গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় চার জনের মৃত্যুর খবরের মধ্যে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশের প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
বুধবার এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুর জন্মভিটায় উত্তেজনার মধ্যে বিক্ষুব্ধ জনতার রোশে ভাঙচুর করা হয় এনসিপির সমাবেশস্থল, ইউএনও’র গাড়ি; এছাড়া পুলিশের গাড়িতেও বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়।
তীব্র প্রতিরোধের মুখে এনসিপির নেতারা পুলিশি পাহারায় কয়েক মিনিটের ‘ফটোসেশন’ ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও গোপালগঞ্জে আটকা পড়েন। অবশ্য পরে তাদেরকে সাঁজোয়া যানে করে উদ্ধার করে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর সেনাবাহিনী ও আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রকাশ্যে গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে, যার বেশ কিছু ভিডিও ক্লিপ এরইমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ হয়ে চার জনের মৃত্যুর নিশ্চিত তথ্য মিলেছে, যারা সবাই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
ঘটনার পর বিকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “গোপালগঞ্জে আজ যে সহিংসতা করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। গণ অভ্যুত্থান আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে তরুণ নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দিয়ে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এনসিপি, পুলিশ ও গণমাধ্যমের সদস্যদের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ চালানো হয়েছে, তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।”
“বিনা বিচারে দোষীদের ছাড়া হবে না” জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এই জঘন্য কর্মকাণ্ড বিনা বিচারে ছেড়ে দেওয়া হবে না। দায়ীদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশে কোনও নাগরিকের ওপর এমন সহিংসতার কোনও স্থান নেই।”
বিবৃতিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশের যেমন প্রশংসা করা হয়েছে, তেমনি সমাবেশ চালিয়ে যাওয়ায় কর্মসূচির আয়োজকদের প্রশংসা এসেছে।
“আমরা সেনাবাহিনী ও পুলিশকে তাদের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এবং এই কুৎসিত হুমকির পরেও যারা সমাবেশ চালিয়ে গেছেন, সেই ছাত্রছাত্রী ও জনগণের সাহস ও দৃঢ়তার জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আরও পরিস্কার করে বলতে চাই, আমাদের দেশে সহিংসতার কোনও স্থান নেই। ন্যায়বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে।”