অবশেষে ২০ দিন পর পাকিস্তান থেকে ছাড়া পেলেন ভারতের বিএসএফ সদস্য পূর্ণম কুমার ওরফে পিকে সাউ। বুধবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
বিএসএফ জানিয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা দিকে অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফিরেছেন পূর্ণম।
বুধবার বিএসএফ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের নিরন্তর চেষ্টা, পাকিস্তান রেঞ্জার্সের সঙ্গে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ এবং বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে আলোচনা সফল হয়েছে। পূর্ণমকে প্রত্যর্পণ করেছে পাকিস্তান।
গত ২৩ এপ্রিল ভারতের পঞ্জাবের পঠানকোটে কর্মরত অবস্থায় ভুল করে পাকিস্তানে ঢুকে গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন পূর্ণম। তখনই পাকিস্তানি রেঞ্জার্স তাকে ধরে। সীমান্তে এমন ঘটলে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’-এর পরে সংশ্লিষ্ট জওয়ানকে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু পূর্ণমকে তখন ছাড়েনি পাকিস্তান।
পূর্ণম পশ্চিমবঙ্গের হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা। তাকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে পরিবারকে ফোন করে আশ্বাস দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। উত্তরপাড়ায় দলীয় কর্মসূচিতে এসে পূর্ণমকে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে আশ্বাস দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সতীশচন্দ্র দুবেও।
পূর্ণম পঞ্জাবের পঠানকোটের ফিরোজ়পুরে ২৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল। স্বামীকে মুক্ত করার ব্যাপারে তদ্বির করতে আট বছরের ছেলে এবং আত্মীয়দের নিয়ে গত ২৮ এপ্রিল হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায় বিএসএফের সদর দফতরে যান স্ত্রী রজনী সাউ। স্বামীর কর্মস্থলেও যান তিনি। তারা ফিরোজ়পুর সীমান্তেও যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে সেখানে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি। বাড়ি ফিরে স্বামীর মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনেছেন রজনী। অবশেষে অভিনন্দনের মতো মুক্তি পেলেন তার স্বামী।
২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোট শহরের অদূরে জঙ্গিশিবিরে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান। জবাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে হামলা চালায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। সে সময় হামলাকারী এফ-১৬ বিমানের পিছু ধাওয়া করেন ভারতের উইং কমান্ডার অভিনন্দন। নিজের মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমান নিয়ে আকাশসীমা পেরিয়ে ঢুকে পড়েন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। এর পরে আহত অবস্থায় পাক সেনার হাতে বন্দি হন তিনি। পরে অবশ্য তাকে ভারতের কাছে প্রত্যর্পণ করে পাকিস্তান।