কোম্পানিতে নিযুক্ত হবেন যেসব কোম্পানি চুক্তিবদ্ধ এবং বিদেশি কোম্পানির শাখা হিসেবে কাজ করছে।
এসব কোম্পানি মূলত পণ্যের প্রচার এবং কারিগরি সহায়তা প্রদানের কাজ করে।
মোট সংখ্যার মধ্যে প্রায় নয় হাজার কর্মী গ্রিসের সঙ্গে হওয়া চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ও মিশর থেকে আনা হবে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের সঙ্গে হওয়া চুক্তির আওতায় কৃষি, বন, মৎস্য এবং পর্যটন খাতে এই চার হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে নেবে গ্রিস।
এছাড়া কৃষি খাতে মৌসুমি কর্মসংস্থান সম্পর্কিত অবশিষ্ট পাঁচ হাজার শূন্যপদ পূরণ করা হবে মিশরীয় শ্রমিক দিয়ে।
এথেন্স-ঢাকার সমঝোতা স্মারক চুক্তির আওতায় নতুন করে কর্মী আনা ছাড়াও গত বছর গ্রিসে বৈধতা পেয়েছেন তিন হাজার ৪০৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
চুক্তির আওতায় ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে অনিয়মিতভাবে থাকা বাংলাদেশিদের নিয়মিত হতে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ওই চুক্তির আওতায় আবেদনের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।